৬ মিনিটের সংবাদ সম্মেলনে যা বললেন আইন উপদেষ্টা
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০২:৪৫ পিএম
চলমান রাজনৈতিক সংকট ও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোটগ্রহণসহ বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এসব বিষয়ে জানাতে দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে বৈঠকের সিদ্ধান্ত তুলে ধরেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
ছয় মিনিটের সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া আইন উপদেষ্টার পুরো বক্তব্য নিচে তুলে ধরা হলো—
আজ জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কর্তৃক প্রণীত জুলাই সনদ এবং এর বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য স্থাপনের জন্য এবং বহু বিষয়ে ঐকমত প্রতিষ্ঠার জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়। উপদেষ্টা পরিষদের সভায় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদ, সংবিধান সংস্কার আদেশ চূড়ান্তকরণ এবং এতে উল্লিখিত গণভোট আয়োজন ও গণভোটের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করা হয়। সভায় লক্ষ্য করা হয়, ঐকমত্য কমিশনের দীর্ঘদিন আলোচনার পরও কয়েকটি সংস্কারের সুপারিশ বিষয়ে ভিন্নমত রয়েছে।
এসব ক্ষেত্রে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে স্বীয় উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে, সম্ভব হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা প্রদান করার আহ্বান জানানো হয়। এমন নির্দেশনা পেলে সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অনেক সহজ হবে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে কালক্ষেপণের যে কোনো সুযোগ নাই সেটাও আমাদের সবার বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন। উপদেষ্টা পরিষদের সভায় ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
এরপর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, উনারা ১৫ বছর এক সঙ্গে আন্দোলন করেছেন। আমরা উনাদেরকে একটু সময় দিতে চাই, উনারা একটু যেসব বিষয় উল্লেখ করলাম সেগুলো বিষয়ে নিজেরা আলোচনা করে এগ্রি করতে পারে কিনা, আমরা একটু দেখি।
এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, আপনারা এক সপ্তাহের আলটিমেটাম দিয়েছেন দলগুলো নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করবে। তারা যদি আলোচনায় ব্যর্থ হয়, ঐকমত্যে না পৌঁছতে পারে, সেক্ষেত্রে সরকারের দায়িত্ব কি হবে, সরকার কী সিদ্ধান্ত নেবে?
উত্তরে আইন উপদেষ্টা বলেন, প্রথম কথা হচ্ছে, আমরা কোনো আলটিমেটাম দিইনি। আলমেটাম শব্দটায় আমি আপত্তি করছি। আমরা অপেক্ষা করব, তারপর অবশ্যই সরকার সরকারের মতো অ্যাক্ট করবে।
আরেক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, গত সপ্তাহের সংবাদ সম্মেলনে আপনি বলেছিলেন যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা। সরকার কি তাহলে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে কিছুটা নতি স্বীকার করে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে বা কেন এই অবস্থান?
আসিফ নজরুল বলেন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে আমি বলেছিলাম প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে উপদেষ্টা পরিষদ। এই সিদ্ধান্ত থেকে আমরা মোটেও সরে আসি নাই। রাজনৈতিক দলগুলার ঐক্যবদ্ধ সুপারিশ প্রত্যাশা করা— এটা তো আপনি আরও গুড জেসচার হিসেবে দেখতে পারেন।
এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, রাজনৈতিক দলগুলো, বিশেষত একটা বড় রাজনৈতিক দল থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, ঐকমত্য কমিশনে যে বিষয়গুলো আলাপ-আলোচনা করা হয়েছিল, বাস্তবায়নের সুপারিশে সেই আলাপ-আলোচনাগুলোর ব্যত্যয় ঘটেছে বা সম্পূর্ণভাবে সেগুলো রক্ষা করা হয়নি। এই অভিযোগ কেন?
উত্তরে আইন উপদেষ্টা বলেন, এই প্রসঙ্গে আমাদের এখন কোনো মন্তব্য নাই। রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরা আলাপ-আলোচনা করে এই বিষয়টাতেও আমাদেরকে একটা ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা দেবেন— এই প্রত্যাশা করছি। উনারা যদি আলাপ-আলোচনা করেন, আমাদের জন্য কাজটা সহজ হয়। উনারা যদি ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা না দিতে পারেন, অবশ্যই সরকার সরকারের মতো সিদ্ধান্ত নেবে।