মৃত্যুর আগে বর্ষাকে যে অনুরোধ করেছিলেন ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৪৫ পিএম
পুরান ঢাকার আরমানিটোলাতে পানির পাম্প গলিতে রোববার (১৯ অক্টোবর) রাতে ছাত্রীকে পড়াতে গিয়ে তার বাসার নিচেই হত্যার শিকার হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ। ঘটনার দিন বিকেল ৪টায় বর্ষাকে পড়াতে গেলে তার বাসার নিচে জুবায়েদকে সুইচগিয়ার দিয়ে আঘাত করেন বর্ষার প্রেমিক মাহির।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে লালবাগ জোনের ডিসি মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী বলেছেন, জোবায়েদ তখনও মারা যায়নি। বাঁচার জন্য দোতলা থেকে উপরে ওঠে। তিন তলায় দাঁড়িয়ে ছিল বর্ষা। তখন বর্ষাকে দেখে জোবায়েদ বলে, আমাকে বাঁচাও। কিন্তু বর্ষা বলে, তুমি না মরলে আমি মাহীরের হতে পারব না। বর্ষা তার মৃত্যু কনফার্ম করে যায়। তখন জোবায়েদ বাঁচার জন্য দরজায় নক করেও কারও সাড়া পায়নি।
তিনি আরও বলেন, মেয়েটা অনেক চালু। দুদিকেই সম্পর্ক বজায় রাখে। এটি একটি ত্রিভুজ প্রেম। মিন্নির ঘটনার প্রায় কাছাকাছি। পুরো হত্যাকাণ্ড বর্ষা পর্যবেক্ষণ করেছে।
জুবায়েদকে হত্যার বর্ণনায় পুলিশ জানায়, টিউশনির ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষার পরিকল্পনায় খুন হন জুবায়েদ। মূলত, মাহীরের সঙ্গে প্রেম করলেও জুবায়েদের সঙ্গে পরিচয়ের পর তার প্রেমে পড়ে বর্ষা। এটা মাহীর জানতো না। কিন্তু দুজনের সাথে একইসঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক রক্ষা করে গেছে বর্ষা।
মাহীর যখন এটি জানতে পারে তখন তার সঙ্গে ব্রেকআপ করে বর্ষা। কিন্তু মাহীরকে কিছুতেই ভুলতে পারছিলেন না বর্ষা। তাই কিছুদিন পরই বর্ষা তার আগের বয়ফ্রেন্ড মাহীরকে জানায়, জুবায়েদকে আর ভালো লাগে না। তখন জুবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে বর্ষা ও মাহীর। এমনকি, সে মাহিরকে বলে, জুবায়েদকে না মারলে তুমি আমাকে পাবা না। এরপর ২৫ সেপ্টেম্বর জুবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তারা। সেজন্য নতুন দুটি সুইচ গিয়ার চাকুও কিনা হয় এবং সেটি দিয়েই এলোপাতাড়ি হামলা চালিয়ে জুবায়েদকে হত্যা করা হয়।
উল্লেখ্য, এক বছর ধরে বাসায় গিয়ে বর্ষাকে ফিজিক্স, ক্যামিস্ট্রি ও বায়োলজি পড়াতেন জুবায়েদ। বর্ষার বাবার নাম গিয়াসউদ্দিন। অন্যদিকে জুবায়েদ কুমিল্লার হোমনার কৃষ্ণপুর গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এই শিক্ষার্থীকে সোমবার রাতে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।