Logo
Logo
×

জাতীয়

প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড বাস্তবায়ন নিয়ে যা জানা গেল

Icon

জাগো বাংলা প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৩০ পিএম

প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড বাস্তবায়ন নিয়ে যা জানা গেল

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেছে জাতীয় পে-কমিশন। সেখানে শিক্ষকরা সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড বাস্তবায়ন, উচ্চতর গ্রেডের সমস্যা সমাধান, শতভাগ পদোন্নতি, চিকিৎসা–শিক্ষা ভাতা বৃদ্ধি, নতুন টাইমস্কেল পুনর্বহালসহ বেশ কয়েকটি প্রস্তাব তুলে ধরেন সংগঠনের নেতারা।

আজ সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের পে-কমিশন ভবনে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত এ বৈঠক চলে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় পে-কমিশনের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান।

বৈঠকের শুরুতে শিক্ষক নেতারা ৭ আগস্ট প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পে-কমিশনে পাঠানো সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডের প্রস্তাবনার বাস্তবায়ন প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। এ বিষয়ে কমিশন চেয়ারম্যান জানান, প্রস্তাবনা কমিশনের কাছে থাকলেও এর বাস্তবায়নের সুযোগ খুবই সীমিত। 

তিনি বলেন, বিষয়টি পে-কমিশনের নয়, সরকারি সার্ভিস কমিশনের আওতাভুক্ত। তবে তিনি জানান, কমিশন প্রস্তাবটি নোট আকারে বিবেচনায় নিয়েছে।

এরপর শিক্ষক নেতারা ৬ সদস্যের পরিবারের খাদ্য, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যয় বিবেচনায় নতুন বেতন কাঠামোর প্রস্তাব পেশ করেন। তারা ২০টি গ্রেড কমিয়ে ১২টি করার প্রস্তাব দেন এবং সর্বনিম্ন বেসিক বেতন ৩৫ হাজার ও সর্বোচ্চ ১ লাখ ৪০ হাজার টাকায় নির্ধারণের দাবি জানান। এতে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ গ্রেডের অনুপাত দাঁড়াবে ১:৪।

শিক্ষক সংগঠনের পক্ষ থেকে আরও প্রস্তাব করা হয়— চিকিৎসা ভাতা ১০ হাজার, শিক্ষা ভাতা এক সন্তানের জন্য ৫ হাজার ও দুই সন্তানের জন্য ১০ হাজার, আর বাড়িভাড়া ভাতা এলাকাভেদে ৬৫ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা। এছাড়া বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট ১০ শতাংশ এবং সকল স্তরের কর্মচারীদের জন্য ন্যূনতম ৩ হাজার টাকা যাতায়াত ভাতা চালুর দাবি জানানো হয়। বর্তমানে কেবল সিটি করপোরেশন এলাকায় কর্মরতরা এই সুবিধা পান, কিন্তু গ্রামীণ ও মফস্বল পর্যায়ের প্রাথমিক শিক্ষকরা বঞ্চিত বলে জানান তারা।

শিক্ষক নেতারা আরও অভিযোগ করেন, ২০১৫ সালের পে-স্কেলের ৭(খ) অনুচ্ছেদের ভুল ব্যাখ্যার কারণে তারা উচ্চতর গ্রেড সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই নতুন পে-স্কেলে তিনটি টাইমস্কেল পুনরায় চালুর দাবি জানান।

টিফিন ভাতার প্রসঙ্গ উঠলে শিক্ষকরা জানান, বর্তমানে তাদের দৈনিক টিফিন ভাতা মাত্র ৬ টাকা ৬৬ পয়সা—যা দিয়ে এক কাপ চা পর্যন্ত কেনা সম্ভব নয়। এ তথ্য শুনে কমিশনের সদস্যরা বিস্ময় প্রকাশ করেন।

এছাড়া শতভাগ পেনশন, শতভাগ আনুতোষিক অর্থ, প্রতি দুই বছর অন্তর শ্রান্তি বিনোদন ভাতা, নববর্ষ ভাতা ৫০ শতাংশ এবং সকল শিক্ষকদের জন্য রেশন সুবিধা চালুর দাবি তোলেন শিক্ষক নেতারা।

পে-কমিশনের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান বলেন, আমরা প্রথমেই শিক্ষকদের মতামত নিচ্ছি, কারণ তাদের জীবনমানের উন্নয়ন ছাড়া শিক্ষার মান উন্নয়ন সম্ভব নয়। শিক্ষকরা খুব বাস্তবসম্মত প্রস্তাব দিয়েছেন। এগুলো গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হবে।

বৈঠক শেষে বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, পে-কমিশনের আমন্ত্রণে আমরা শিক্ষকদের বাস্তব পরিস্থিতি তুলে ধরেছি। বর্তমান বাজারদর ও মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় পরিবারে ছয় সদস্যের জীবনযাত্রার ব্যয় অনুযায়ী বেতন কাঠামো নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছি।

তবে সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড বাস্তবায়ন নিয়ে কমিশনের ‘সীমিত সম্ভাবনার’ মন্তব্যে হতাশা প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, এমন হলে কঠোর আন্দোলন ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো পথ খোলা থাকবে না।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার