জবি শিক্ষার্থী জোবায়েদ হত্যা, জানা গেল নেপথ্য কারণ

জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৩৩ পিএম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইন হত্যাকাণ্ডে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ বলছে, প্রেমঘটিত সম্পর্কের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষা জানিয়েছেন, বর্ষা ও তার প্রেমিক মাহির রহমানের প্রেমের টানাপোড়েন থেকেই জোবায়েদকে হত্যা করা হয়। তবে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা বা বাস্তবায়ন সম্পর্কে বর্ষা নিজে কিছু জানতেন না বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
সোমবার (২০ অক্টোবর) সকালে বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, বর্ষা ও মাহিরের মধ্যে ৯ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মাহির বুরহান উদ্দিন কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী এবং বর্ষা ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষে পড়ে। ছোটবেলা থেকেই তাদের পরিচয় ও সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে সম্প্রতি সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়।
ওসি আরও বলেন, কিছুদিন আগে বর্ষা মাহিরকে জানায়, সে জোবায়েদকে পছন্দ করে। তবে জোবায়েদকে সে বিষয়টি জানায়নি এবং তাদের মধ্যে কোনো প্রেমের সম্পর্কও ছিল না। কিন্তু বর্ষার কথায় ক্ষুব্ধ হয়ে মাহির ও তার বন্ধু জোবায়েদকে হত্যা করে।
তিনি জানান, জিজ্ঞাসাবাদে বর্ষার মধ্যে কোনো হতাশা, ভয় বা কান্নার ছাপ পাওয়া যায়নি। বরং তিনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত স্বাভাবিক ছিলেন। তদন্ত অব্যাহত আছে, আরও বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জোবায়েদ হোসাইন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। পাশাপাশি তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণ পরিষদের সভাপতি ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য ছিলেন।
গত এক বছর ধরে তিনি পুরান ঢাকার আরমানিটোলার ১৫, নুরবক্স লেনের ‘রৌশান ভিলা’ নামের একটি বাড়িতে ছাত্রী বর্ষাকে ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি ও বায়োলজি পড়াতেন। রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকালে সাড়ে ৪টার দিকে ওই বাসার তিন তলায় তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। সিঁড়ি থেকে তিন তলা পর্যন্ত রক্তের দাগ ছিল বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
ঘটনার পর ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বংশাল থানার সামনে বিক্ষোভ ও আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করেন। পাশাপাশি তাতীবাজার মোড় অবরোধ করে রাখেন তারা। রোববার রাত ১১টার দিকে পুলিশ ছাত্রী বর্ষাকে হেফাজতে নেয়। এর আগে রাত ১০টা ৫০ মিনিটে নিহত জোবায়েদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়।
তবে সোমবার (২০ অক্টোবর) সকাল পর্যন্ত জোবায়েদের পরিবার মামলা করতে পারেনি। নিহতের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত অভিযোগ করেন, আমরা বর্ষা, তার বাবা-মা, প্রেমিক মাহির ও নাফিসসহ পাঁচজনের নামে মামলা দিতে চাইলে ওসি এত জনের নামে মামলা না দিতে বলেন। তিনি বলেন, মেয়ের বাবা-মাকে আসামি করলে মামলা দুর্বল হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে, তাদের নামেই মামলা নেওয়া হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।