Logo
Logo
×

জাতীয়

গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলার আশঙ্কা, টহল গ্রেফতার বাড়ানোর নির্দেশ

Icon

জাগো বাংলা প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৩৬ পিএম

গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলার আশঙ্কা, টহল গ্রেফতার বাড়ানোর নির্দেশ

এক সপ্তাহের মধ্যে রাজধানী ঢাকা ও বন্দর নগরী চট্টগ্রামে পরপর তিনটি বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের পর সারা দেশে পুলিশের সব ইউনিটকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বা কেপিআই (কি পয়েন্ট ইনস্টলেশন) লক্ষ্য করে হামলার আশঙ্কা রয়েছে—এমন তথ্যের ভিত্তিতে দেশের সব মেট্রোপলিটন, রেঞ্জ ও জেলা পুলিশকে এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

শনিবার ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে সারা দেশে কেপিআই স্থাপনায় বাড়তি নজরদারির এই নির্দেশনা আসে। মেট্রোপলিটন এলাকার একজন পুলিশ কমিশনার ও অন্তত তিন জেলার পুলিশ সুপার, সদর দপ্তর থেকে এমন বার্তা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

শনিবার রাতেই মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তারা সম্ভাব্য হামলা ঠেকাতে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার মৌখিক নির্দেশনা পেয়েছেন। চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, 'শনিবারের রাতের নির্দেশনার পর অনেক জায়গায় পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।' এ ছাড়া সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার বাড়ানোর জন্যও তাগিদ দেওয়া হয়েছে বলে জানান ওই পুলিশ সুপার।

বিমানবন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আগুনের ঘটনার পর সতর্কতার অংশ হিসেবে কেপিআইয়ের নিরাপত্তা আগের চেয়ে জোরদার করা হয়েছে বলে একাধিক সরকারি সূত্রও নিশ্চিত করেছে।

তবে পরপর এমন ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে শঙ্কা প্রকাশ করা নতুন কিছু নয় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও অপরাধ বিশ্লেষক তৌহিদুল হক। তিনি বলেন, ' বিমানবন্দর ও ইপিজেডের মতো জায়গায় লম্বা সময় ধরে আগুন জ্বলাও খালি চোখে দেখার কোনো সুযোগ নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও তদন্ত সংস্থার প্রধান কাজ হচ্ছে, নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে প্রতিটি আগুনের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা।'

তিনি আরও বলেন, 'আগের বছরগুলোর আগুনের ঘটনায় সঠিক তদন্ত না হওয়ায় স্বাভাবিক আগুনের ঘটনাতেও মানুষের মনে সন্দেহ জাগে। পুলিশ বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচিত হবে, দ্রুত এসব ঘটনার প্রতিবেদন প্রকাশ করা। তবে জননিরাপত্তার প্রশ্নে মানুষকে আশ্বস্ত না করতে পারলে, সামনে আমরা যে নির্বাচন নিয়ে কথা বলছি তা নিয়েও নানা ধরনের সন্দেহ দেখা দিতে পারে।'

গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বা কেপিআই কী?

দেশের 'কি পয়েন্ট ইনস্টলেশন' বা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহকে সংক্ষেপে কেপিআই বলা হয়। বর্তমানে সারা দেশে বঙ্গভবন, গণভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জাতীয় সংসদ, বিমানবন্দর, সচিবালয়, বিটিভি, কারাগার এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ মোট ৫৮৭টি কেপিআই রয়েছে। এগুলোর নিরাপত্তা কার্যক্রম তত্ত্বাবধানের জন্য সরকারের একটি শক্তিশালী নীতিমালা কমিটি রয়েছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, একটি দেশের কেপিআইগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর সামগ্রিক জাতীয় নিরাপত্তা অনেকাংশে নির্ভরশীল। 

১৯৯৭ সালে ইংরেজিতে প্রণীত কেপিআই নিরাপত্তাবিষয়ক নীতিমালাটি ২০১৩ সালে বাংলায় হালনাগাদ করা হয়। এই নীতিমালা অনুযায়ী, কেপিআইয়ের নিরাপত্তা ও তদারকি বাড়ানো, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, নিরাপত্তা কমিটি গঠন এবং নিয়মিত প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশনা রয়েছে। এছাড়া দর্শনার্থীদের তথ্য লিপিবদ্ধ করা, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, সিসিটিভি স্থাপন, ভেহিকেল সার্চ মিরর ও লাগেজ স্ক্যানার বসানোর কথাও বলা হয়েছে। নীতিমালায় প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সশস্ত্র আনসার নিয়োগের কথাও উল্লেখ রয়েছে। 

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার