বঙ্গবন্ধুর ছবি: ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবে জটিলতার শঙ্কা দেখছে বাসদ

জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৩১ পিএম

রকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ছবি থাকবে কি না, এ নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন মতামত চাওয়ায় নতুন জটিলতা ও বিতর্কের অবতারণা করবে বলে মনে করছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ।বাংলাদেশ ভ্রমণ
কমিশনকে এই প্রস্তাব থেকে সরে আসার অনুরোধ করে দলটি বলেছে, অন্যথায় তারাসহ অনেক দলের পক্ষে সনদে স্বাক্ষর করা হয়তো ‘অসম্ভব’ হয়ে পড়বে।
রোববার বাসদ সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজকে চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছেন। ওই চিঠির অনুলিপি সংবাদমাধ্যমেও পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, “অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম যে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের স্বাক্ষরে কমিশন বৃহস্পতিবার দলগুলোকে যে চিঠি দিয়েছে, তাতে বলা হয়, সংবিধানের ‘অনুচ্ছেদ ৪ক’ বিলুপ্তির প্রস্তাব জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি বিবেচনা করছে।”
বাসদ বলেছে, অথচ গত ১৭ সেপ্টেম্বর ঐকমত্য কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলসমূহের সভায় কমিশনের তরফে বলা হয়েছিল, জাতীয় সনদে আর কোনো পরিবর্তন গ্রহণ করা হবে না। সে অনুযায়ী কোনো দল জাতীয় সনদের চূড়ান্ত খসড়া নিয়ে কোনো আলোচনা না করলেও খোদ কমিশনের পক্ষ থেকেই নতুন বিষয়ে দলগুলোর মতামত চাইছে।
“এটা ঐকমত্য কমিশনের পূর্বেকার সিদ্ধান্তের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।”
সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি নামিয়ে ফেলার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর লিখিত মতামত শনিবার বিকাল ৪টার মধ্যে কমিশন বরাবর অথবা কমিশনের ই-মেইলে বা হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে পাঠাতে বৃহস্পতিবার অনুরোধ করে কমিশন।
বাসদ বলছে, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর একটি রিট মামলায় উচ্চ আদালতের রায়ে বলা হয়েছে যে রাজনৈতিক বিষয় আগামীতে নির্বাচিত জাতীয় সংসদে নির্ধারিত হবে। বাসদও তা সঠিক বলে মনে করে।
সংবিধানের ৪ক অনুচ্ছেদ নিয়ে ইতিপূর্বে কোনো সভায় আলোচনা হয়নি অথচ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে মতামত চাওয়া হয়েছে, এ কথা তুলে ধরে দলটি চিঠিতে বলা হয়েছে, “সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪ক এর মতো স্পর্শকাতর বিষয়ের বিলুপ্তির প্রস্তাব নতুন করে জটিলতা ও বিতর্কের অবতারণা করবে। আমরা কমিশনকে এই প্রস্তাব থেকে সরে আসার জন্য অনুরোধ করছি।”
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী অনুযায়ী, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি প্রদর্শনের বিষয়ে ২০১১ সালের ১০ জুলাই একটি নির্দেশনা জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
আলী রীয়াজের স্বাক্ষরে কমিশন বৃহস্পতিবার দলগুলোকে যে চিঠি দিয়েছে, তাতে বলা হয়, “সংবিধানের ‘অনুচ্ছেদ ৪ ক’ বিলুপ্তির প্রস্তাব জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি বিবেচনা করছে।”
বাসদ বলছে, দীর্ঘ আলোচনার পর জুলাই সনদের বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ৮৪টির সুপারিশের অধিকাংশের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে। বেশ কিছু বিষয়ে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বা ভিন্নমত রয়েছে। বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়েও দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হয়নি।
ঐকমত্য কমিশনকে দেওয়া দলটির চিঠিতে বলা হয়েছে, “আমরা বিদ্যমান সংবিধানের রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি বাদ দেওয়ার প্রস্তাব থেকেও কমিশনের বিরত থাকা বাঞ্ছনীয় মনে করি। আমরা জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করতে চাই। তার জন্য উপরোক্ত বিষয়সমূহের (সংবিধানের ‘অনুচ্ছেদ ৪ক’ বিলুপ্তির প্রস্তাব) ব্যাপারে কমিশনের যথাযথ পজেটিভ পদক্ষেপ আশা করি।
“অন্যথায় আমাদের দলসহ অনেক দলের পক্ষে সনদে স্বাক্ষর করা হয়তো অসম্ভব হয়ে পড়বে।”