চাঁদাবাজির অভিযোগে ঢাবি ছাত্রদল নেতা শাওন আটক

জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৪৪ পিএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন শাওনসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অপহরণ ও মারধরের অভিযোগে মামলা হয়েছে।
মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, তারা এক ব্যবসায়ীকে গুলশান এলাকা থেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি ও শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছে। পুলিশ ইতোমধ্যে ছাত্রদল নেতা নাছির উদ্দিন শাওন এবং মোহাম্মদ ইদ্রিসকে (৪৬) আটক করেছে।
শনিবার গুলশান থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় গুলশান এলাকায় অভিযান চালিয়ে নাছির উদ্দিন শাওন ও মোহাম্মদ ইদ্রিসকে আটক করা হয়। পরে অপহৃত ব্যবসায়ী শেখ নাঈম আহমেদের করা মামলায় ছাত্রদল নেতা নাছির উদ্দিন শাওন, ইদ্রিসসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৮–১০ জনকে আসামি করা হয়।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, নাছির উদ্দিন শাওন এবং মোহাম্মদ ইদ্রিসকে শনিবার পুরান ঢাকার সিএমএম কোর্টে চালান দেওয়া হয়েছে।
তবে ঘটনার বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি নন ছাত্রদলের কেউই। এ বিষয়ে জানতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন, সাংগঠনিক সম্পাদক নূর আলম ভূঁইয়া ইমন, দপ্তর সম্পাদক মল্লিক ওয়াসি উদ্দিন তামিসহ সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের কারও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল নেতা শেখ তানভীর বারী হামিম বলেন, অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু এখনো জানি না। হয়তো সেই কারণেই নেতৃবৃন্দ ফোন ধরছেন না।
এদিকে মামলার বাদী শেখ নাঈম আহমেদ রাজধানীর পান্থপথ এলাকার ‘ট্রিপজায়ান’ নামের একটি ট্রাভেল এজেন্সির মালিক। তিনি অভিযোগ করেন, শুক্রবার বিকালে গুলশানে ব্যবসায়িক কাজে গিয়ে ছাত্রদল নেতা নাছির উদ্দিন শাওন ও তার সহযোগীদের হাতে তিনি অপহৃত হন।
এজাহারে নাঈম বলেন—৯ অক্টোবর দুপুর ১টার দিকে গুলশান-১ এলাকায় মিটিং শেষে বিসমিল্লাহ হানিফ বিরিয়ানি অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে খেতে যাই। খাওয়া শেষে বিকাল ৫টা ৫৫ মিনিটে নাছির উদ্দিন শাওন আমাকে ফোন করে দুবাইয়ের টিকিট কেনার কথা বলে আমার অবস্থান জানতে চান। কিছুক্ষণ পর শাওন, ইদ্রিস, হেলালসহ ৮–১০ জন এসে আমাকে ঘিরে ধরে পাশের খলিফাস রেস্টুরেন্টে জোরপূর্বক নিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, ওই সময় তারা আমার ফোন, ল্যাপটপ ও মানিব্যাগ নিয়ে নেয় এবং ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আমি অস্বীকৃতি জানালে তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং গুলশান লেকপাড়ে নিয়ে গিয়ে মারধর করে।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, মুক্তিপণ না দিলে রাত পৌনে ১২টার দিকে ভুক্তভোগীকে মোটরসাইকেলে তুলে হাতিরঝিল সংযোগ সড়কের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে যৌথ বাহিনীর একটি চেকপোস্টে তাদের আটকানোর চেষ্টা করলে শাওনসহ কয়েকজন পালিয়ে যায়। যৌথ বাহিনী ইদ্রিসকে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করে।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে গুলশান থানার ওসি, ওসি (তদন্ত), পরিদর্শক (অপারেশন) এবং ডিসি (গুলশান) এর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কেউ ফোন ধরেননি।
থানার দায়িত্বরত ডিউটি অফিসার শনিবার সকালে জানান, ‘মামলাটি রুজু হয়েছে, কিন্তু বিস্তারিত জানাতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। নাম প্রকাশেও তিনি অনিচ্ছুক ছিলেন।