নারী সমন্বয়কদের নিয়ে অপতথ্যের জাল, শীর্ষে কে?

জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৩১ পিএম

কোটা সংস্কারের দাবিতে গত বছরের জুলাইয়ে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল নারী নেতৃত্বের সক্রিয় উপস্থিতি। কেউ রাজপথে বিক্ষোভ-সমাবেশে অংশ নিয়েছেন, কেউ বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে আন্দোলনকে বেগবান করেছেন। তবে আন্দোলনের প্রায় এক বছর পরও এসব নারী সমন্বয়ক ও অ্যাক্টিভিস্টদের ঘিরে চলছে অপতথ্যের অপপ্রচার—যার অধিকাংশই হয়রানিমূলক ও মানহানিকর।
তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানার–এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে অন্তত আটজন নারী সমন্বয়ক ও অ্যাক্টিভিস্টকে জড়িয়ে ৩২টি অপতথ্য ছড়ানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এর পরেই রয়েছেন সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা, যাকে ঘিরে সাতটি অপতথ্য প্রচারিত হয়েছে। আর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও জুলাই আন্দোলনের কর্মী নাফসিন মেহনাজকে জড়িয়ে পাঁচটি অপতথ্য শনাক্ত করেছে রিউমার স্ক্যানার। এর মধ্যে তিনটিতেই দাবি করা হয়েছে তার ‘আপত্তিকর দৃশ্যের’ ভিডিও রয়েছে—যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও মনগড়া।
এ ছাড়া সামিয়া মাসুদ মম, তিলোত্তমা ইতি, সাবরিনা আফরোজ সেবন্তি, এথিনা তাবাসসুম মীম ও আনিকা তাসনিমকে জড়িয়ে একটি করে অপতথ্যের ঘটনা শনাক্ত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চলতি বছরই দেখা গেছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নারীকে কেন্দ্র করে সমন্বিত অপপ্রচারের নজির। গত এপ্রিলে ‘রুবাইয়া ইয়াসমিন’ নামে এক নারীর পরিচয়ে অন্তত পাঁচটি কনটেন্ট ভাইরাল হয়, যার একটি ছিল আপত্তিকর। পরে রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই নারীর আসল নাম যুথী; তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন, এমনকি ওই নামে কোনো সমন্বয়কও নেই।
এ বিষয়ে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে যারা কাজ করেন, তাদের জন্য এ ধরনের গুজব ভয়াবহ হয়ে ওঠে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এসব তথ্যকে সত্যি বলে বিশ্বাস করে ফেলে, ফলে সামাজিক ও পারিবারিকভাবে নারীরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মতো সক্রিয় কর্মীরাও যদি এমন আক্রমণের শিকার হই, তাহলে অন্য নারীরা রাজনীতিতে বা আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ হারাবেন। এ ধরনের অপপ্রচার আসলে কৌশলগতভাবে নারীদের ভয় দেখানোর একটি পদ্ধতি।
রিউমার স্ক্যানারের মতে, এসব ঘটনা প্রমাণ করে যে বাংলাদেশের অনলাইন পরিসরে নারী কর্মী ও সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে অপতথ্য এখন সংগঠিতভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে—যা শুধু ব্যক্তি নয়, সমাজের অংশগ্রহণমূলক রাজনীতিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে।