Logo
Logo
×

জাতীয়

সাবেক ভূমিমন্ত্রীর অবৈধ সম্পদ অর্জনের ২৩ বস্তা আলামত উদ্ধার

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:০৫ পিএম

সাবেক ভূমিমন্ত্রীর অবৈধ সম্পদ অর্জনের ২৩ বস্তা আলামত উদ্ধার

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের অবৈধ সম্পদ অর্জনের সঙ্গে সম্পর্কিত ২৩ বস্তা আলামত উদ্ধার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রোববার ( ২১ সেপ্টেম্বর) ভোরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানাধীন শিকলবাহা এলাকার সিকদার বাড়ি থেকে এসব নথি জব্দ করা হয়।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, ঋণের নামে অর্থ আত্মসাতের একটি মামলায় রিমান্ডে থাকা দুই আসামি উৎপল পাল ও আব্দুল আজিজের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়। উদ্ধারকৃত বস্তাগুলোতে জাবেদের বিদেশে সম্পদ অর্জনের নথি, বিল পরিশোধের তথ্য এবং ভাড়া আদায়ের বিভিন্ন ডকুমেন্ট রয়েছে বলে জানিয়েছে দুদক।

এর আগে, গত ১৭ সেপ্টেম্বর দুদক সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী উৎপল পাল ও আব্দুল আজিজকে গ্রেফতার করে। পরদিন তাদের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের (ইউসিবিএল) থেকে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে করা একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে তোলা হয়। আদালত তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মশিউর রহমান জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানান যে, অনেক নথিপত্র গায়েব করা হয়েছে এবং সেগুলো জাবেদের স্ত্রী রুকমিলা জামানের গাড়িচালক ইলিয়াসের বাসায় রাখা ছিল। গত শুক্রবার সেখানে অভিযান চালানো হলেও, দুদক দল পৌঁছানোর আধা ঘণ্টা আগে আলামতগুলো সরিয়ে ফেলা হয়। পরে একটি ছোট বাসা থেকে ২৩ বস্তা আলামত জব্দ করা সম্ভব হয়।

মশিউর রহমান আরও বলেন, জব্দ করা বস্তাগুলোর মধ্যে কিছু খুলে দেখা গেছে, সেগুলোতে বিদেশে সম্পদ ক্রয় সংক্রান্ত পেমেন্ট, বাড়ি ভাড়া আদায়ের তথ্য, বিভিন্ন বিল পরিশোধ ও কোর্টের আদেশ সম্পর্কিত ডকুমেন্টস রয়েছে। তিনি জানান, এখনও সব বস্তার নথি পর্যালোচনা করা সম্ভব হয়নি, তবে কাজ চলছে।

দুদক সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতার উৎপল আরামিট গ্রুপের এজিএম হলেও তিনি দীর্ঘদিন ধরে জাবেদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে বিদেশে সম্পদ ক্রয় ও দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন। দেশ থেকে দুবাই হয়ে যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচার প্রক্রিয়ার মূল হোতা হিসেবে কাজ করতেন তিনি। অন্যদিকে, আব্দুল আজিজ আরামিট থাই অ্যালুমিনিয়ামের এজিএম হিসেবে জাবেদের সম্পত্তি কেনাবেচা, ভাড়া ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন।

এর আগে, গত ২৪ জুলাই দুদকের উপ-পরিচালক মশিউর রহমান বাদী হয়ে সাবেক ভূমিমন্ত্রী জাবেদ ও তার স্ত্রী রুকমিলা জামানসহ ৩১ জনকে আসামি করে মামলাটি করেছিলেন। মামলায় ইউসিবিএল ব্যাংকের পরিচালক আসিফুজ্জামান চৌধুরী (৪৬), জাবেদের বোন রোকসানা জামান চৌধুরী (৫৬) এবং ইউসিবিএল ব্যাংকের সাবেক পরিচালক বশির আহমেদকে (৫৫) আসামি করা হয়।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সাবেক ভূমিমন্ত্রী জাবেদের মালিকানাধীন আরামিট গ্রুপের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে খুলে দেওয়া হয় পাঁচটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান-ভিশন ট্রেডিং, আলফা ট্রেডার্স, ক্ল্যাসিক ট্রেডিং, মডেল ট্রেডিং ও ইম্পেরিয়াল ট্রেডিং। এরপর ইউসিবিএল ব্যাংকের চট্টগ্রাম বন্দর শাখায় এসব প্রতিষ্ঠানের নামে হিসাব খুলে গম, ছোলা, হলুদ ও মটর আমদানির নামে ২৫ কোটি টাকার টাইম লোন (নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য নেওয়া ঋণ যা কিস্তিতে পরিশোধ করতে হয়) অনুমোদন করানো হয়। ব্যাংকের নিজস্ব ‘ক্রেডিট কমিটি’র ১৭টি নেতিবাচক পর্যবেক্ষণ উপেক্ষা করে ২০২০ সালের ৮ মার্চ পরিচালনা পর্ষদ ওই ঋণ অনুমোদন দেয়। এরপর সেই টাকা ভাগ করে একই ব্যাংকে খোলা চারটি হিসাব নম্বরে স্থানান্তর করে পাচার করা হয়।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার