চব্বিশের জুলাই-আগস্ট আন্দোলন চলাকালে হত্যা ও গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনা সরকারের সাবেক ১৭ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ উচ্চপদস্থ রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল পৌনে ১০টার দিকে কেরানীগঞ্জ ও কাশিমপুর কারাগার থেকে কড়া নিরাপত্তায় তাদের ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। আসামিদের একে একে প্রিজনভ্যান থেকে নামিয়ে হাজতখানায় নেওয়া হয়।

ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে বিচারিক প্যানেলে মামলার অগ্রগতি নিয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

আসামির তালিকায় আছেন– সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক এমপি সোলায়মান সেলিম, সাবেক এমপি ফারুক খান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, শেখ হাসিনার সাবেক বেসরকারি শিল্প-বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার।

এই ১৭ জনের মধ্যে সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক, হাসানুল হক ইনু, এবং জুনাইদ আহমেদ পলকের বিরুদ্ধে পৃথক ফরমাল চার্জ দাখিল করেছে প্রসিকিউশন। ইনুর মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। এছাড়া, পলকের বিরুদ্ধে জুলাই অভ্যুত্থান সময় ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করার মাধ্যমে গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে। শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ও এই মামলায় অভিযুক্ত, এবং তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

এর আগে ১৫ অক্টোবর, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ট্রাইব্যুনাল নির্দেশ দিয়েছিল। প্রসিকিউশনের আবেদনে, তদন্তের জন্য আরও সময় চাওয়া হয়েছিল, যার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন সময় নির্ধারণ করা হয়।

আজ সকালে ট্রাইব্যুনালের সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কঠোর তল্লাশি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। আসামিরা ট্রাইব্যুনালে প্রবেশের পূর্বে সকলকে তল্লাশি করা হয়।