যে আমল করলেই জান্নাত লাভের গ্যারান্টি দিয়েছেন রাসুল (সা.)
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৩৩ এএম
আবু আব্দুল্লাহ জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আল-আনসারি (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বলল, এই ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, ‘আপনি আমাকে বলুন তো, যদি আমি শুধু ফরজ নামাজ পড়ি, অর্থাৎ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি, অতিরিক্ত নফল না পড়ি, রামাদান মাসের রোজা রাখি, কিন্তু অন্য কোনো নফল সিয়াম না রাখি, হালাল জিনিসকে হালাল জানি এবং তা ব্যবহার করি, উপভোগ করি, আর হারাম জিনিসকে হারাম জেনে তা থেকে দূরে থাকি- তবুও কি আমি জান্নাতে ঢুকতে পারব?’ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘হ্যাঁ, তুমি জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মুসলিম, ১৫)
এই হাদিসের মূল শিক্ষা হলো, যে ব্যক্তি ওয়াজিব ও ফরজসমূহ আদায় করে, হারাম বিষয়াবলি থেকে বেঁচে থাকে এবং হালাল খাদ্য-পানীয়ের বাইরে অন্য কিছুতে লিপ্ত হয় না, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আল্লাহতায়ালা মুমিনদের তিন ভাগে বিভক্ত করেছেন
এক. জালিম মুমিন: যিনি গুনাহে লিপ্ত হয়েছে, কিন্তু শিরকে নন। তার বিষয়টি আল্লাহর ইচ্ছাধীন। আল্লাহ চাইলে তাকে ক্ষমা করে দেবেন, অথবা শাস্তি দেবেন। কিন্তু পরিশেষে তার ঠিকানা হবে জান্নাত, যদিও শাস্তির পর সে জান্নাতে প্রবেশ করে।
দুই. মধ্যপন্থি ঈমানদার: উক্ত হাদিসে মূলত এই শ্রেণির কথাই বলা হয়েছে- যিনি ফরজ কাজগুলো করেছেন, নফল বা অতিরিক্ত কিছু করেননি, হারাম থেকে নিজেকে রক্ষা করেছেন, আর হালাল ও মুবাহ জিনিসেই সন্তুষ্ট থেকেছেন।
তিন. সওয়াব প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকা ঈমানদার: যিনি ফরজ-ওয়াজিব আদায়ের পাশাপাশি নফল ইবাদতেও অগ্রগামী এবং হারাম ও মাকরুহ বিষয় থেকে বেঁচে থাকেন, এমনকি সতর্কতাবশত কিছু মুবাহ বা বৈধ বিষয়ও পরিহার করেন। এটিই মুমিনদের সর্বোচ্চ স্তর।
আল্লাহতায়ালা বলেন, অতঃপর তাদের কেউ নিজের ওপর জুলুমকারী, কেউ মধ্যমপন্থি এবং কেউ আল্লাহর ইচ্ছায় কল্যাণের পথে অগ্রগামী। (সুরা ফাতির, ৩২) সব ঈমানদারই এই তিনটি শ্রেণির একটির অন্তর্ভুক্ত। এবং তারা সবাই জান্নাতেই প্রবেশ করবে। আল্লাহতায়ালা বলেন, তারা প্রবেশ করবে চিরস্থায়ী জান্নাতে। সেখানে তাদেরকে স্বর্ণ ও মুক্তার কঙ্কণ দ্বারা অলংকৃত করা হবে এবং তাদের পোশাক হবে রেশমের। (সরা ফাতির, ৩৩)
সুতরাং, যে ব্যক্তি নিজের ওপর জুলুমকারী, এমনকি সেও পরিশেষে জান্নাতে প্রবেশ করবে, যতক্ষণ পর্যন্ত সে শিরক ও কবিরাহ গুনাহ থেকে মুক্ত থাকে। সেও জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভুক্ত। হয় আল্লাহ তাকে নিজ করুণায় ক্ষমা করে দেবেন, নতুবা জাহান্নামের আগুনে তার পাপ মোচন করে পবিত্র করার পর জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।