Logo
Logo
×

ইসলাম

যেভাবে আল্লাহর ওপর ভরসা করলে ক্ষমা পাওয়া যায়

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:২৩ পিএম

যেভাবে আল্লাহর ওপর ভরসা করলে ক্ষমা পাওয়া যায়

‘বান্দা! আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না’-এই অমোঘ বার্তা কেবল আল্লাহই দিতে পারেন, কারণ তার রহমত কখনোই বান্দার থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় না—যত পাপী বা অবাধ্যই হোক। আল্লাহ তাআলা তার অশেষ দয়া ও ক্ষমা নিয়ে সব সময় আমাদের পাশে আছেন এবং তিনি কখনো আমাদের পরিত্যাগ করেন না। তাই, যখন সব কিছুই অন্ধকার মনে হয়, তখন মনে রাখুন—আল্লাহর রহমত কখনো আমাদের ছেড়ে যায় না।

দয়াল নবীজি (সা.) তো এভাবেই দোয়া করতেন-

اللَّهُمَّ إِنَّكَ عُفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي

উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন; তুহিব্বুল আফওয়া; ফাঅফু আন্নি’

অর্থ: ‘হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল; ক্ষমা করাকে ভালোবাসেন; সুতরাং আমাকে ক্ষমা করে দিন।’

নির্ভয়ে এ কথা কেবল একমাত্র মহান আল্লাহর কাছে বলা যায়, যিনি ক্ষমাশীল ও দয়ালু। কুরআনুল কারিমের নানা স্থানে আল্লাহ তাআলা তার রহমত ও ভরসার কথা ঘোষণা করেছেন, বলেছেন—নিরাশ হবে না বরং নিশ্চিন্তে ভরসা রাখো। আল্লাহ তাআলা বলেন-

قُلۡ یٰعِبَادِیَ الَّذِیۡنَ اَسۡرَفُوۡا عَلٰۤی اَنۡفُسِهِمۡ لَا تَقۡنَطُوۡا مِنۡ رَّحۡمَۃِ اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ یَغۡفِرُ الذُّنُوۡبَ جَمِیۡعًا ؕ اِنَّهٗ هُوَ الۡغَفُوۡرُ الرَّحِیۡمُ

‘ঘোষণা করে দাও (আমার এ কথা), হে আমার বান্দারা! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি জুলুম করছো, তারা আল্লাহর করুণা থেকে নিরাশ হয়ো না; নিশ্চয়ই আল্লাহ সব পাপ মাফ করে দেবেন। নিশ্চয়ই তিনিই চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা যুমার: আয়াত ৫৩)

মানুষের সব দরজা বন্ধ হয়ে গেলেও আল্লাহর রহমত ও কল্যাণের দরজা কখনো বন্ধ হয় না। দুনিয়ার পথে কোনো এক দিক বন্ধ হলে, আল্লাহ অন্যান্য দিক থেকে রহমতের দরজা খুলে দেন। তিনি রহমান, দয়াশীল এবং ক্ষমাশীল, বিশেষ করে ক্ষমা প্রার্থনাকারীদের জন্য।

আফসোস! ছোট বা বড় বিপদে মানুষ অস্থির হয়ে যায়, সমাধান খুঁজতে দিগ্বিদিক ঘুরে। কিন্তু আল্লাহর কাছে বা সঠিক পথে সমাধান চায় না। যখন কোনো কুলকিনারা পায় না, তখন আল্লাহর কাছে ফিরে আসে। অথচ এ কাজটি প্রথমেই করা উচিত ছিল।

মনে রাখতে হবে, শেষবেলায় আল্লাহর দিকে ফিরে আসার বদলে, প্রথম থেকেই আল্লাহর সাহায্য চাওয়া উচিত। তিনি সব কিছুর সমাধান দিতে পারেন, কারণ তিনি আল্লাহ এবং তারই কাছে সবকিছুর সমাধান রয়েছে। তাইতো তিনি বলেন, ‘আমার রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না।’ আল্লাহ তাআলা একাধিক আয়াতে আশ্বস্থ করে বলেন-

১. وَ عَسٰۤی اَنۡ تَکۡرَهُوۡا شَیۡئًا وَّ هُوَ خَیۡرٌ لَّکُمۡ ۚ وَ عَسٰۤی اَنۡ تُحِبُّوۡا شَیۡئًا وَّ هُوَ شَرٌّ لَّکُمۡ ؕ وَ اللّٰهُ یَعۡلَمُ وَ اَنۡتُمۡ لَا تَعۡلَمُوۡنَ

‘এবং হতে পারে কোনো বিষয় তোমরা অপছন্দ করছ অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হতে পারে কোনো বিষয় তোমরা পছন্দ করছ অথচ তা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। আর আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না।’ (সুরা বাকারা: আয়াত ২১৬)

২. مَا یَفۡتَحِ اللّٰهُ لِلنَّاسِ مِنۡ رَّحۡمَۃٍ فَلَا مُمۡسِکَ لَهَا ۚ وَ مَا یُمۡسِکۡ ۙ فَلَا مُرۡسِلَ لَهٗ مِنۡۢ بَعۡدِهٖ ؕ وَ هُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ

আল্লাহ মানুষের প্রতি কোনো করুণা করলে কেউ তার নিবারণকারী নেই এবং তিনি যা নিবারণ করেন তারপর কেউ তার প্রেরণকারী নেই। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা ফাতির: আয়াত ২)

আল্লাহর ওপর আস্থা রাখার সমাধান

এ কারণেই আল্লাহর রাসুল (সা.) যখনই কোনো বিষয়ে সমস্যা পড়তেন বা চিন্তাগ্রস্ত হতেন তখনই তিনি নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন।’ (মুসনাদে আহমাদ) তার এ নামাজে দাঁড়ানোর উদ্দেশ্য ছিল, আল্লাহর কাছে সাহায্য কামনা করা। আল্লাহর রহমত কামনা করা। এটি উম্মতের জন্য মহান শিক্ষা।

সুতরাং, হে মানুষ! যদি আল্লাহকেই তোমার জন্য যথেষ্ট মনে কর, তাহলে তোমার সব পেরেশানি আল্লাহকে জানিয়ে দাও। একবার আল্লাহকে জানিয়ে দিলে, আর চিন্তা করার কিছু নেই—বাকি সব মহান আল্লাহ দেখবেন। কারণ তিনি বলেছেন-

قُلۡ یٰعِبَادِیَ الَّذِیۡنَ اَسۡرَفُوۡا عَلٰۤی اَنۡفُسِهِمۡ لَا تَقۡنَطُوۡا مِنۡ رَّحۡمَۃِ اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ یَغۡفِرُ الذُّنُوۡبَ جَمِیۡعًا ؕ اِنَّهٗ هُوَ الۡغَفُوۡرُ الرَّحِیۡمُ

‘ঘোষণা করে দাও (আমার এ কথা), হে আমার বান্দারা! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি জুলুম করছো, তারা আল্লাহর করুণা থেকে নিরাশ হয়ো না; নিশ্চয়ই আল্লাহ সব পাপ মাফ করে দেবেন। নিশ্চয়ই তিনিই চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা যুমার: আয়াত ৫৩)

জীবনে দুঃখকষ্ট আসা স্বাভাবিক, কিন্তু নিরাশ হয়ে এদিক-সেদিক ঘুরলে সমাধান হবে না। তাই হতাশ না হয়ে, মনোক্ষুণ্ন না হয়ে, সুন্নাহভিত্তিক আমলে মনোযোগী হওয়া উচিত। কেননা আল্লাহর ওপর ভরসা করলেই তিনি ক্ষমা করবেন— এটাই মুমিনের কাজ।


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার