ইসলামী দৃষ্টিতে ‘জাহান্নামী নারী’ বলতে বোঝায়, সেইসব নারী, যারা আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করেন, অহংকার ও অবাধ্যতার পথে চলেন এবং তওবা না করে মৃত্যুবরণ করেন। কুরআন ও হাদীসের বিভিন্ন বর্ণনায় কিছু নারীর আচরণকে জাহান্নামের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) নারীদের সতর্ক করে দিয়েছেন এমন কিছু গুণাবলি থেকে, যা তাদেরকে জাহান্নামে নিয়ে যেতে পারে। এর মধ্যে তিনটি প্রধান শ্রেণি বা ধরন নিচে উল্লেখ করা হলো:
স্বামীর প্রতি অবাধ্য ও অকৃতজ্ঞ নারী
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “আমি জাহান্নামে তাকিয়ে দেখলাম, সেখানে অধিকাংশই নারী। কারণ তারা স্বামীদের প্রতি অকৃতজ্ঞ এবং উপকার অস্বীকার করে।”
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৯)
অর্থাৎ-স্বামী যতই সদ্ব্যবহার করুন না কেন, কোনো এক সময়ের অপ্রসন্নতায় যদি স্ত্রী বলে বসে— “তুমি আমার জন্য কখনোই কিছু করো নি”- তাহলে সেটি অকৃতজ্ঞতার পরিচয়, যা আল্লাহর কাছে অপছন্দনীয় এবং জাহান্নামের কারণ হতে পারে।
অশালীন, উগ্র ও প্রদর্শনপ্রিয় নারী
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “দুই শ্রেণির মানুষ জাহান্নামী, যাদের আমি এখনও দেখিনি-(একটি) এমন নারী যারা পোশাক পরেও উলঙ্গ, দেহ প্রদর্শনকারী, অন্যদেরও আকৃষ্ট করে, তাদের চুল উটের কুঁজের মতো করে সাজায়। তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না এবং তার ঘ্রাণও পাবে না।”
(সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২১২৮)
এই হাদিসে বলা হয়েছে, এমন নারী যারা অশালীন পোশাক পরেন, দেহ প্রদর্শন করেন, পুরুষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন, চুলের অস্বাভাবিক সাজে নিজেদেরকে আকর্ষণীয় বানান-তারা জাহান্নামের শাস্তির মুখোমুখি হবেন।
পরনিন্দা, হিংসা ও বিভেদ সৃষ্টিকারী নারী
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “যে নারী পরনিন্দা করে, অন্যের দাম্পত্য জীবনে ফাটল সৃষ্টি করে, কিংবা প্রতিবেশীর ক্ষতি করে -সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।”
(মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২৭৫৭৩)
অর্থাৎ, এমন নারী যারা কথা ও আচরণের মাধ্যমে অন্যদের মধ্যে বিদ্বেষ, হিংসা ও বিভেদ ছড়ায়— তারা জাহান্নামের শাস্তি প্রাপ্য।
সংক্ষেপে বলা যায়, জাহান্নামী তিন ধরনের নারী হলো:
১. স্বামীর প্রতি অবাধ্য ও অকৃতজ্ঞ নারী।
২. অশালীন ও দেহ প্রদর্শনকারী নারী।
৩. হিংসা, পরনিন্দা ও ফিতনা সৃষ্টিকারী নারী।
তবে মনে রাখতে হবে, ইসলামে কারও জন্য স্থায়ীভাবে জাহান্নাম নির্ধারিত নয়, যদি সে তওবা করে ও আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়।
আল্লাহ তাআলা বলেন, “হে আমার বান্দারা! তোমরা নিজেরাই নিজের প্রতি জুলুম করেছ। আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গুনাহ ক্ষমা করেন।” (সূরা আজ-জুমার, আয়াত: ৫৩)