রমজান মাসজুড়ে রোজা রাখা ফরজ। এর বাইরে বিশেষ দিবসভিত্তিক, মাসিক, ও সাপ্তাহিক রোজা রয়েছে যা পালন করা নফল। এসব নফল রোজা ফজিলত অনেক বেশি। কিন্তু যদি এসব নফল রোজা রাখার পর কোনো নারীর পিরিয়ড শুরু হয় তবে করণীয় কী? ওই নারীকে কি এ রোজা পরবর্তীতে রাখতে হবে?
দিবসভিত্তিক রোজা- শাওয়ালের ৬ রোজা, জিলহজের ৯ রোজা, আরাফার দিনের রোজা, মহররমে আশুরার রোজা;
মাসিক রোজা- প্রতি আরবি মাসের তিনদিন আইয়ামে বিজের (১৩, ১৪ ও ১৫) রোজা; শাবান মাসের রোজা;
সপ্তাহিক রোজা- প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা পালন করা।
এছাড়াও যারা রোজা রাখতে পছন্দ করেন। তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ আমল হতে পারে একদিন পর একদিন নফল রোজা রাখা। এক দিন পর পর রোজা রাখাকে সওমে দাউদ বলে। হজরত দাউদ (আ.) এভাবে রোজা রাখতেন।
এসব রোজার মধ্যে মহররমের আশুরার রোজা, শাবান মাসের রোজা, শাওয়াল মাসের ৬ রোজা এবং আরাফার দিনসহ জিলহজ মাসের ৯ রোজার বিশেষ ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে। এসব রোজাই নফল রোজা।
শাওয়ালের ৬ রোজা সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, ‘যে রমজানের রোজা রাখে, অতঃপর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখে, সে যেন বছরজুড়ে রোজা রাখে। ’ ( মুসলিম ২৮১৫)
আশুরার রোজা সম্পর্কে হাদিসে এসেছে- আশুরার দিনের রোজার ব্যাপারে আমি আল্লাহর কাছে আশা করি, তিনি পূর্ববর্তী এক বছরের গোনাহ ক্ষমা করে দেবেন।( মুসলিম ১৯৭৬)
জিলহজ ও আরাফার রোজা সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, ‘এ দশ দিনের প্রতি দিনের রোজা এক বছরের রোজার এবং এর প্রত্যেক রাতের নামাজ কদরের রাতের নামাজের সমতুল্য। (তিরমিজি ৭৫৮) নবিজি (সা.) প্রতি বছরই জিলহজের প্রথম নয় দিন রোজা রাখতেন।
সাপ্তাহিক রোজার ফজিলত অনেক বেশি। প্রিয় নবী (সা.) প্রতি সপ্তাহে ২দিন রোজা রাখতেন। আর তাহলো সোমবার ও বৃহস্পতিবারের রোজা। তা ছিল মহানবীর (সা.) আমল। আর এই দুই দিন আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীনের কাছে বান্দার আমল পেশ করা হয়।
সুতরাং এসব রোজা রাখা অবস্থায় যদি কোন নারীর মাসিক বা ঋতুস্রাব বা পিরিয়ড শুরু হয়; তখন ওই নারীর করণীয় কী? তার জন্য কি পরে পুনরায় এ রোজা পূর্ণ করতে হবে।
এ বিষয়ে ইসলামী চিন্তাবিদদের মতামত হলো— যেদিন হায়েজ/ঋতুস্রাব বা পিরিয়ড শুরু হবে ওইদিনের রোজা পরবর্তীতে কাজা করে নিতে হবে। কারণ, এসব ক্ষেত্রে রোজার মূলনীতি হলো, নফল রোজা অবস্থায় পিরিয়ড এসে গেলে পরবর্তীতে তার কাজা আদায় করে নিতে হয়। কেননা নফল রোজা শুরু করার পর তা পূর্ণ করা আবশ্যক হয়ে যায়।