Logo
Logo
×

ইসলাম

রাতে ভয় পেলে বা কিছু অনুভব হলে যে দোয়া পড়বেন

Icon

জাগো বাংলা ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৫, ০৯:০৯ পিএম

রাতে ভয় পেলে বা কিছু অনুভব হলে যে দোয়া পড়বেন

জীন-ভূতের ভয় কমবেশি আমাদের সকলেরই আছে। কারো কম কারো বেশি। যারা বলে ভূত বলে কিছু নেই, তারাও কখনো ভয় পায়নি এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। অনেকেই আবার রাতে ভূতের ভয়ে ঘুমাতে পারে না। চোখ বন্ধ হলেই মনে হয়, কেউ যেন তার দিকে এগিয়ে আসছে। কেউ হয়তো পাশে শুয়ে আছে। 

অনেকে আবার ভয়ে রাতে ঘুম থেকে লাফিয়ে জেগে ওঠে। কারো আবার মনে হয় ঘরে কারো ছায়া ঘুরে বেড়াচ্ছে। 

এই ভয় থেকে রেহাই পাওয়ার জন্যে কেউ কেউ মাওলানা সাহেব, কেউবা সাধু সন্যাসীর দরবারে ঠুক মারে। তাদের কথা মতো মস্ত বড়ো তাবিজ গলায় ঝুলায়। প্রতারণার শিকার হয়ে কারো টাকা গচ্চা যায়। 

অথচ এই ভয় আমরা চাইলে নিজেরাই দূর করতে পারি। অশরীরী অনিষ্টকারী ভূত প্রেত, বদ জ্বিন থেকে রক্ষা পেতে পারি।

চলুন তাহলে জেনে নেই কিভাবে আমরা এই ভয় ও অনিষ্টতা থেকে রক্ষা পাবো। 

সব রকমের অশুভ ও ক্ষতিকর জিনিস থেকে রক্ষার জন্য বাড়িতে নিয়মিতভাবে সুরা বাকারাহ তিলাওয়াত করা। যদি সম্ভব হয় তবে উঁচু স্বরে পড়া উত্তম। এছাড়াও নিচের জিকিরগুলো প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় তিনবার পড়া যেতে পারে।

১. আয়াতুল কুরসি এবং কুরআন শরীফের শেষ তিনটি সুরা (সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস)

২. নিচের আয়াতটি পড়তে পারি।

فَلَمَّا أَلْقَوْا قَالَ مُوسَى مَا جِئْتُمْ بِهِ السِّحْرُ إِنَّ اللَّهَ لَا يُصْلِحُ عَمَلَ الْمُفْسِدِينَ

উচ্চারণ: ফালাম্মা আলকাও ক্বালা মূসা, মা জি’তুম বিহিস সিহরু, ইন্নাল্লাহা লা ইউসলিহু ‘আমালাল মুফসিদীন।

অর্থ: যখন তারা (জাদুকররা) ছুঁড়ে ফেলল, তখন মূসা বললেন: ‘তোমরা যা এনেছো, তা জাদুই বটে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা ভেঙে দেবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ ফাসাদকারীদের কাজকে সঠিক হতে দেন না।’ (সূরা ইউনুস: ৮১)

৩. জ্বিনসহ অন্যান্য অনিষ্টকারী প্রাণী থেকে বাঁচার জন্যে নিন্মোক্ত দোয়াটি অনেক উপকারী।

أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ، مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ

উচ্চারণ: আউযু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাহ, মিন কুল্লি শাইত্বানিন ওয়া হাাম্মাহ, ওয়া মিন কুল্লি ‘আইনিল লাম্মাহ।

অর্থ: আমি আল্লাহর পূর্ণ ও পরিপূর্ণ বাণীর আশ্রয় নিচ্ছি, প্রত্যেক শয়তান, বিষধর প্রাণী এবং সমস্ত কুদৃষ্টি থেকে।

এছাড়াও নিচের দু'টি দোয়া প্রতিদিন একবার করে পড়ো:

৪.

 أَعُوْذُ بِوَجْهِ اللهِ الْعَظِیْمِ الَّذِيْ لَیْسَ شَيْءٌ أَعْظَمَ مِنْهُ وَبِکَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّةِ الَّتِيْ لَایُجَاوِزُهُنَّ بَرٌّ وَلَافَاجِرٌ، وَبِأَسْمَآءِ اللهِ الْحُسْنیٰ کُلِّهَا مَاعَلِمْتُ مِنْهَا وَمَالَمْ أَعْلَمْ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ وَبَرَأَ وَذَرَأَ

উচ্চারণ: আউযু বিওয়াজহিল্লাহিল ‘আযীম, আল্লাযী লাইসা শাইউন আ‘যামা মিনহু, ওয়া বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাহ, আল্লাতী লা ইউজাউইযুহুন্না বাররুন ওয়ালা ফাজিরুন। ওয়া বিআসমাইল্লাহিল হুসনা কুল্লিহা মা ‘আলিমতু মিনহা ওয়া মালাম আ‘লাম, মিন শাররি মা খালাক্বা ওয়া বারা'আ ওয়া যারাআ।

অর্থ: আমি আশ্রয় নিচ্ছি মহান আল্লাহর, যার চেয়ে বড় কিছু নেই; আর আল্লাহর পরিপূর্ণ বাণীর আশ্রয় নিচ্ছি, যা কোনো নেককার বা পাপী অতিক্রম করতে পারে না; আর আমি আল্লাহর সমস্ত সুন্দর নামের আশ্রয় চাই, যা আমি জানি ও জানি না। আল্লাহ তা'আলা যেসকল বস্তু সৃষ্টি করেছেন, তার অনিষ্ট থেকেও আমি আল্লাহর পানাহ কামনা করছি। 

৫.

أَعُوْذُ بِوَجْهِ اللهِ الْکَرِیْمِ وَبِکَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّةِ اللَّاتِيْ لَایُجَاوِزُهُنَّ بَرٌّ وَلَافَاجِرٌ مِنْ شَرِّ مَایَنْزِلُ مِنَ السَّمَآءِ وَمِنْ شَرِّ مَا یَعْرُجُ فِیْهَا، وَشَرِ مَا ذَرَأَ فِي الْأَرْضِ وَشَرِّ مَا یَخْرُجُ مِنْهَا، وَمِنْ فِتَنِ اللَّیْلِ وَالنَّهَارِ وَمِنْ طَوَارِقِ اللَّیْلِ وَالنَّهَارِ إِلَّا طَارِقًا یَطْرُقُ بِخَیْرٍ یَارَحْمٰن

উচ্চারণ: আউযু বিওয়াজহিল্লাহিল করীম, ওয়া বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাহ, আল্লাতী লা ইউজাউইযুহুন্না বাররুন ওয়ালা ফাজিরুন। মিন শাররি মা ইয়ানঝিলু মিনাসসামাই, ওয়া মিন শাররি মা ইয়াআরুজু ফীহা, ওয়া শাররি মা যারা'আ ফিল আরদ্বি, ওয়া শাররি মা ইয়াখরুজু মিনহা, ওয়া মিন ফিতানিল লাইলি ওয়ান্নাহারি, ওয়া মিন ত্বওয়ারিকিল লাইলি ওয়ান্নাহারি, ইল্লা ত্বরিক্বান ইয়াতরুকু বিখাইরি, ইয়া রাহমানু।

অর্থ: আমি আশ্রয় নিচ্ছি সম্মানিত প্রভূর , আর তার পরিপূর্ণ বাণীর, যা কোনো নেককার বা পাপী অতিক্রম করতে পারে না। তার অনিষ্ট থেকে যা আকাশ থেকে নেমে আসে ও আকাশে উঠে যায়, যা পৃথিবীতে সৃষ্টি হয়েছে, পৃথিবী থেকে বের হয়, রাত ও দিনের ফিতনা থেকে, আর রাত-দিনের হঠাৎ বিপদ থেকে, তবে সে বিপদ নয়, যা কল্যাণ নিয়ে আসে, হে দয়াময় আল্লাহ।

পদ্ধতি

এই পাঁচটি আমল করে দু’হাতে ফুঁ দিয়ে সারা শরীরে হাত বুলিয়ে নিতে হবে। ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তাআলা সকল প্রকার অনিষ্টতা থেকে হেফাজতে রাখবেন।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, আমাদের এই বিশ্বাস দৃঢ় রাখতে হবে যে, উপকার ও ক্ষতির মালিক একমাত্র আল্লাহ। তার অনুমতি ছাড়া কেউ তোমার কোনো ক্ষতিও করতে পারবে না।

এই বিশ্বাস অনেককে অনেক ক্ষতি থেকে দূরে রাখে। এই জন্যেই হয়তো বলা হয় বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর।

লেখক: উসতায, জামি’আ ইসলামিয়া দারুল উলূম, ঘাটারচর, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার