Logo
Logo
×

ইসলাম

ইরানের যে ৭ মসজিদ আপনাকে মুগ্ধ করবে

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৫, ০১:০২ পিএম

ইরানের যে ৭ মসজিদ আপনাকে মুগ্ধ করবে
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে উঠেছে অসাধারণ ও নয়নাভিরাম অসংখ্য মসজিদ। স্থাপত্যশৈলী, অনন্য নির্মাণ কাঠামোর কারণে মসজিদগুলোর খ্যাতি রয়েছে বিশ্বজুড়ে। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে অবস্থিত এমন মনোরম ও নয়নাভিরাম সাতটি মসজিদের সংক্ষিপ্ত বিবরণ এখানে তুলে ধরা হলো—

নাসির আল-মুলক মসজিদ, শিরাজ

‘সুন্দর মসজিদ’ বা ‘নয়নাভিরাম মসজিদ’ বললেই একজন ভ্রমণপিপাসুর কাছে যে চিত্র প্রথমেই ভেসে উঠে তেমন একটি মসজিদ হলো ইরানের নাসির আল-মুলক মসজিদ।

সবথেকে বেশি ছবি তোলা মসজিদগুলোর একটি দক্ষিণ ইরানের এই মসজিদটি। মসজিদটি সুদৃশ্য আয়না, কারুকাজ, নকশা, স্তম্ভ ও বহুবর্ণ রঙিন টাইলস দিয়ে অলংকৃত।

মসজিদটির নামাজের জায়গায় সুবিশাল কাঁচের জানালা রয়েছে। জানালাগুলা রঙিন আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে অপরূপ দৃশ্য ধারণ করে। এই দৃশ্য ফ্রেমে বন্দি করতে চাইলে সূর্য ওঠার পরপরই সেখানে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

জামে মসজিদ, ইয়াজদ

জামে মসজিদ, ইয়াজদ। দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদটি ইয়াজদ শহরের ওপর মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। প্রাচীন এই মসজিদটি ইউনেস্কো তালিকাভুক্ত। এর অলংকৃত প্রবেশদ্বার ইরানের অন্যতম উঁচু প্রবেশদ্বারের অন্তর্ভুক্ত।

এখানে ‘ফায়েন্স’ নামক টাইল ব্যবহার করা হয়েছে, যা বিভিন্ন রঙিন টুকরো একত্র করে মোজাইক আকারে তৈরি করা হয়। ইরানে ‘জামে মসজিদ’ বলতে শুক্রবারের সমষ্টিগত নামাজের জন্য ব্যবহৃত বৃহৎ মসজিদকে বোঝানো হয়। অন্যান্য মুসলিম দেশেও এই অর্থে শব্দটি ব্যবহৃত হয়, তবে এ রূপার্থে শুধু ইরানেই ব্যবহার হয়।

নীল মসজিদ (ব্লু মসজিদ), তাবরিজ

বিশ্বের চারটি প্রসিদ্ধ ‘নীল মসজিদ’-এর একটি তাবরিজের নীল মসজিদ (ব্লু মসজিদ)। ইরানি-ইসলামি স্থাপত্যশৈলীর এক অনন্য নিদর্শন এই মসজিদ। 
প্রায় ৬০০ বছরের ইতিহাসসমৃদ্ধ এই মসজিদটি চোখধাঁধানো টাইলসের কারুকাজের জন্য খ্যাতি অর্জন করেছে। তবে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি দর্শনার্থীদের হৃদয় ছুঁয়ে যায় তা হলো এর মায়াময় আকাশি নীল রং, যা এক অনুপম আত্মিক আনন্দে ভরিয়ে তোলে।

নীল টাইলস ও ইটের বিরল সংমিশ্রণ, সোনালি নকশা এবং স্থাপত্য ও নকশার জাদু এই মসজিদকে এক বাস্তব মোহনায় পরিণত করেছে। নয়নাভিরাম এই মসজিদে রয়েছে দুটি বৃহৎ গম্বুজ এবং আরও সাতটি ছোট গম্বুজ, যা এর সৌন্দর্য আরও বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।

১৪৬৫ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত এই মসজিদ ইট-কাঠামো ও বিশালতায় অনন্য। ১৭২৭ সালের ভূমিকম্পে কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে ১৯৭৩ সালে তা পুনর্নির্মিত হয়।

শেখ লুৎফুল্লাহ মসজিদ, ইসফাহান

১৭শ শতকের এই মসজিদটি ইরানি নকশার এক অনন্য নিদর্শন। এই মসজিদের গম্বুজের অবস্থান কেন্দ্রবিন্দু থেকে কিছুটা দূরে। মসজিদটির কোনো মিনার নেই। এটি মসজিদকে অনন্য এক বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করেছে।

মসজিদের ক্রিম-হলুদ রঙের টাইলস সূর্য আলোয় বদলে গিয়ে কখনো গোলাপি আভা নেয়। গম্বুজের ভেতরে বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ রঙিন টাইলস আরবেস্ক ডিজাইনে গঠিত।

এর মিহরাব ইরানের সেরা মিহরাবগুলোর একটি, যেখানে স্থপতির নাম ও হিজরি ১০২৮ সালের তারিখ খোদাই করা আছে।

গোহরশাদ মসজিদ, মাশহাদ

১৫শ শতকে নির্মিত এই মসজিদটি ইট ও প্লাস্টারের তৈরি এবং এখন ইমাম রেজা (আ.)-এর মাজার চত্বরে একটি নামাজকক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
১৪১৮ সালে শাহরুখের স্ত্রী রানী গোহরশাদের আদেশে এটি নির্মাণ শুরু হয় এবং প্রায় ১২ বছর ধরে ইরানের শিরাজ ও ইসফাহানের কারিগরদের নিয়ে তৈরি হয়। মসজিদের প্রাঙ্গণে দাঁড়ালে এর উজ্জ্বল রঙ ও মিনারগুলোর সৌন্দর্য সহজেই চোখে পড়ে।

আগা বোযোরগ মসজিদ, কাশান

১৯ শতকে কাশানের মরূদ্যান শহরে নির্মিত এই মসজিদটি সুসামঞ্জস্য গঠন এবং অলংকৃত প্লাস্টার, কাঠ ও আয়নাকাজের জন্য বিখ্যাত।
মসজিদটিতে বড় বড় নামাজকক্ষ রয়েছে, খিলানবিশিষ্ট বারান্দা রয়েছে, মিনার, বিশাল বায়ু টাওয়ার (বাদগির) ও একটি সাধারণ গম্বুজ আছে। ইটের দেয়াল ও খিলানগুলো কোরআনিক আয়াত ও মোজাইক দ্বারা অলংকৃত।

বলা হয়ে থাকে, এটি শিয়া দার্শনিক ও আলেম মোল্লা মুহাম্মদ মাহদি নারাকি (১৭১৫–১৭৯৫)-এর নামে নামকরণ করা হয়, যিনি ‘আগা বোযোরগ’ নামে পরিচিত ছিলেন।

ওকিল মসজিদ, শিরাজ

১৮ শতকের একটি বড় স্থাপত্য প্রকল্পের অংশ এই মসজিদ। এর সঙ্গে একই নামের বাজার ও স্নানাগার রয়েছে। মসজিদটি ঐতিহ্যবাহী বাজারের সঙ্গে সংযুক্ত।

জান্দ রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা করিম খান জান্দ (১৭৫১–১৭৭৯) এই কমপ্লেক্স নির্মাণের নির্দেশ দেন। মসজিদের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হলো নামাজকক্ষে তির্যক খাঁজকাটা স্তম্ভের জঙ্গল। 

সূত্র : তেহরান টাইমস

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার