যুক্তরাজ্যে অভিবাসীর সংখ্যা কমেছে, বাড়ছে নৌকায় আসা শরণার্থীর ঢল
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:২৩ এএম
যুক্তরাজ্যে গত এক বছরে অভিবাসীর সংখ্যা কমে প্রাক-কোভিড বা করোনা পূর্ববর্তী সময়ের কাছাকাছি চলে এসেছে। সাম্প্রতিক সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত বছরের তুলনায় নিট মাইগ্রেশন বা অভিবাসীর সংখ্যা ৬৯ শতাংশ কমে ২ লাখ ৪ হাজারে দাঁড়িয়েছে। তবে ছোট নৌকায় বা স্মল বোটে করে চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের ঘটনা থামছে না, বরং চলতি বছরে তা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
যুক্তরাজ্যের অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকস (ওএনএস)-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত দেশটিতে আগমন বা ইমিগ্রেশন কমেছে ৩১ শতাংশ, যার মোট সংখ্যা প্রায় ৮ লাখ ৯৮ হাজার। অন্যদিকে, দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া বা এমিগ্রেশনের হার ৭ শতাংশ বেড়ে প্রায় ৬ লাখ ৯৩ হাজারে পৌঁছেছে। সব মিলিয়ে বৈধ পথে আসা মানুষের সংখ্যা কমলেও অবৈধ বা অনিয়মিত পথে প্রবেশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছোট নৌকায় করে ৩৯ হাজারের বেশি মানুষ যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছে, যা গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে বেশি। একই সময়ে দেশটিতে রাজনৈতিক আশ্রয় বা অ্যাসাইলাম আবেদনের সংখ্যাও বেড়েছে ১৩ শতাংশ, যার মোট সংখ্যা ১ লাখ ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। তবে সরকার অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে জোর দিচ্ছে এবং গত এক বছরে ৩৬ হাজারের বেশি মানুষকে নিজ দেশে ফেরত বা ডিপোর্ট করা হয়েছে।
ভিসার ক্ষেত্রে দেখা গেছে, কাজের উদ্দেশ্যে আসা মানুষের সংখ্যা বা ওয়ার্ক ভিসা এবং স্টুডেন্ট ভিসার সংখ্যা কমেছে। সরকার বৈধ পথে অভিবাসন কঠোর করার পাশাপাশি অবৈধ পথে আসা ঠেকাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবুও ফ্রান্স থেকে চ্যানেল পাড়ি দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যুক্তরাজ্যে আসার প্রবণতা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়ে এবং নতুন ইমিগ্রেশন নীতির ফলে বৈধ পথে আসা কিছুটা কঠিন হয়েছে। তবে বিশ্বব্যাপী অস্থিরতা ও সংঘাতের কারণে আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। যুক্তরাজ্য সরকার জানিয়েছে, তারা সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার এবং অবৈধ মানব পাচার রোধে কাজ করে যাচ্ছে।