জাপানের পর ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে মিয়ানমারে। মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় রাত ১টা ২১ মিনিটে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়। ভারতের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি (এনসিএস) জানিয়েছে, ভূকম্পনটির মাত্রা ছিল ৩.৭।
এর একদিন আগে, সোমবার ৩.৫ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হানে মিয়ানমারে। ওই ভূমিকম্পটির গভীরতা ছিল মাত্র ১০ কিলোমিটার। এরপরই আফটারশকের ঝুঁকি ছিল। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতের বার্তা সংস্থা এএনআই।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অগভীর ভূমিকম্প সাধারণত বেশি ভয়াবহ হতে পারে, কারণ ভূ–কম্পন তরঙ্গের পৃষ্ঠে পৌঁছাতে কম সময় লাগে এবং এতে কম্পনের তীব্রতা বেড়ে যায়। ফলে ভবন, অবকাঠামো ও মানুষের ওপর ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা বাড়ে।
ভূমিকম্প ও সুনামির ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে মিয়ানমার অন্যতম। দেশটি চারটি সক্রিয় টেকটোনিক প্লেট—ভারতীয়, ইউরেশীয়, সুন্ডা ও বার্মা প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত হওয়ায় ভূমিকম্পের প্রবণতা বেশি। প্রায় ১৪০০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি ট্রান্সফর্ম ফল্ট রেখা অ্যান্ডামান স্প্রেডিং সেন্টার থেকে উত্তরের সংঘর্ষ অঞ্চলের দিকে বিস্তৃত হয়ে তৈরি করেছে সাগাইং ফল্ট।
এএনআই জানায়, এই সাগাইং ফল্টই মিয়ানমারের সাগাইং, মান্দালে, বাগো ও ইয়াঙ্গুন অঞ্চলের ভূমিকম্প ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে। এই চার অঞ্চলে মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৬ শতাংশ বসবাস করে। যদিও ইয়াঙ্গুন ফল্ট লাইনের থেকে তুলনামূলক দূরে, তবুও ঘনবসতির কারণে ঝুঁকি অনেক বেশি। ১৯০৩ সালে বাগোতে আঘাত হানা ৭.০ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প ইয়াঙ্গুনেও বড় ধরনের ক্ষতি করেছিল।
এর আগে চলতি বছরের মার্চে ৭.৭ এবং ৬.৪ মাত্রার দুটি ভয়াবহ ভূমিকম্পে মধ্য মিয়ানমারের বিশাল অঞ্চল বিধ্বস্ত হয়। মঙ্গলবারের ভূমিকম্পটির তীব্রতা কম হলেও ধারাবাহিক কম্পনের কারণে মিয়ানমারে জনমনে উদ্বেগ বাড়ছে বলে স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এদিকে সোমবার (৮ ডিসেম্বর) গভীর রাতে জাপানের পূর্ব আওমোরি উপকূলের কাছে ৭.৬ মাত্রা শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এদিন স্থানীয় সময় রাত প্রায় ১১টা ১৫ মিনিটে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের পর আওমোরি, ইওয়াতে ও হোক্কাইডোর উপকূলীয় এলাকায় সুনামি সতর্কতাও জারি করা হয় বলে জানায় জাপানের গণমাধ্যম। জাপানের আবহাওয়া সংস্থা (জেএমএ) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল প্রায় ৫০ কিলোমিটার গভীরে এবং এর মাত্রা ছিল আনুমানিক ৭.৬।