ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে বৈঠক করতে লন্ডনে জেলেনস্কি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:০১ এএম
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে মার্কিন প্রস্তাবটি না পড়ার বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিযোগের পর সোমবার (৮ ডিসেম্বর) ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে বৈঠক করতে লন্ডনে গেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি। খবর এএফপির।
যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে ইউক্রেনীয় ও মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে কয়েকদিনের আলোচনা শনিবার (৬ ডিসেম্বর) কোনো স্পষ্ট অগ্রগতি ছাড়াই শেষ হয়। এর পরপরই জেলেনস্কি আরও আলোচনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
এদিকে, ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টকে লন্ডনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী, জার্মান চ্যান্সেলর ও ফরাসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য স্বাগত জানানোর কথা রয়েছে।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপারও সোমবার ওয়াশিংটন সফরে যাবেন, যেখানে তিনি তার মার্কিন প্রতিপক্ষ মার্কো রুবিওর সঙ্গে দেখা করবেন।
লন্ডনের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, কুপারের সফরের মাধ্যমে ‘যুক্তরাজ্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে শান্তি চুক্তিতে পৌঁছানোর প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করবে।’
ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের মতে, আলোচনা চলাকালীন সময়েও মস্কো তার প্রতিবেশীর ওপর হামলা অব্যাহত রেখেছে। রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে সোমবার রাতভর হামলায় কমপক্ষে ৯ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি মায়ামিতে আলোচনার সময় মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ ও জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে ‘অত্যন্ত বাস্তবসম্মত এবং গঠনমূলক’ আলোচনায় তার আলোচকদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন।
জেলেনস্কি টেলিগ্রামে বলেছেন, পক্ষগুলো ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার পরবর্তী পদক্ষেপ ও ফরম্যাটে’ একমত হয়েছে। প্রকৃত শান্তি আনার জন্য ইউক্রেন মার্কিন পক্ষের সঙ্গে সততার সাথে কাজ চালিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তবে রোববার (৭ ডিসেম্বর) প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের কাছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করে বলেন, আমি কিছুটা হতাশ যে জেলেনস্কি এখনো প্রস্তাবটি পড়েননি, কয়েক ঘণ্টা আগেও তিনি এটি পড়েননি।
উইটকফ ও কুশনার গত সপ্তাহে ক্রেমলিনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে দেখা করেছিলেন, যেখানে মস্কো মার্কিন প্রস্তাবের কিছু অংশ প্রত্যাখ্যান করেছিল।
সোমবারের আলোচনার আগে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ রাশিয়ার সমালোচনা করেন। ম্যাক্রোঁ এক্সে লিখেছেন, ‘আমরা আমেরিকানদের সঙ্গে ইউক্রেনকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রদানের জন্য এই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব, যা ছাড়া কোনো শক্তিশালী ও স্থায়ী শান্তি সম্ভব হবে না।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমাদের রাশিয়াকে শান্তি বেছে নিতে বাধ্য করার জন্য চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখতে হবে।’
প্রায় চার বছরের যুদ্ধের অবসান ঘটানোর জন্য ওয়াশিংটনের প্রাথমিক পরিকল্পনায় ইউক্রেনকে এমন কিছু ভূখণ্ড আত্মসমর্পণ করতে হতো যা রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে জয় করতে পারেনি। এর বিনিময়ে কিয়েভকে ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতি দেওয়া ব্যর্থ হয়।
ইউক্রেন যে ধরনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেতে পারে তার প্রকৃতি এখনও অনিশ্চিত। ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরে আসার পর ইউক্রেনের প্রতি তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ও মার্কিন সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞ না হওয়ায় জেলেনস্কিকে তিরস্কার করেছেন।
তবে ট্রাম্প নিজেও হতাশ হয়েছেন যে, পুতিনকে যুদ্ধ শেষ করতে রাজি করানোর তার প্রচেষ্টা (যেমন আলাস্কায় একটি শীর্ষ সম্মেলন) ব্যর্থ হয়েছে। তিনি সম্প্রতি রাশিয়ার তেল সংস্থাগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছেন।