যে দেশে পুরুষ সংকটে ভাড়াটে স্বামীর চাহিদা তুঙ্গে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৫১ পিএম
ইউরোপের দেশ লাটভিয়ায় ভয়াবহ লিঙ্গ ভারসাম্যহীনতার কারণে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এক অদ্ভুত কিন্তু জনপ্রিয় পরিষেবা‘অস্থায়ী স্বামী ভাড়া’। জনসংখ্যায় নারীর আধিক্য এতটাই বেড়ে গেছে যে বিবাহযোগ্য অনেক নারী পাত্র না পেয়ে বিপাকে পড়ছেন। সেই শূন্যস্থান পূরণ করতেই ই-কমার্স ও স্থানীয় সার্ভিস কোম্পানিগুলো চালু করেছে ‘হ্যান্ডি হাজব্যান্ড’ বা ভাড়াটে স্বামী পরিষেবা।
নারী-পুরুষ অনুপাতে ভয়াবহ বৈষম্য। ‘দ্য নিউ ইয়র্ক পোস্ট’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লাটভিয়ায় নারী-পুরুষের অনুপাত ইউরোপের গড়ের প্রায় তিন গুণ। ৬৫ বছরের বেশি বয়সী নারীর সংখ্যা পুরুষদের তুলনায় প্রায় তিন গুণ বেশি।
ব্যবসা, শিক্ষা, চাকরি সব খাতেই নারীরা সংখ্যাগুরু হওয়ায় ব্যক্তিগত জীবনেও পুরুষের অভাব প্রকট হয়ে উঠেছে। অনেক নারী বিদেশে গিয়েও সঙ্গী খোঁজার চেষ্টা করছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
পুরুষের ঘাটতি সামাল দিতে নারীরা ঝুঁকছেন ঘণ্টা বা দিনের ভিত্তিতে ভাড়াটে কর্মী নেওয়ার দিকে। এই অস্থায়ী ‘স্বামীরা’ মূলত বাড়ির নানান কাজ করে দেন।
তাদের কাজের মধ্যে রয়েছে,কাঠের কাজ,ঘর মেরামত,রং করা,বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম স্থাপন, পোষ্য সামলানো,পর্দা লাগানো,দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় ছোটখাটো কাজ।
ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলো এখন “Rent My Handy Husband” নামের এই সার্ভিসে কর্মী নিয়োগ দিচ্ছে। জনপ্রিয়তার কারণে ঘণ্টা চুক্তির পাশাপাশি এখন এক ঘণ্টার ‘স্বামী ভাড়া’ সুযোগও দারুণ জনপ্রিয় হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে লাটভিয়ায় পুরুষদের কম আয়ুষ্কালের মূল কয়েকটি কারণ হলো, অতিরিক্ত ধূমপান (পুরুষ ৩১%, নারী ১০%) স্থূলতা,অনিয়মিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস। ফলে দেশে পুরুষের সংখ্যা দ্রুত কমছে এবং প্রতি বছর নারী-পুরুষের ব্যবধান আরও বাড়ছে।
শুধু লাটভিয়া নয় ইউরোপের আরও কয়েকটি দেশে ‘Rent a Husband’ ধরনের পরিষেবা চালু হয়েছে। আধুনিক সমাজে একাকিত্বের বৃদ্ধি, কর্মব্যস্ততা এবং লিঙ্গ অনুপাতের বৈষম্য এই নতুন ব্যবসাকে আরও জনপ্রিয় করে তুলছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লাটভিয়ার পরিস্থিতি এখন শুধু সামাজিক সমস্যা নয়, বরং দ্রুত বদলে যাওয়া জনসংখ্যাগত সংকটের বাস্তব প্রতিচ্ছবি। এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে দেশটি আরও বড় সামাজিক-অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে।