গ্রিসের উপকূলে ভাসমান নৌকায় মিলল ১৭ অভিবাসীর মরদেহ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:১৬ পিএম
ইউরোপে পৌঁছানোর পথে ভূমধ্যসাগরের বিপজ্জনক জলপথ পাড়ি দিতে গিয়ে আরও এক মর্মান্তিক ট্র্যাজেডির শিকার হলেন অভিবাসনপ্রত্যাশীরা। গ্রিসের ক্রিট দ্বীপের কাছাকাছি একটি আধাভাসা নৌকা থেকে কমপক্ষে ১৭ জন অভিবাসী ও আশ্রয়প্রার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে দেশটির কোস্টগার্ড। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) ক্রিটের দক্ষিণ পশ্চিমে প্রায় ২৬ নটিক্যাল মাইল (৪৮ কিলোমিটার) দূরে এই মরদেহগুলো পাওয়া যায়। খবর আল জাজিরার।
গ্রিস কোস্টগার্ডের একজন মুখপাত্র এএফপিকে জানিয়েছেন, মৃতদের সবাই পুরুষ এবং তারা তরুণ ছিলেন। নৌকাটির দুই পাশ বসে যাওয়ায় যাত্রীদের খুব কম জায়গায় গাদাগাদি করে থাকতে হয়েছিল।
এই ঘটনায় দুইজনকে জীবিত পাওয়া গেলেও তারা গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। উদ্ধার হওয়া দুই জীবিত ব্যক্তি কোস্টগার্ডকে জানিয়েছেন, খারাপ আবহাওয়ার কারণে নৌকাটি ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছিল। তাদের কাছে পর্যাপ্ত খাবার, পানি বা ঠান্ডা থেকে রক্ষা পাওয়ার মতো কোনও ব্যবস্থা ছিল না। এমনকি উদ্ধার হওয়ার সময়ও নৌকাটি ভেতরে পানি ঢুকে ডুবে যাচ্ছিল। মৃতদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে, যা নিশ্চিত করবে পানিশূন্যতা বা অন্য কোনো কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে কি না।
তুরস্কের একটি কার্গো জাহাজ প্রথম এই নৌকাটিকে দেখতে পেয়ে গ্রিক কর্তৃপক্ষকে খবর দেয়। এরপর গ্রিক কোস্টগার্ড দ্রুত দুটি জাহাজ পাঠায়। উদ্ধার তৎপরতায় ইইউ সীমান্তরক্ষী সংস্থা ফ্রন্টেক্সও যোগ দেয়।
আল জাজিরা জানিয়েছে, গত এক বছরে অভিবাসীরা লিবিয়া থেকে ইউরোপে পৌঁছানোর পথ হিসেবে নতুন করে ক্রিট দ্বীপকে বেছে নিয়েছেন। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ১৬ হাজার ৭৭০ জনের বেশি আশ্রয়প্রার্থী ক্রিটে পৌঁছেছেন।
এমন পরিস্থিতিতে গ্রিসের রক্ষণশীল সরকার গত জুলাই মাসে অভিবাসীদের আশ্রয় আবেদনের শুনানি স্থগিত করে দিয়েছে। মূলত, ২০১১ সালে মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই লিবিয়ায় যে বিশৃঙ্খলা ও অস্থিরতা চলছে, তার ফলেই এই বিপজ্জনক সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পাড়ি জমানোর প্রবণতা বেড়েছে।