ব্রিটেনে অনাগত সন্তানের মেধা ও উচ্চতা বাছাই করছেন ধনী দম্পতিরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:২৬ এএম
যুক্তরাজ্যের ধনী দম্পতিরা এখন আইনের ফাঁক গলে তাদের অনাগত সন্তানের বুদ্ধিমত্তা ও উচ্চতা আগে থেকেই নির্ধারণ করার চেষ্টা করছেন। দেশটির আইভিএফ ক্লিনিকগুলোতে এমন বাছাই নিষিদ্ধ হলেও ডাটা প্রটেকশন আইনের সুযোগ নিয়ে তারা ভ্রূণের ডিএনএ তথ্য বিদেশে পাঠাচ্ছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কোম্পানি হাজার হাজার ডলারের বিনিময়ে এই তথ্যের বিশ্লেষণ করে দিচ্ছে যা নিয়ে ব্রিটেনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞান ও নীতি-নৈতিকতার প্রশ্নে বিষয়টি নিয়ে এখন চরম বিতর্ক চলছে।
লন্ডনের এভিনিউস ফার্টিলিটি ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ ডা. ক্রিস্টিনা হিকম্যান জানিয়েছেন, হেরা-সাইট নামের একটি মার্কিন কোম্পানি প্রায় ৫০ হাজার ডলার বা ৩৭ হাজার পাউন্ডের বিনিময়ে ভ্রূণের গুণাগুণ বিশ্লেষণ করছে। যুক্তরাজ্যের দম্পতিরা তাদের ভ্রূণের কাঁচা জিনেটিক তথ্য চেয়ে নিয়ে সেই কোম্পানির কাছে পাঠাচ্ছেন। এতে করে তারা জানতে পারছেন ল্যাবে থাকা কোন ভ্রূণটি ভবিষ্যতে বেশি বুদ্ধিমান, লম্বা কিংবা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২৯ বছর বয়সী এক নারী জানিয়েছেন, তিনি এবং তার স্বামী ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এড়াতে এবং উচ্চ বুদ্ধিমত্তার সন্তান পেতেই এই পদ্ধতি বেছে নিয়েছেন। তার মতে, সন্তানকে একটু ভালো জীবন দিতে মানুষ অনেক টাকা খরচ করে, আর এই খরচ প্রাইভেট স্কুলের বেতনের চেয়ে অনেক কম। তিনি আশা করছেন, তার সংরক্ষিত ১৬টি ভ্রূণের মধ্যে অন্তত ছয়টি চমৎকার সব গুণের অধিকারী হবে।
ব্রিটেনের হিউম্যান ফার্টিলাইজেশন অ্যান্ড এমব্রায়োলজি অথরিটির প্রধান পিটার থম্পসন বলেছেন, যুক্তরাজ্যের কোনো ক্লিনিকের জন্য এভাবে ভ্রূণ বাছাই করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং লাইসেন্স বাতিলযোগ্য অপরাধ। তবে দম্পতিরা যদি ব্যক্তিগতভাবে বিদেশের কোনো সংস্থার সাহায্য নেন, তবে তাদের আটকানোর কোনো আইন বর্তমানে নেই। এদিকে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলছেন, এই পদ্ধতি এখনো পুরোপুরি প্রমাণিত নয় এবং এটি সমাজে ধনী-গরিবের বৈষম্য আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।