যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-১বি ভিসা দিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় হবে কঠোর যাচাই
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৪১ এএম
যুক্তরাষ্ট্র দক্ষ বিদেশি পেশাজীবীদের জন্য ব্যবহৃত এইচ-১বি ভিসার যাচাই–বাছাই আরও কঠোর করছে। এখন থেকে আবেদনকারী ও তাদের নির্ভরশীলদের সব সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল প্রকাশ্য রাখতে হবে এবং আবেদনকারীর কর্ম-ইতিহাস বিশেষভাবে যাচাই করা হবে, বিশেষ করে যারা ‘মিসইনফরমেশন’ ও ‘ডিসইনফরমেশন’ সংক্রান্ত কাজে জড়িত।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগ জানায়, প্রোফাইলগুলো প্রকাশ্য রাখার উদ্দেশ্য হলো নিশ্চিত করা যে আবেদনকারীরা ‘আমেরিকানদের ক্ষতি করা বা জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করার উদ্দেশ্য রাখেন না’। এর আগে জুলাই মাসে শিক্ষার্থী ভিসা আবেদনকারীদের জন্য এমন নিয়ম করা হয়েছিল।
এইচ-১বি ভিসার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো বিশেষায়িত জ্ঞানসম্পন্ন বিদেশি কর্মী নিয়োগ দিতে পারে বিশেষত প্রযুক্তি, চিকিৎসা, প্রকৌশল, অর্থনীতি এবং একাডেমিক খাতে। যদিও এটি সাময়িক ভিসা হিসেবে পরিচিত, বাস্তবে এটি অনেক সময় যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের পথও তৈরি করে।
কী ধরনের যাচাই হবে?
রয়টার্সের হাতে পাওয়া একটি অভ্যন্তরীণ নথি অনুযায়ী, এখন থেকে কনস্যুলার কর্মকর্তারা আবেদনকারীর লিংকডইনসহ কর্ম-ইতিহাস খতিয়ে দেখবেন, বিশেষ করে আবেদনকারীরা ভুল তথ্য, বিভ্রান্তিকর তথ্য বিষয়ক কোনো কিছুতে জড়িত কিনা এবং তারা মার্কিন স্বার্থের বিরুদ্ধে কিছু করেছেন বা অনলাইন নিরাপত্তা হুমকি হতে পারেন কিনা।
অথবা যে কোনো সোশ্যাল মিডিয়া বা আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে ‘সুরক্ষিত অভিব্যক্তি’ দমনমূলক কার্যক্রমে এ নিয়ম পরিবারের সদস্য ও যারা ভিসা নবায়ন করছেন তাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
নথিতে বলা হয়েছে, ‘যদি এমন প্রমাণ পাওয়া যায় যে, কোনো আবেদনকারী যুক্তরাষ্ট্রে সংরক্ষিত মতপ্রকাশ দমনে ভূমিকা রেখেছেন, তবে তাঁকে অযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।’
এ নীতি যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বের অবস্থান থেকে একটি পরিবর্তন নির্দেশ করে। একসময় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ও ইউএসএআইডি বিদেশে ফ্যাক্ট-চেকিং ও ভুয়া তথ্য প্রতিরোধে প্রকল্পে অর্থায়ন করত।
ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন অবস্থান
জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর থেকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার বিবেচনায় ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর নিয়ন্ত্রণ’ কমানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন। ‘ফেডারেল সেন্সরশিপ’ নিষিদ্ধ করতে তিনি দায়িত্ব নেয়ার পরপরই একটি নির্বাহী আদেশে সই করেন।
মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করে, বিদেশি যেসব সরকারি কর্মকর্তা ‘মতপ্রকাশ দমনে’ কাজ করেছেন বা মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে চাপ দিয়েছেন, তাঁদের দেশটিতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হতে পারে।
ট্রাম্পের সমালোচনার বড় অংশই ইউরোপকে ঘিরে, যেখানে ঘৃণামূলক বক্তব্যসহ অনলাইন কন্টেন্ট নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় কঠোর। তবে শিশুদের জন্য (১৬ বছরের নিচে) সোশ্যাল মিডিয়া নিষিদ্ধ করার মতো পদক্ষেপ নেওয়া অস্ট্রেলিয়ার মতো মিত্র দেশের ক্ষেত্রে প্রশাসন কী নীতি নেবে তা এখনো পরিষ্কার নয়।