‘ইমরান খানের জীবিত থাকার কোনো প্রমাণ নেই’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:০৩ পিএম
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ছেলে কাসিম খান তার বাবার জেলজীবন নিয়ে কড়া অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, তার বাবা টানা ৮৪৫ দিন ধরে কারাগারে আছেন। গত ছয় সপ্তাহ ধরে তাকে একা একটি ‘ডেথ সেলে’ রাখা হয়েছে। কোনো পরিবার সদস্য তাকে দেখতে পারছেন না। এমনকি আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও জেল কর্তৃপক্ষ কাউকে সাক্ষাৎ করতে দিচ্ছে না।
কাসিম খানের দাবি, তার বাবার বোনদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, তিনি ও তার ভাইদের সঙ্গে ‘কোনো যোগাযোগ’ নেই এবং ‘জীবিত থাকারও কোনো প্রমাণ’ নেই। তিনি লেখেন, ‘এই পুরো অন্ধকার পরিস্থিতি কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নয়। এটি ইচ্ছাকৃতভাবে তার অবস্থা গোপন করার চেষ্টা।’ তিনি সতর্ক করেন, সরকার এবং ‘তার হ্যান্ডলারদের’ জবাবদিহি করতে হবে।
তিনি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কাছে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, পাকিস্তানের ‘সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতাকে’ যে ‘অমানবিক বিচ্ছিন্নতায়’ রাখা হয়েছে, তা বন্ধ করতে হবে এবং অবিলম্বে তার জীবিত থাকার প্রমাণ দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, পরিচিত কিছু সাংবাদিক দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, তাদের পাসপোর্ট ও সম্পদও আটকে দেওয়া হয়েছে। তার ভাষায়, ‘হিটলারের সময়ের কথা পড়েছি… পাকিস্তানে এখন একই ঘটনা ঘটছে।’
তিনি অভিযোগ করেন, শাহবাজ শরিফের সরকার ‘একেবারেই জনপ্রিয় নয়।’ তিনি বলেন, নির্বাচন হয়েছে ‘কারচুপির মাধ্যমে,’ আর সরকার দুর্বল ও দমনমূলক। তিনি মনে করেন, পশ্চিমা দেশগুলো পাকিস্তানের ‘প্রতারণা’ জানে, কিন্তু তারা পদক্ষেপ নেবে না।
এদিকে পিটিআই নেতারা, যেমন জুলফি বুখারি ও মেহর বানো কুরেশি, সরকারের কাছে খানের স্বাস্থ্যের বিষয়ে পরিষ্কার ও স্বচ্ছ বিবৃতি চান। তারা অবিলম্বে পরিবারকে সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানান।
তবে আদিয়ালা জেল কর্তৃপক্ষ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা বলেছে, সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো খবর ‘ভিত্তিহীন’। কর্তৃপক্ষ জানায়, ইমরান খান ‘পুরোপুরি সুস্থ’ আছেন এবং তাকে কোথাও সরানো হয়নি। তাদের দাবি, কোনো জরুরি চিকিৎসা বা বিপজ্জনক অবস্থা তৈরি হয়নি।
সাম্প্রতিক গুজব অনলাইনে আরও ছড়ায় যখন কয়েকটি বিদেশি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট দাবি করে যে ইমরান খান নাকি কারাগারে মারা গেছেন। তবে এসব দাবি কোনো নির্ভরযোগ্য সংস্থা নিশ্চিত করেনি।
গুজব আরও জোর পায় যখন খানের তিন বোন – নুরিন নিয়াজি, আলীমা খান ও ড. উজমা খান – অভিযোগ করেন, তারা শান্তিপূর্ণভাবে জেলের বাইরে অবস্থান করছিলেন, কিন্তু পুলিশ ‘নৃশংস ও পরিকল্পিত’ হামলা চালায়।
আদিয়ালা জেল পাঞ্জাব সরকারের অধীনে, যার নেতৃত্বে আছেন মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ। তিনি বলেন, খানের সাক্ষাৎ-সংক্রান্ত বিষয়ে তার ‘কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।’ অন্যদিকে ইমরান খান আগেই দাবি করেছিলেন, জেলের সব বিষয় একজন সেনা কর্নেল নিয়ন্ত্রণ করছেন।