মা-ছেলেরমতো সম্পর্কনিয়ে কুরুচিপূর্ণ রটনা, দুনিয়া ছাড়লেন ২ সহকর্মী
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৪৩ পিএম
অফিসে বিপরীত লিঙ্গের দুই সহকর্মীর মধ্যে ভালো একটা সম্পর্ক কিংবা একসঙ্গে চলাফেরা দেখলে অন্য সহকর্মীদের কুরুচিপূর্ণ রটনা, অশালীন মন্তব্য খুব সাধারণ ঘটনা আমাদের সমাজে। যেন অফিসে নারী-পুরুষের সম্পর্ক মানেই প্রেম কিংবা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক। সহকর্মীদের সংকীর্ণ চিন্তা ও কুরুচিপূর্ণ গল্প অনেক সময়ই এতটা সীমা ছাড়িয়ে যায় যে, অনেকের জীবনই হয়ে ওঠে দুর্বিষহ। এমন কারণে অনেক ক্ষেত্রে পেটের দায় ভুলে চাকরিও ছেড়ে দিতে বাধ্য হন অনেকে; অনেকের আবার সংসারও ভাঙে।
সহকর্মীদের এমনই মানসিক নিপীড়নের ঘটনা এবার প্রকাশ্যে এসেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশে; যার নির্মম শিকার হয়েছেন দুই সহকর্মী। সহকর্মীদের কটূক্তি ও সম্পর্ক নিয়ে দিনের পর দিন বাজে মন্তব্য সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যাই করে বসেছেন রাজ্যের বেতুল জেলার ওই দুই সরকারি কর্মচারী। খবর ইন্ডিয়া টুডের।
সম্প্রতি একটি কূপ থেকে দু’জনের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। মৃত ওই দুই সহকর্মীর নাম রজনী ডুন্ডেলে ও মিঠুন। তারা দুজনেই স্থানীয় নগর পরিষদে কাজ করতেন।
৪৮ বছর বয়সী রজনী নগর পরিষদের ক্লার্ক পদে এবং ২৯ বছর বয়সী মিঠুন পানি সরবরাহ বিভাগে কর্মরত ছিলেন। বুধবার (২৬ নভেম্বর) তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে রজনীর বাড়ি থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করে পুলিশ।
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার রাতে দুজনের কেউ বাড়ি না ফিরলে পুলিশ তাদের খোঁজ শুরু করে। মিঠুনের কাছে থাকা মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তার শেষ অবস্থান চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। পুলিশ যখন বায়াওয়াড়ি এলাকায় পৌঁছায়, তখন সেখানে মাঠের কাছে তাদের স্যান্ডেল, একটি মোবাইল ফোন ও মোটরসাইকেল পড়ে থাকতে দেখে। পরে এসডিআরএফ দল পাশেই থাকা একটি কূপ থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে।
এদিকে রজনীর বাড়ি থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই সুইসাইড নোটে তিনি লিখে গেছেন— মিঠুনকে তিনি ‘ছেলের মতো’ মনে করতেন, কিন্তু অফিসে সহকর্মীদের অনবরত কটূক্তি এবং সম্পর্ক নিয়ে বাজে মন্তব্য তাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করেছিল। তিনি অভিযোগ করেছেন, ৪-৫ জন সহকর্মী কুরুচিপূর্ণ রটনা ছড়িয়ে তাকে হয়রানি করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, দুজন একই অফিসে কাজ করতেন এবং মিথ্যে সম্পর্কের গুঞ্জন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মানসিক চাপে ছিলেন। এসডিওপি সুনীল লতা জানান, রজনীর নোটে যাদের নাম এসেছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে। পাশাপাশি ঘটনাগুলোর ধারাবাহিকতা বোঝার জন্য দুজনের ফোনকলের বিস্তারিতও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, ৪৮ বছর বয়সী রজনী ছিলেন বিধবা, তার এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। সামনে তার ছেলের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল এবং ঘরে সেই মতো আয়োজনও চলছিল। আর ঠিক তখনই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল।