অভিবাসন নীতিতে আরও কঠোর হচ্ছে বৃটেন সরকার। দেশটিতে বৈধভাবে থাকার যোগ্যতার (আইএলআর) জন্য আগেকার মেয়াদকাল বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টি। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, অধিকাংশ অভিবাসীর জন্য আইএলআর অর্জনের সময়সীমা পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করা হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে এই সীমা ২০ বছর পর্যন্ত হতে পারে।

গত বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে বৃটেনের হোম সেক্রেটারি শাবানা মাহমুদ বলেছেন, ২০২১ সালের পর বৃটেনে আগত প্রায় ১৬ লাখ বৈধ অভিবাসীর ওপর নতুন নিয়ম প্রযোজ্য হবে। যারা ইতিমধ্যেই স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পেয়েছেন, তারা এ প্রস্তাবের বাইরে থাকবেন। মাহমুদ বলেন, বৃটেনের অংশ হয়ে ওঠা কোনো অধিকার নয়, এটি একটি সুযোগ- যা অর্জন করতে হয়।

যেসব পরিবর্তন আসতে পারে : বর্তমানে কর্মভিসা ও পরিবারভিত্তিক ভিসাধারীরা ৫ বছরে স্থায়ী হওয়ার যোগ্যতা পান। নতুন নিয়মে এটি ১০ বছর হবে। যারা গত ১২ মাসে কিছু সময়ের জন্য সরকারি সুবিধা নিয়েছেন, তাদের জন্য অপেক্ষার সময় ১৫ বছর করার প্রস্তাব রয়েছে। স্বাস্থ্য ও সামাজিক সেবা ভিসাধারীদেরও আগের ৫ বছরের বদলে ১৫ বছর অপেক্ষা করতে হতে পারে। যারা সম্পূর্ণ বেনিফিটনির্ভরশীল, তাদের জন্য সময়সীমা বেড়ে ২০ বছর যা ইউরোপে সবচেয়ে দীর্ঘ হতে পারে।

বৃটেন সরকারের হিসাব মতে, ২০২১ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত নিট অভিবাসনের মাধ্যমে দেশটির জনসংখ্যায় ২৬ লাখ মানুষ যোগ হয়েছে। ফলে ২০২৬ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ১৬ লাখ মানুষ স্থায়ী হওয়ার যোগ্য হয়ে উঠতে পারে। যা বর্তমান কাঠামো পুনর্বিবেচনার কারণ। এ ছাড়া সরকার আর্নড সেটেলমেন্ট নামে নতুন মানদণ্ডভিত্তিক ব্যবস্থা চালুর পরিকল্পনাও করছে। এতে এ-লেভেল সমমানের ইংরেজি দক্ষতা, অপরাধমুক্ত রেকর্ড, টানা তিন বছর ১২ হাজার ৫৭০ পাউন্ডের বেশি বার্ষিক আয়ের শর্ত পূরণ করতে হবে। যাদের বিশেষ অবদান রয়েছে, তাদের জন্য দ্রুত পথ খোলা থাকবে।

যাদের জন্য আগের নিয়ম বহাল থাকবে : এনএইচএসে কর্মরত চিকিৎসক ও নার্সরা ৫ বছরেই স্থায়ী হওয়ার সুযোগ পাবেন। উচ্চ আয়ের আবেদনকারী ও আন্তর্জাতিক উদ্যোক্তাদের জন্য ৩ বছরে দ্রুত সেটেলমেন্টের পথ থাকবে। পারিবারিক সহিংসতার শিকার, স্বামী/স্ত্রী হারানো আবেদনকারী এবং পুনর্বাসিত শরণার্থীদের দ্রুত রুট অপরিবর্তিত থাকবে।

পরিবারভিত্তিক সেটেলমেন্টে পরিবর্তন : মূল আবেদনকারী যোগ্য হলেও তার পরিবারের সদস্যরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেটেলমেন্ট পাবেন না। ১৮ বছরের নিচের সন্তানরা বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগ দিতে পারবে। বয়স্ক নির্ভরশীলদের জন্য নতুন শর্ত প্রযোজ্য হবে। সরকার ২০২৬ সালের বসন্ত থেকে নতুন নিয়ম কার্যকর করতে চায়। চলমান পরামর্শ গ্রহণ প্রক্রিয়া ১২ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। এর আগে সরকার আশ্রয় ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে স্থায়ী শরণার্থী মর্যাদা বাতিল করে ৩০ মাস পরপর পর্যালোচনাযোগ্য অস্থায়ী মর্যাদা চালুর পরিকল্পনা।