Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

‘আপনি আর আসবেন না, আপনি এলেই তারা আমাকে ধর্ষণ করে’

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৪৮ এএম

‘আপনি আর আসবেন না, আপনি এলেই তারা আমাকে ধর্ষণ করে’

ইসরাইলের কারাগারে আটক এক ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বন্দিকে ভয়াবহ নির্যাতন, ধর্ষণ এবং শারীরিক নিপীড়নের অভিযোগ তুলেছেন তার আইনজীবী বেন মারমারেলি। কানাডাভিত্তিক সাংবাদিক সামিরা মোহিয়েদ্দিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, কারাগারে তার ক্লায়েন্টকে পদ্ধতিগতভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে এবং তিনি যতবার সাক্ষাতে যান, নির্যাতনের মাত্রা তত বাড়ে।

মারমারেলি বলেন, এমন অবস্থা হয়েছে যে ক্লায়েন্ট আমাকে বলেছেন, ‘আপনি আর আসবেন না, আপনি এলেই তারা আমাকে ধর্ষণ করে।’ 

তার দাবি অনুযায়ী, যৌন সহিংসতা এই নির্যাতনের একটি অংশ কেবল। এ ছাড়াও আরও নানা নির্যাতন করা হয়। 

আইনজীবী জানান, তার ক্লায়েন্টের শরীরে জুতার ছাপ, সারা গায়ে নীলচে দাগ এবং হাতকড়ার কাছে গভীর ক্ষতের চিহ্ন তিনি নিজ চোখে দেখেছেন। তার বক্তব্য, যৌন সহিংসতা প্রতি কয়েক সপ্তাহে একবার ঘটে এবং তা প্রায়ই আইনজীবীর সাক্ষাতের পরপরই হয়।

তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বন্দিরা সাধারণত বছরের পর বছর কোনো সাক্ষাৎ পান না, আইনজীবীর সাক্ষাতাই তাদের একমাত্র বাইরের কারও সঙ্গে তার যোগাযোগ।

আরও পড়ুন
মারমারেলি বিশেষভাবে দক্ষিণ ইসরাইলের কুখ্যাত সামরিক আটক কেন্দ্র সদে তেইমান-এর কথা উল্লেখ করেন। তার দাবি, এই কেন্দ্রে পদ্ধতিগতভাবে নির্যাতন ও যৌন সহিংসতা চালানো হয় এবং তা ২৪ ঘণ্টা নজরদারি ক্যামেরায় রেকর্ডও হচ্ছে।

তিনি বলেন, সদে তেইমানে সব বন্দিকেই ধর্ষণ করা হয়। সবার ওপর নির্যাতন চলে। যদি তারা সত্যিই এসব বন্ধ করতে চাইতেন, ফুটেজ থেকেই বহু বছর আগে ব্যবস্থা নেওয়া যেত। তারা তা করেনি।

২০২৪ সালের আগস্টে ফাঁস হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সৈন্যরা মাটিতে পড়ে থাকা এক ফিলিস্তিনি বন্দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে এবং পরে দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণকারী ঢাল দিয়ে ঘিরে মারধর করছে। ওই বন্দিকে পরে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়। 

ওই ভিডিওটি প্রকাশের পর মানবাধিকার সংগঠনগুলো ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করে এবং কেন্দ্রে আটক রাখা ফিলিস্তিনিদের উপর নির্যাতন ও অমানবিক ব্যবহারের তদন্তের দাবি জানায়।

প্রকাশিত ফুটেজ বিতর্ক তীব্র হলে ৩১ অক্টোবর ইসরাইলি সামরিক প্রসিকিউটর ইফাত টোমার-ইয়েরুশালমি পদত্যাগ করেন। স্থানীয় গণমাধ্যম ইয়েদিওত আহরোনোতের প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি স্বীকার করেন যে তিনি ‘সামরিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিরুদ্ধে প্রচার রুখতে’ ভিডিও ফুটেজ গণমাধ্যমে ফাঁস করেছিলেন।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এই অভিযোগগুলো ইসরাইলি আটক কেন্দ্রে ফিলিস্তিনিদের ওপর পদ্ধতিগত নির্যাতনের দীর্ঘদিনের অভিযোগকে আরও স্পষ্ট করে। বিশেষ করে গাজা থেকে আটক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে নির্যাতন, নিখোঁজ হওয়া এবং অমানবিক আচরণের অভিযোগ বাড়ছে।

সূত্র: আনাদোলু

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার