যুক্তরাজ্যে ভিসা ইস্যু কমেছে ৩২ শতাংশ
অনিয়মিত অভিবাসনে এগিয়ে আফগান–ইরিত্রিয়ানরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৩৩ এএম
যুক্তরাজ্যে ভিসা নীতির ওপর সম্ভাব্য কঠোরতার ইঙ্গিত দিয়েছে হোম অফিস। অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফেরাতে সহযোগিতা না করলে অ্যাঙ্গোলা, নামিবিয়া ও ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর (ডিআরসি) নাগরিকদের জন্য ভিসা ইস্যু স্থগিত করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে সরকার। এলবিসির বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, এই তিন দেশ থেকে যুক্তরাজ্যে ভিসা প্রাপ্ত ও অনিয়মিত পথে আগত অভিবাসীর সংখ্যা সামগ্রিক চিত্রে অত্যন্ত সামান্য।
জুন ২০২৫ পর্যন্ত এক বছরে যুক্তরাজ্য মোট ৮৩৪,৯৭৭টি বৈধ ভিসা ইস্যু করেছে, যা গত বছরের তুলনায় ৩২% কম। আইনসম্মতভাবে যুক্তরাজ্যে প্রবেশকারীদের মধ্যে ভারতের নাগরিকরাই সবচেয়ে বেশি—১৯.৯ শতাংশ। এরপর চীন, পাকিস্তান, নাইজেরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। বিপরীতে ভিসা নিষেধাজ্ঞার সম্ভাব্য তিন দেশ—ডিআরসি, অ্যাঙ্গোলা ও নামিবিয়া—মিলে মোট ভিসার মাত্র ০.০৯ শতাংশেরও কম।
অন্যদিকে, অনিয়মিত বা ঝুঁকিপূর্ণ পথে যুক্তরাজ্যে প্রবেশকারীদের জাতীয়তা ভিন্ন প্রবণতা দেখায়। জুন পর্যন্ত এক বছরে ৪৮,৪৭৮ জন অনিয়মিত পথ ব্যবহার করে প্রবেশ করেছে, যার অর্ধেকের বেশি আফগানিস্তান, ইরিত্রিয়া, ইরান, সুদান ও সিরিয়া থেকে এসেছে। বৈধ ভিসার ক্ষেত্রে এ দেশগুলোর অংশ মাত্র ৩ শতাংশ। চ্যানেল পাড়ি দিয়ে আসা অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ৪২,৪৪৬। ডিআর কঙ্গো, অ্যাঙ্গোলা ও নামিবিয়া থেকে এইভাবে আগতদের সংখ্যা প্রায় শূন্যের কাছাকাছি।
এ সময়ে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় আবেদনও সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। জুন ২০২৫ পর্যন্ত এক বছরে ১,১১,০৮৪ জন আশ্রয়ের আবেদন করেছে, যা ২০০১ সালের পর সবচেয়ে বেশি। পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরান, ইরিত্রিয়া ও বাংলাদেশ শীর্ষ পাঁচটি দেশ। আশ্রয়প্রার্থীদের প্রথম সিদ্ধান্তের অপেক্ষমাণ তালিকায় এখনো রয়েছে ৯০,৮১২ জন। সেখানেও পাকিস্তান, সিরিয়া ও বাংলাদেশ রয়েছে শীর্ষ অবস্থানে। বিপরীতে নিষেধাজ্ঞার হুমকির মুখে থাকা তিন দেশ থেকে আবেদনকারীর সংখ্যা ১ শতাংশেরও কম।
ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের কারাগারেও বিদেশি বন্দির সংখ্যা সামান্য বেড়েছে। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিদেশি বন্দির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০,৭৩৭-এ, যা মোট বন্দির ১২.৩ শতাংশ। আলবেনিয়া, পোল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, রোমানিয়া ও ভারতের নাগরিকরা শীর্ষে রয়েছে। তবে ডিআরসি, অ্যাঙ্গোলা ও নামিবিয়ার বন্দি সংখ্যা মিলেও ১০০–র বেশি নয়।
সামগ্রিকভাবে দেখা যায়, যেসব দেশের ওপর যুক্তরাজ্য সম্ভাব্য ভিসা নিষেধাজ্ঞার কথা বলছে, তাদের নিজস্ব পরিসংখ্যান অভিবাসন বা আশ্রয় সংকটে কোনো উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে না। তবুও সরকার বলছে—অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফেরাতে সহযোগিতা না করলে ভিসা নীতি কঠোর করতে বাধ্য হবে তারা।