যে কারণে যুক্তরাজ্যে স্থায়ী হতে ২০ বছর অপেক্ষা করতে হবে
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:১৬ পিএম
যুক্তরাজ্য সরকার শরণার্থী নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। নতুন নীতি কার্যকর হলে দেশটিতে আশ্রয় নেওয়ার পর স্থায়ীভাবে বসবাসের আবেদন করতে শরণার্থীদের অপেক্ষা করতে হবে দীর্ঘ ২০ বছর।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার (১৭ নভেম্বর) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ এ পরিকল্পনার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন।
বর্তমানে যুক্তরাজ্যে শরণার্থীরা প্রথমে ৫ বছরের অনুমতিপত্র পান। এরপর তারা ‘ইনডিফিনিট লিভ টু রিমেইন’—অর্থাৎ স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারেন।
নতুন নীতিতে শরণার্থীদের সাময়িক বসবাসের মেয়াদ থাকবে মাত্র আড়াই বছর। এই মেয়াদ শেষে তাদের স্ট্যাটাস ও নিজ দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়মিতভাবে পর্যালোচনা করা হবে। যদি পরিস্থিতি নিরাপদ মনে হয়, তবে শরণার্থীকে নিজ দেশে ফিরে যেতে বলা হতে পারে।
যুক্তরাজ্য সরকার মনে করছে, সাগরপথে অবৈধভাবে প্রবেশ ও আশ্রয় নেওয়ার প্রবণতা কমাতে কঠোর ব্যবস্থা এখন জরুরি। নতুন কাঠামো মূলত ডেনমার্কের কঠোর অভিবাসন আইন অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছে।
ডেনমার্কে শরণার্থীদের মাত্র ২ বছরের অস্থায়ী অনুমতি দেওয়া হয় এবং পরে পুনরায় আবেদন করতে হয়। যুক্তরাজ্যও একই নিয়ম অনুসরণে এগোচ্ছে।
সানডে টাইমসকে শাবানা মাহমুদ বলেন, মানুষকে সতর্ক করার জন্যই এই সংস্কার। এখনই পদক্ষেপ না নিলে দেশে আরও বিভাজন সৃষ্টি হবে।”
যুক্তরাজ্যের ‘রিফিউজি কাউন্সিল’ নতুন নীতির তীব্র সমালোচনা করেছে। সংস্থার প্রধান নির্বাহী এনভার সোলোমন বলেন, মানুষকে বাধা না দিয়ে বরং তাদের ২০ বছরের অনিশ্চয়তায় ফেলে দেওয়া হচ্ছে। এটি ভয়ানক মানসিক চাপ তৈরি করবে।
গত মার্চ পর্যন্ত ১২ মাসে আশ্রয়ের আবেদন করেছেন ১,০৯,৩৪৩ জন, যা আগের বছরের তুলনায় ১৭% বেশি। মাত্র এক সপ্তাহে পৌঁছেছেন ১,০৬৯ শরণার্থী। চলতি বছর এখন পর্যন্ত সাগরপথে যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন ৩৯ হাজারেরও বেশি মানুষ।
বিশ্লেষকদের মতে, এই কঠোর নীতি যুক্তরাজ্যের অভিবাসন ব্যবস্থায় আগামী বছরগুলোতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে এবং শরণার্থীদের জন্য নতুন অনিশ্চয়তা তৈরি করবে।