নিউইয়র্ক শহরের গণপরিবহন ব্যবস্থায় ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে । প্রতিদিন ৪.৫ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ সাবওয়ে ব্যবহার করছেন। একই সঙ্গে, মেট্রোপলিটন ট্রান্সপোর্টেশন অথরিটি (এমটিএ) তাদের কনটাক্টলেস পেমেন্ট সিস্টেম ‘ওমনি’–এর মাধ্যমে তিন বিলিয়নতম ট্যাপ সম্পন্ন করার মাইলফলক ছুঁয়েছে।

অক্টোবরের ২২ ও ২৩ তারিখে যথাক্রমে ৪.৫২ মিলিয়ন ও ৪.৫৫ মিলিয়ন যাত্রী সাবওয়ে ব্যবহার করেন । যা মহামারির পর সর্বোচ্চ রেকর্ড। এমটিএ জানিয়েছে, এটি শুধু যাত্রীসংখ্যার বৃদ্ধি নয়, বরং নিউইয়র্কের গণপরিবহন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, নিরাপত্তা এবং ব্যবহারকারীর সুবিধা বৃদ্ধির প্রতিফলন।

গভর্নর ক্যাথি হোচুল বলেন, “নিরাপত্তা ও নির্ভরযোগ্যতায় অগ্রগতি সাবওয়েকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। ট্যাপ-অ্যান্ড-রাইড সুবিধা যাত্রীদের যাতায়াত আরও সহজ করেছে। একই সপ্তাহে নতুন যাত্রী রেকর্ড ও ট্যাপ মাইলস্টোন অর্জন প্রমাণ করে, গণপরিবহনে বিনিয়োগই শহরের প্রাণশক্তি।”

এমটিএ চেয়ারম্যান ও সিইও জানো লিবার বলেন, “তিন বিলিয়ন ট্যাপ প্রমাণ করে নিউইয়র্কবাসী নতুন পেমেন্ট যুগকে গ্রহণ করেছে। যেমন ৩০ বছর আগে মেট্রোকার্ড বিপ্লব এনেছিল, ট্যাপ-অ্যান্ড-রাইডও তেমনই নতুন সুবিধা ও ছাড়ের দ্বার খুলছে।”

এমটিএ প্রেসিডেন্ট ডেমেট্রিয়াস ক্রিচলো জানান, “ট্যাপ অ্যান্ড রাইড দ্রুত, সহজ এবং নিরাপদ ভাড়া পরিশোধের মাধ্যম, যা এখন তিন বিলিয়ন বার ব্যবহৃত হয়েছে। যদিও মেট্রোকার্ড বিদায় জানাতে অনেকেরই কষ্ট হচ্ছে, তবে আমরা সবাইকে নতুন প্রযুক্তিতে যেতে উৎসাহ দিচ্ছি।”

মার্চে এমটিএ ঘোষণা দেয়, ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর মেট্রোকার্ড বিক্রি বন্ধ হবে এবং ২০২৬ সালের মাঝামাঝি থেকে মেট্রোকার্ড গ্রহণও বন্ধ করা হবে। বর্তমানে ২,৭০০টি রিটেইল লোকেশনে ওমনি কার্ড বিক্রি চলছে—যা পূর্বের তুলনায় দ্বিগুণ।

ওমনি সিস্টেমে রয়েছে ‘ফেয়ার ক্যাপিং’ সুবিধা, অর্থাৎ ডিজিটাল ওয়ালেট, কনটাক্টলেস কার্ড বা ওমনি কার্ড ব্যবহারকারীরা এক সপ্তাহে নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফ্রি রাইড পাবেন।

এমটিএ বোর্ড সম্প্রতি ঘোষণা করেছে, এক্সপ্রেস বাসের জন্যও ৭ দিনের ফেয়ার ক্যাপ চালু হবে। সপ্তাহে সর্বোচ্চ ৬৭ ডলার খরচে যাত্রীরা সীমাহীন এক্সপ্রেস, লোকাল বাস ও সাবওয়ে রাইড উপভোগ করতে পারবেন।

এই উদ্যোগের ফলে এমটিএ বছরে কমপক্ষে ২০ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করবে এবং নতুন ভাড়ার ছাড় ও যাত্রীবান্ধব প্রচার অভিযানের সুযোগ তৈরি করবে যা নিউইয়র্ক সিটির গণপরিবহনকে আরও আধুনিক ও টেকসই পথে এগিয়ে নেবে।