Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র, ‘নো কিংস’ আন্দোলনে জনতার ঢল

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৫৪ এএম

ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র, ‘নো কিংস’ আন্দোলনে জনতার ঢল
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের গৃহীত নানা নীতি ও কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। কর্তৃত্ববাদী নীতি ও গণতন্ত্রবিরোধী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে শনিবার (১৮ অক্টোবর) অন্তত ৭০ লাখ মানুষ ‘নো কিংস’ শীর্ষক বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। 

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের তথ্য মতে, ‘ট্রাম্প মাস্ট গো’, ‘রাজতন্ত্র নয়’, ‘সংবিধান ঐচ্ছিক নয়’, ‘দেশপ্রেমের সবচেয়ে বড় প্রকাশ হলো প্রতিবাদ’ এবং ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলো’ ইত্যাদি স্লোগানে বিক্ষোভ করেছেন প্রতিবাদকারীরা। ওয়াশিংটন ডিসি, শিকাগো, মিয়ামি, লস অ্যাঞ্জেলেস, নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ার, বোস্টনের কমন পার্ক, শিকাগোর গ্রান্ট পার্কসহ বিভিন্ন শহরে কয়েক লাখ মানুষের ঢল নেমেছিল।

অনেক জায়গায় উৎসবমুখর পরিবেশে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে গান ও নৃত্যের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ হয়েছে। এছাড়াও ব্যাঙের পোশাক পরেও অনেক প্রতিবাদকারী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে লন্ডন, মাদ্রিদ, বার্সেলোনাসহ ইউরোপের বিভিন্ন শহরে মার্কিন দূতাবাসের সামনে সমাবেশ হয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন, শিক্ষা ও নিরাপত্তা নীতি, এবং ফেডারেল সরকারের শাটডাউন নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ট্রাম্প প্রশাসনের এসব পদক্ষেপকে অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রে কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

এ বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রভাবশালী গ্রাসরুট প্রগতিশীল রাজনৈতিক আন্দোলন ও সংগঠন ইনডিভাইসএবল। সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বর্তমান প্রশাসন আদালত উপেক্ষা করেছে, আমেরিকানদের দেশ থেকে বের করে দিয়েছে, বাজেট বিল নিয়ে মতানৈক্যের কারণে স্থবির প্রশাসনিক কাঠামো, মানুষকে গুম, নাগরিক অধিকার রহিত করা এবং সরকারি সেবাগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। এসব পদক্ষেপের বিরোধিতা করে মানুষ এ বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদকালে ২০১৬ সালে গঠিত ইনডিভাইসএবলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এজরা লেভিন বলেন, একটি স্বৈরশাসক সরকারব্যবস্থার সবচেয়ে বড় শত্রু হলো দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ জনগণের শক্তি।

আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এসিএলইউ) জানিয়েছে, দেশজুড়ে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া স্বেচ্ছাসেবীদের আইনি সহায়তা ও সংঘর্ষ এড়ানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, রিপাবলিকান নেতারা এসব বিক্ষোভকে চরম বামঘেঁষা বলে সমালোচনা করেছেন। হাউজ স্পিকার মাইক জনসন একে আমেরিকা-বিরোধী সমাবেশ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তবে সেনেটর বার্নি স্যান্ডার্স পাল্টা মন্তব্যে বলেন, এটি ঘৃণার নয়, এটি আমেরিকাকে ভালোবাসার সমাবেশ।

অন্যদিকে ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সমালোচকদের মন্তব্যের জবাবে বলেন, ওরা আমাকে রাজা বলছে। আমি কোনো রাজা নই।
বিভিন্ন শহরের সিনেটরদের বিরোধিতা সত্ত্বেও বিক্ষোভ ঘিরে কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে ন্যাশনাল গার্ডকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

সাম্প্রতিক রয়টার্স ও ইপসোস জরিপে দেখা গেছে, ট্রাম্পের গৃহীত সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে মাত্র ৪০ শতাংশ মানুষ। অন্যদিকে ৫৮ শতাংশ মার্কিন নাগরিক ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডে অসন্তুষ্ট।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার