বিশ্ব অর্থনীতির ঝুঁকি বাড়ছে, ঋণের চাপে দিশেহারা অনেক দেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৩২ এএম

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নীতিনির্ধারক পরামর্শক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল কমিটি (আইএমএফসি) তাদের সর্বশেষ বৈঠক শেষে এক বিবৃতিতে বিশ্ব অর্থনীতির ওপর বাড়তে থাকা ঝুঁকি এবং ঋণ সংকট নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
আইএমএফসি সভাপতি মোহাম্মদ আলজাদান, অর্থমন্ত্রী, সৌদি আরব এবং আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালকক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাসহ অন্যান্য দেশের প্রতিনিধিরা এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন।
কমিটি জানিয়েছে, বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি এখনো টিকে আছে, তবে চাপ বাড়ছে এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ঝুঁকি ‘নিম্নমুখী’ । বাণিজ্য নীতির বড় পরিবর্তন, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, জলবায়ু বিপর্যয় এবং প্রযুক্তিগত রূপান্তর সব মিলিয়ে বৈশ্বিক অর্থনীতির সামনে এক জটিল ও অনিশ্চিত পথ অপেক্ষা করছে।
আরও পড়ুন:
বিশ্বে স্থায়ী শান্তি টেকসই প্রবৃদ্ধির পূর্বশর্তবিশ্বে উন্নয়ন কৌশলের কেন্দ্রে কর্মসংস্থানকে স্থান দেওয়ার আহ্বানকেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা রক্ষায় আইএমএফের সতর্কবার্তা
ঋণ এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ে উদ্বেগ
আইএমএফসি জানিয়েছে, মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে কমলেও তা সব দেশে সমানভাবে ঘটছে না। অনেক দেশে ঋণের পরিমাণ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে, বিশেষ করে নিম্নআয়ের ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য পরিস্থিতি বেশ সংকটজনক।
কমিটি বলেছে, ‘আমরা এমন আর্থিক নীতি গ্রহণ করবো যা আস্থা গড়ে তোলে, স্থিতিশীলতা বজায় রাখে এবং ঋণ টেকসই রাখতে সাহায্য করে।’ একই সঙ্গে তারা দীর্ঘমেয়াদি কৌশল নির্ধারণের মাধ্যমে ঘাটতি কমাতে এবং আর্থিক রিজার্ভ গড়ে তুলতে আহ্বান জানিয়েছে।
স্থিতিশীলতা ও প্রযুক্তির ভারসাম্য
কমিটি স্বাধীন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকাকে ‘বিশ্বাসযোগ্যতা ও নীতির স্থায়িত্বের ভিত্তি’ বলে স্বীকার করেছে এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে দৃঢ় অবস্থানে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
তবে আর্থিক ব্যবস্থার দ্রুত পরিবর্তনের কথা স্বীকার করে আইএমএফসি বলেছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), ডিজিটাল অ্যাসেট এবং ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কারণে সৃষ্ট ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি প্রযুক্তির সুফলও কাজে লাগাতে হবে।
“আমরা কাঠামোগত সংস্কার অব্যাহত রাখবো যা ব্যবসার পরিবেশ উন্নত করবে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়বে এবং প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করবে, বলা হয়েছে বিবৃতিতে।
ঝুঁকিপূর্ণ দেশের জন্য সহায়তার অঙ্গীকার
আইএমএফসি যুদ্ধবিধ্বস্ত, দরিদ্র ও ক্ষুদ্র উন্নয়নশীল দেশগুলোর ঋণ সংকটের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। গঠনতান্ত্রিক সংস্কারের মাধ্যমে এসব দেশকে অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
কমিটি জি-২০ এর ‘কমন ফ্রেমওয়ার্ক’ এর অগ্রগতি স্বাগত জানিয়েছে এবং আরও “সমন্বিত, দ্রুত ও পূর্বানুমানযোগ্য” ঋণ নিরসন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে বলেছে।
কোটার বাস্তবায়ন ও আইএমএফ সংস্কার
কমিটি আইএমএফ-এর কোটা-ভিত্তিক কাঠামো বজায় রাখার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে এবং ১৬তম সাধারণ কোটার পর্যালোচনার অধীনে কোটার বৃদ্ধি দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে।
তারা বলেছে, কোটা বণ্টনের পরবর্তী পুনর্বিন্যাস এমনভাবে করতে হবে যাতে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে সদস্য দেশগুলোর প্রকৃত অবস্থান প্রতিফলিত হয়, তবে দরিদ্র দেশগুলোর অংশ যাতে সুরক্ষিত থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে।
অভ্যন্তরীণ সংস্কার ও বৈচিত্র্য বৃদ্ধির তাগিদ
আইএমএফ কর্মীদের কাজের প্রশংসা করে কমিটি কর্মীদের মধ্যে আঞ্চলিক বৈচিত্র্য ও নারীদের অংশগ্রহণ আরও বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে, বিশেষ করে নির্বাহী বোর্ড ও নেতৃত্বের স্তরে।
বিশ্বব্যাপী ঐক্যবদ্ধ নীতি জরুরি
এই বৈঠক এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হলো, যখন বৈশ্বিক অর্থনীতির গতি ধীর হয়ে আসছে এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও নীতিগত সমন্বয় আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি জরুরি হয়ে পড়েছে।
আইএমএফসির স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে, এক অনিশ্চিত ও পরিবর্তনশীল বিশ্বের জন্য কেবলমাত্র দেশীয় পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়, বিশ্বব্যাপী ঐক্যবদ্ধ ও সুসমন্বিত নীতিই ভবিষ্যৎ স্থিতিশীলতার চাবিকাঠি।
আইএমএফসি সভাপতি মোহাম্মদ আলজাদান, অর্থমন্ত্রী, সৌদি আরব এবং আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালকক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাসহ অন্যান্য দেশের প্রতিনিধিরা এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন।
কমিটি জানিয়েছে, বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি এখনো টিকে আছে, তবে চাপ বাড়ছে এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ঝুঁকি ‘নিম্নমুখী’ । বাণিজ্য নীতির বড় পরিবর্তন, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, জলবায়ু বিপর্যয় এবং প্রযুক্তিগত রূপান্তর সব মিলিয়ে বৈশ্বিক অর্থনীতির সামনে এক জটিল ও অনিশ্চিত পথ অপেক্ষা করছে।
আরও পড়ুন:
বিশ্বে স্থায়ী শান্তি টেকসই প্রবৃদ্ধির পূর্বশর্তবিশ্বে উন্নয়ন কৌশলের কেন্দ্রে কর্মসংস্থানকে স্থান দেওয়ার আহ্বানকেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা রক্ষায় আইএমএফের সতর্কবার্তা
ঋণ এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ে উদ্বেগ
আইএমএফসি জানিয়েছে, মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে কমলেও তা সব দেশে সমানভাবে ঘটছে না। অনেক দেশে ঋণের পরিমাণ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে, বিশেষ করে নিম্নআয়ের ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য পরিস্থিতি বেশ সংকটজনক।
কমিটি বলেছে, ‘আমরা এমন আর্থিক নীতি গ্রহণ করবো যা আস্থা গড়ে তোলে, স্থিতিশীলতা বজায় রাখে এবং ঋণ টেকসই রাখতে সাহায্য করে।’ একই সঙ্গে তারা দীর্ঘমেয়াদি কৌশল নির্ধারণের মাধ্যমে ঘাটতি কমাতে এবং আর্থিক রিজার্ভ গড়ে তুলতে আহ্বান জানিয়েছে।
স্থিতিশীলতা ও প্রযুক্তির ভারসাম্য
কমিটি স্বাধীন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকাকে ‘বিশ্বাসযোগ্যতা ও নীতির স্থায়িত্বের ভিত্তি’ বলে স্বীকার করেছে এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে দৃঢ় অবস্থানে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
তবে আর্থিক ব্যবস্থার দ্রুত পরিবর্তনের কথা স্বীকার করে আইএমএফসি বলেছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), ডিজিটাল অ্যাসেট এবং ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কারণে সৃষ্ট ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি প্রযুক্তির সুফলও কাজে লাগাতে হবে।
“আমরা কাঠামোগত সংস্কার অব্যাহত রাখবো যা ব্যবসার পরিবেশ উন্নত করবে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়বে এবং প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করবে, বলা হয়েছে বিবৃতিতে।
ঝুঁকিপূর্ণ দেশের জন্য সহায়তার অঙ্গীকার
আইএমএফসি যুদ্ধবিধ্বস্ত, দরিদ্র ও ক্ষুদ্র উন্নয়নশীল দেশগুলোর ঋণ সংকটের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। গঠনতান্ত্রিক সংস্কারের মাধ্যমে এসব দেশকে অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
কমিটি জি-২০ এর ‘কমন ফ্রেমওয়ার্ক’ এর অগ্রগতি স্বাগত জানিয়েছে এবং আরও “সমন্বিত, দ্রুত ও পূর্বানুমানযোগ্য” ঋণ নিরসন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে বলেছে।
কোটার বাস্তবায়ন ও আইএমএফ সংস্কার
কমিটি আইএমএফ-এর কোটা-ভিত্তিক কাঠামো বজায় রাখার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে এবং ১৬তম সাধারণ কোটার পর্যালোচনার অধীনে কোটার বৃদ্ধি দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে।
তারা বলেছে, কোটা বণ্টনের পরবর্তী পুনর্বিন্যাস এমনভাবে করতে হবে যাতে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে সদস্য দেশগুলোর প্রকৃত অবস্থান প্রতিফলিত হয়, তবে দরিদ্র দেশগুলোর অংশ যাতে সুরক্ষিত থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে।
অভ্যন্তরীণ সংস্কার ও বৈচিত্র্য বৃদ্ধির তাগিদ
আইএমএফ কর্মীদের কাজের প্রশংসা করে কমিটি কর্মীদের মধ্যে আঞ্চলিক বৈচিত্র্য ও নারীদের অংশগ্রহণ আরও বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে, বিশেষ করে নির্বাহী বোর্ড ও নেতৃত্বের স্তরে।
বিশ্বব্যাপী ঐক্যবদ্ধ নীতি জরুরি
এই বৈঠক এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হলো, যখন বৈশ্বিক অর্থনীতির গতি ধীর হয়ে আসছে এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও নীতিগত সমন্বয় আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি জরুরি হয়ে পড়েছে।
আইএমএফসির স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে, এক অনিশ্চিত ও পরিবর্তনশীল বিশ্বের জন্য কেবলমাত্র দেশীয় পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়, বিশ্বব্যাপী ঐক্যবদ্ধ ও সুসমন্বিত নীতিই ভবিষ্যৎ স্থিতিশীলতার চাবিকাঠি।