মহিলাদের দাসী করে রাখার জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে বিয়ে
দাবি ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:২৭ এএম
প্রাচীনকাল থেকেই বিবাহের মতো ব্যবস্থা কেবল মহিলাদের দাসী করার জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত এক অনুষ্ঠানে এই কথা বলেছেন। তাঁর কথায়, ইতিহাস দেখায় যে, সারা বিশ্বে, প্রতিটি যুগে এবং প্রতিটি সংস্কৃতিতে নারীদের পরাধীন করার জন্য বিবাহকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি বলেন, আইনি ও সামাজিক সংস্কারের মাধ্যমে আজ বিবাহ ব্যবস্থায় সাম্যের চেতনা গড়ে উঠছে। সাংবিধানিক মূল্যবোধ অনুসারে পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সাম্যের অনুভূতি রয়েছে। এরই সঙ্গে তিনি জানান, আইনের মাধ্যমেই নারীরা ক্ষতিপূরণ, উত্তরাধিকার এবং বাড়ির অধিকার পেয়েছেন বর্তমান সময়ে। এরই সঙ্গে তাঁর দাবি, হিন্দু ও মুসলমানদের জন্য ব্যক্তিগত আইন কোড বর্তমান সমাজ ব্যবস্থার জন্য আদর্শ নয়।
দিল্লি পামিল আইনজীবী সমিতি আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তব্য রাখছিলেন বিচারপতি সূর্য কান্ত। দিল্লি হাইকোর্টের মহিলা আইনজীবীদের সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানেই বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, ভারত ও ইংল্যান্ড উভয় দেশেই পারিবারিক আইনের উন্নয়নের জন্য লিঙ্গ সমতা ক্রমশ স্বীকৃত হচ্ছে। তিনি বলেন, ভারত ও ইংল্যান্ডে এখন বিবাহের মতো প্রতিষ্ঠানগুলি সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা গড়ে উঠেছে। বিচারপতির বক্তব্য, এক সময় বিবাহ ও উত্তরাধিকারের বিষয়গুলি ধর্মীয় ও দার্শনিক বিবেচনার দিক থেকে দেখা হত। তিনি বলেন, ঔপনিবেশিক আমলে হিন্দু ও মুসলমানদের জন্য ব্যক্তিগত আইন কোড করা হয়েছিল, কিন্তু তা আদর্শ ছিল না।
বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, সব সম্প্রদায়ের আলাদা আলাদা বিশ্বাস ও ঐতিহ্য রয়েছে। স্বাধীনতার পরেই ভারতীয় সংসদ এবং বিচার বিভাগ পরিবার সম্পর্কিত আইনগুলিকে প্রাধান্য দিয়েছে এবং এর জন্য একটি কাঠামো তৈরি করেছে যা আজও প্রাসঙ্গিক। তিনি বলেন, 'বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর ফলে বাল্যবিবাহ এবং সম্মতি ছাড়াই বিবাহ রোখা সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়া যে ধর্মে বহুবিবাহের অনুমতি নেই, সেই ধর্মের জন্যও আইনি পদক্ষেপের পথও উন্মুক্ত। আইনের মাধ্যমেই নারীরা ক্ষতিপূরণ, উত্তরাধিকার এবং বাড়ির অধিকার পেয়েছিলেন।'