কানাডায় আশ্রয়প্রার্থী বাংলাদেশি শাহরিয়ার ভুল করে যুক্তরাষ্ট্রে
গ্রেফতার : চরম ভোগান্তি

জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০২:১৩ এএম
বিপাকে পড়েছেন কানাডায় আশ্রয়প্রার্থী এক বাংলাদেশি যুবক মাহিন শাহরিয়ার। তিনি ‘ভুল করে’ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন। এই অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের বাফেলো শহরে তাকে গ্রেপ্তার করেছে মার্কিন অভিবাসন ও শুল্ক বিষয়ক সংস্থা আইসিই। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ তিনি অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন। তবে শাহরিয়ার বলেছেন, তিনি ভুলবশত সীমান্ত পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গিয়েছিলেন। কানাডার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা তাকে ফেরত নেবে না। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া।
ঘটনাটি বেশ অদ্ভুত। শাহরিয়ার বলেন, এক বন্ধু তাকে একটি নির্দিষ্ট স্থানে যেতে বলেছিলেন। তিনি কিছুদিন ধরে বিষণ্নতায় ভুগছিলেন এবং বাড়ির বাইরে কিছু সময় কাটাতে চাচ্ছিলেন। সেই সুযোগে তার বন্ধু তাকে ‘বিশ্রামের জন্য’ একটি জায়গার ঠিকানা দেন। কিন্তু সেটি সীমান্তের খুব কাছেই ছিল। আর আসলে সেই জায়গাটা যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে। শাহরিয়ার জানান, তিনি ২০১৯ সাল থেকে কানাডায় বসবাস করছেন এবং সেখানে উবার চালিয়ে নিজের পরিবারকে সহায়তা করছিলেন। তার পরিবারে আছেন তার মা। তিনি নিজেও একজন শরণার্থী। আছেন শাহরিয়ারের বোন। তিনি কানাডায় পূর্ণসময়ে পড়াশোনা করছেন। শাহরিয়ার বলেন, আমি কিছুদিন একা থাকতে চেয়েছিলাম। এক বন্ধু আমাকে একটা জায়গা দিয়েছিল।
কিন্তু ফোনে বন্ধুর নির্দেশনা মেনে চলতে গিয়ে তিনি বুঝতে পারেন জায়গাটি কানাডা-মার্কিন সীমান্তের কাছে। শাহরিয়ার বলেন, তারপর দেখি আমি যুক্তরাষ্ট্রে! এটা আমার উদ্দেশ্য ছিল না। যখন বুঝলেন তিনি যুক্তরাষ্ট্রে, তখন তিনি নিজেই সীমান্ত নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের কাছে গিয়ে বিষয়টি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কর্মকর্তারা তাকে হেফাজতে নিয়ে যান।
বাংলাদেশ, কানাডা না যুক্তরাষ্ট্র: শাহরিয়ারের গন্তব্য কোথায়?
আইসিই জানিয়েছে, তারা শাহরিয়ারকে গ্রহণ করতে বাধ্য করবে না কানাডাকে। আবার তারা তাকে বাংলাদেশে পাঠাতেও পারছে না। কারণ তার ভ্রমণ নথি বা পাসপোর্ট নেই। তাছাড়া, তারা বলেছে, শাহরিয়ার বাংলাদেশে ফিরে গেলে নির্যাতন ও আটক হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বেন। শাহরিয়ারের আইনজীবী ওয়াশিম আহমেদ জানিয়েছেন, তিনি জরুরি ভিত্তিতে ফেডারেল কোর্টে শুনানির সময়সূচি ঠিক করার চেষ্টা করছেন, যাতে কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সিকে (সিবিএসএ) মানবিক ও সহানুভূতিমূলক কারণে শাহরিয়ারকে ফেরত নিতে রাজি করানো যায়। তিনি আরও বলেন, শাহরিয়ার কানাডা ছেড়ে যাওয়ার আগে যে অবস্থাতেই থাকুন না কেন, তিনি ছিলেন কানাডার বৈধ বাসিন্দা। তার মা ও বোন দু’জনই এখনো কানাডায় বৈধভাবে অবস্থান করছেন। তারা কানাডার বৈধ আবাসিক।
শাহরিয়ার গত ২৪ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন দপ্তরের নথিতে স্বাক্ষর করেছেন, যেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় চাইছেন না। কারণ তার পরিবার ইতিমধ্যেই কানাডায় আশ্রয়ের অনুমোদন পেয়েছে এবং তার নিজেরও আশ্রয় আবেদন প্রক্রিয়াধীন।