অ্যানেসথেশিয়ায় চিকিৎসক স্ত্রীকে হত্যা, যেভাবে ধরা পড়লেন সার্জন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৫২ এএম

ভারতের বেঙ্গালুরুর ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে কর্মরত ৩২ বছর বয়সী সার্জন ডা. মহেন্দ্র রেড্ডি ভালো করেই জানতেন মানুষের শরীর কীভাবে কাজ করে। আর সেই জ্ঞান তিনি ব্যবহার করেছেন জীবন বাঁচাতে নয়, বরং একটি জীবন শেষ করতে। ছয় মাস আগে ২৮ বছর বয়সী চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কৃতিকা রেড্ডির আকস্মিক মৃত্যুকে স্বাভাবিক বলেই ধরে নেয়া হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ দাবি করে, তার স্বামী মহেন্দ্রই ছিলেন এই ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের’ মূল এবং একমাত্র হোতা।
পুলিশের ভাষায়, তিনি ‘একজন দক্ষ সার্জনের মতো নিখুঁত পরিকল্পনায়’ নিজের স্ত্রীকে হত্যার ছক কষেছিলেন এবং সেটি তিনি করেছেন প্রাণঘাতী মাত্রায় অ্যানেসথেশিয়া প্রয়োগের মাধ্যমে। দম্পতির বিয়ে হয়েছিল ২০২৪ সালের ২৬ মে।পুলিশ জানিয়েছে, মহেন্দ্র তার স্ত্রীর শারীরিক দুর্বলতা ও চিকিৎসাগত ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতেন। সেই তথ্যকেই তিনি ব্যবহার করেছেন তার হত্যা পরিকল্পনায়। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
হোয়াইটফিল্ডের ডেপুটি কমিশনার এম. পরশুরাম বলেন,‘মহেন্দ্র খুবই সূক্ষ্মভাবে পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি জানত স্ত্রী কোন ওষুধে বেশি মাত্রায় স্পর্শকাতর এবং সেটিকেই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে।’
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২১ এপ্রিল মহেন্দ্র তার স্ত্রীকে জানান তিনি নাকি গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় ভুগছেন, তাই ইনজেকশন দিতে হবে। তিনি বাড়িতে ইন্ট্রাভেনাস (আইভি) ওষুধ দেন।
পরদিন তিনি কৃতিকাকে তার বাবা-মায়ের বাড়ি মারাথাহল্লিতে নিয়ে যান, বলেন তার বিশ্রাম দরকার। সেই রাতে আবার ফিরে এসে আরও একটি আইভি ডোজ দেন। ২৩ এপ্রিল, কৃতিকা ইনজেকশন দেয়ার স্থানে ব্যথার কথা জানান। মহেন্দ্র তখন হোয়াটসঅ্যাপে পরামর্শ দেন, ‘আইভি লাইন খুলো না, আমি রাতে এসে আরও এক ডোজ দেব।’
সেই রাতে, প্রায় রাত ৯টা ৩০ মিনিটে, তিনি কৃতিকার ঘরে ঢুকে আরেকটি ইনজেকশন দেন। পরদিন সকাল ২৪ এপ্রিল, কৃতিকাকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। আশ্চর্যজনকভাবে, মহেন্দ্র কোনো সিপিআর দেননি। পরে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।