Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

টাইফয়েডের টিকার কার্যকরিতা কেমন? পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কতটুকু?

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৫৬ এএম

টাইফয়েডের টিকার কার্যকরিতা কেমন? পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কতটুকু?

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে ৯ থেকে ১৬ বছর বয়সী শিশুদেরকে দেওয়া হচ্ছে বিনা মূল্যে টাইফয়েডের টিকা। এর আগে এই কার্যক্রম চলেছে পাকিস্তান ও নেপালে। এই টিকার কার্যকরিতা কতটুকু, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াই বা কতটুকু তা দেখতে নেপালে বিশ হাজার শিশুকে নিয়ে একটি গবেষণা চালানো হয়। গবেষণাপত্রটি বিশ্বখ্যাত মেডিক্যাল জার্নাল ল্যানসেট গ্লোবাল হেলথে প্রকাশ করা হয়।

এই গবেষণাপত্র গত ২০২১ সালে প্রকাশিত হয়। সেখানে দক্ষিণ এশিয়া, বিশেষত বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও নেপালকে সবচেয়ে বেশি টাইফয়েডপ্রবণ অঞ্চল হিসেবে দেখানো হয়। সম্প্রতি বিরল প্রজাতির টাইফয়েড ছড়িয়ে পড়েছিল পাকিস্তানে। এই পরিস্থিতিতে এ ধরনের টাইফয়েড থেকে আগাম রক্ষা পাওয়ার উপায় হতে পারে এই ভ্যাকসিন। 

আরও পড়ুন
এই গবেষণাপত্রে বলা হয়, এই টিকা প্রথম বছরে ৮১ শতাংশ কার্যকরিতা দেখিয়েছে, পরের বছর ৭৯ শতাংশ কার্যকর ছিল। তবে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন নেই ‘টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি)’ নামের এই টিকার। তবে টিকা দেওয়ার পর সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যেমন– সামান্য জ্বর বা ইনজেকশনের স্থানে সামান্য ব্যথা দেখা যেতে পারে। এ ছাড়া বিশাল কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা স্বাস্থ্যঝুঁকি এই টিকার ক্ষেত্রে দেখা যায়নি বলে জানায় এই গবেষণাপত্র।

এই গবেষণাটি যৌথভাবে করেছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং নেপালের পাটান অ্যাকাডেমি অব হেলথ সায়েন্সেসের গবেষকরা। ক্ষেত্র হিসেবে বেছে নেওয়া হয় নেপালের ললিতপুর মেট্রোপলিটন শহরকে। ৯ মাস থেকে ১৬ বছর বয়সী সুস্থ প্রায় ২০ হাজার ১৪ জন শিশুকে এই গবেষণার আওতায় আনা হয়। দৈবচয়নের ভিত্তিতে সেই শিশুদের দুই দলে ভাগ করা হয়। 

একটি দল পায় ভারত বায়োটেক ইন্টারন্যাশনালের তৈরি টাইফয়েড কনজুগেট টিকা (টিসিভি) দেওয়া হয়। অন্য দল পায় মেনিনজাইটিস ‘এ’ রোগের টিকা। টিকা দেওয়ার পর সেই দুই দলকে প্রায় এক বছর ধরে নিবিড়ভাবে নজরে রাখা হয়। এরপর রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে টাইফয়েড রোগীদের তথ্য নিয়ে দুই দলের মধ্যে তুলনা করা হয়।

সেই গবেষণার ফলে বেরিয়ে আসে, যারা টিসিভি পেয়েছিল, তাদের মধ্যে টাইফয়েডে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশ কম। সে দলের মধ্যে টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়েছেন মোটে ৭ জন। পক্ষান্তরে মেনিনজাইটিস টিকা নেওয়াদের মধ্যে ৩৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন টাইফয়েডে। 

আরও পড়ুন
এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বিজ্ঞানীরা এই সিদ্ধান্তে আসেন যে, টিকার ৭৯ শতাংশ ক্ষেত্রে কার্যকর। এর মানে এই যে, টিকা নিলে টাইফয়েডে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা কমে আসে।

টাইফয়েডের টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

তবে গবেষণায় দেখা যায়, টিকা দেওয়ার কিছু সময় পর মৃদু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে যা বেশ সাময়িক। টিসিভি টিকা যারা পেয়েছে, সেই শিশুদের মধ্যে মোটে ৯ শতাংশ সামান্য জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ইনজেকশনের জায়গায় মৃদু ব্যথা, ফোলাভাব ও লাল হয়ে থাকার মতো ঘটনাও দেখা গেছে। তবে সেসব থেকে মুক্তি পেতে চিকিৎসা করতে হয়নি। আপনাআপনিই সেরে গেছে দিনদুয়েকের মধ্যে।

মূলত এই গবেষণার ওপর ভিত্তি করেই টাইফয়েড-প্রবণ দেশগুলোকে তাদের জাতীয় টিকাদান কর্মসূচিতে টিসিভি অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার