সন্ত্রাসবিরোধী আইনে বাংলাদেশে নতুন করে দমন-পীড়ন : এইচআরডব্লিউ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:০৪ পিএম

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি সংশোধিত সন্ত্রাসবিরোধী আইন ব্যবহার করে পদচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সমর্থকদের গ্রেপ্তার করছে বলে অভিযোগ করেছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এক সংবাদ প্রতিবেদনে এ কথা বলেছে।
প্রতিবেদনে এইচআরডব্লিউ বলেছে, বাংলাদেশে কর্মরত জাতিসংঘের মানবাধিকার দলের উচিত নির্বিচারে আটক ব্যক্তিদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানানো এবং মানবাধিকার রক্ষা ও রাজনৈতিক সহিংসতার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি করার জন্য কর্তৃপক্ষকে উৎসাহিত করা উচিত।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে টানা তিন সপ্তাহের সহিংস বিক্ষোভে প্রায় ১৪০০ জন নিহত হওয়ার পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। এরপরই ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। পরবর্তী সময়ে ২০২৫ সালের ১২ মে সরকার সংশোধিত সন্ত্রাসবিরোধী আইন ব্যবহার করে আওয়ামী লীগকে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) করে। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় দলটির সভা-সমাবেশ, প্রকাশনা ও অনলাইন কার্যক্রমও বন্ধ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও শান্তিপূর্ণ অধিকারকর্মীদের গ্রেপ্তারে আইনটি ব্যবহার করা হচ্ছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের উপপরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেন শেখ হাসিনার সময়কার মতো রাজনৈতিক প্রতিহিংসার একই চক্রে না জড়িয়ে পড়ে। মানুষ কারাগারে ঠাঁই পাচ্ছে, শান্তিপূর্ণ ভিন্নমতকে দমন করা হচ্ছে—এটা গণতন্ত্রের পথে নয়।
তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিসকে যেহেতু বাংলাদেশে মানবাধিকার সুরক্ষায় সহায়তার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, তাই সংস্থাটির উচিত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গ্রেপ্তার ঠেকাতে দ্রুত হস্তক্ষেপ করা।
এইচআরডব্লিউ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখন পর্যন্ত হাজারো মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে, যাদের অনেকের বিরুদ্ধেই সন্দেহজনক হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। অনেকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আটক রয়েছেন। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ কেউ হেফাজতে নির্যাতন ও চিকিৎসা বঞ্চনার অভিযোগ করেছেন—যা শেখ হাসিনার আমলের ঘটনাগুলোর স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে।