২০ শিশুর মৃত্যু, সিরাপ প্রস্তুতকারক সংস্থার মালিক গ্রেফতার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ০২:০৩ পিএম

মধ্যপ্রদেশসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে প্রায় ২০ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে কাশির ওষুধের জন্য। সেই ভেজাল কোল্ডরিফ কাশির সিরাপ তৈরি করা সংস্থার মালিক রঙ্গনাথনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই কোম্পানির নাম শ্রীসান ফার্মা।
পুলিশ জানিয়েছে, ওষুধ কোম্পানির মালিককে গতকাল রাতে চেন্নাই থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ট্রানজিট রিমান্ডে নেওয়ার পরে তাকে মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়ারা জেলায় নিয়ে যাওয়া হবে। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, মধ্যপ্রদেশ পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করার পরপরই এই গ্রেফতার করা হয়। ইতোমধ্যে কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মধ্যপ্রদেশ পুলিশ রাজ্যে বিষাক্ত সিরাপ খাওয়ার পরে কমপক্ষে ২০ শিশুর মৃত্যুর খবর জানা গেছে।
মধ্যপ্রদেশ ছাড়াও রাজস্থানেও এই সিরাপে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের বেশিরভাগই পাঁচ বছরের কম বয়সি। মৃত শিশুরা ছিন্দওয়াড়া, পান্ধুরনা ও বেতুল জেলার বাসিন্দা। কোল্ডরিফ সিরাপ পান করার পর শিশুদের কিডনিতে সংক্রমণ হয়। এর আগে চলতি মাসের শুরুতে তামিলনাড়ু কর্তৃপক্ষ এই কোল্ডরিফ সিরাপের নমুনায় বিষাক্ত ও ক্ষতিকারক পদার্থ ডাইথিলিন গ্লাইকোল পায়। এরপরই সিরাপটিকে ভেজাল বলে ঘোষণা করেছিল।
শিশুদের মৃত্যুর তদন্তে দেখা গেছে যে সিরাপটিতে ডাইথিলিন গ্লাইকোলের পরিমাণ ৪৮.৬ শতাংশ, যা অনুমোদিত সীমার চেয়ে ৫০০ গুণ বেশি। এই রাসায়নিকটি শিল্প গ্রেডের এবং অল্প পরিমাণেও তা কিডনি নষ্ট করে দেয়। রাজ্যের ওষুধ নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিনা বিলেই নন-ফার্মাসিউটিক্যাল গ্রেড প্রোপিলিন গ্লাইকোল কিনেছিল প্রতিষ্ঠানটি। তামিলনাড়ুর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, অনুপযুক্ত সংরক্ষণাগার এবং ত্রুটিপূর্ণ যন্ত্রপাতির কারণে সুঙ্গুভারচত্রম ইউনিটটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। শ্রীসান ফার্মাসিউটিক্যালস ১৪ বছর ধরে চেন্নাই-বেঙ্গালুরু মহাসড়কে ২০০০ বর্গফুটের একটি ইউনিট চালাচ্ছে। কাঁচামাল পরীক্ষা না করা, ব্যাচ রিলিজে অবহেলা এবং মানের মান উপেক্ষা করার অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, পুদুচেরি ও ওড়িশায় এই সিরাপ সরবরাহ করত সংস্থাটি। তামিলনাড়ু সরকার এই রাজ্যগুলিকে সিরাপ বিক্রি বন্ধ করার জন্য একটি পরামর্শ জারি করেছে।
এদিকে কেন্দ্রীয় সরকার আরও দুটি ব্র্যান্ড - রিলিফ (শেপ ফার্মা) এবং রেসপিফ্রেশ (রেডনেক্স ফার্মাসিউটিক্যালস) নিষিদ্ধ করেছে। মধ্যপ্রদেশে সাত সদস্যের একটি দলের নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়েছে এই ভেজাল সিরাপ সংক্রান্ত তদন্তের জন্য। দলটি চেন্নাইয়ে কোম্পানির নিবন্ধিত অফিসে গিয়েছিল। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে প্রবীণ সোনি নামের এক চিকিৎসককেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি বেশিরভাগ শিশুকে এই সিরাপ খাওয়ার জন্য প্রেস্ক্রিপশনে লিখে দিয়েছিলেন।