আশ্রয়প্রার্থীদের সামাজিক সুবিধা কমাচ্ছে গ্রিস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৩৭ পিএম

সরকার স্বীকৃত শরণার্থীদের জন্য সামাজিক সুবিধা ব্যাপকভাবে কমানোর পরিকল্পনা করছে গ্রিস। দেশটির অভিবাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, আশ্রয় সুবিধার জন্য মোট বরাদ্দ প্রায় ৩০ শতাংশ কমিয়ে আনা হচ্ছে। এতে বার্ষিক খরচের পরিমাণ চারশো মিলিয়ন ইউরো থেকে কমে হচ্ছে ২৮৮ মিলিয়ন ইউরো।
হেলিওস আবাসন কর্মসূচিতে ভর্তুকি বন্ধ করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় শরণার্থীদের আবাসনের নিশ্চয়তা দিতে সরকারকে ভর্তুকি দিতে হয়। এই সুবিধা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
সোমবার (৬ অক্টোবর) গ্রিসের অভিবাসন ও আশ্রয়বিষয়ক মন্ত্রী থানোস প্লেভরিস এবং দেশটির গ্রোথফান্ডের নির্বাহী পরিচালক প্যানাগিওতিস স্ট্যাম্পুলিদিস অভিবাসন সংক্রান্ত পরিষেবাবিষয়ক একটি নতুন চুক্তিতে সই করেছেন। এই উদ্যোগটি সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতির অংশ।
হেলিওস আবাসন কর্মসূচির প্রসঙ্গে প্লেভরিস বলেন, আগে যে অর্থ ভাড়ার সহায়তা হিসেবে দেওয়া হতো, তা এখন পেশাগত প্রশিক্ষণ ও গ্রিক ভাষা শেখার কোর্সে ব্যয় করা হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, যারা গ্রিসে আশ্রয় চান, তাদের ‘কাজের সুযোগ ও কর্মসংস্থানের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তি’ দেওয়া হবে, ভর্তুকি নয়।
প্লেভরিস বলেন, ‘এটাই আমাদের নীতি: যাকে গ্রিসে আশ্রয় দেওয়া হবে, তিনি আর ইউরোপীয় ও গ্রিক করদাতাদের ভর্তুকির ওপর নির্ভর করবেন না। তাকে কাজের সুযোগ দেওয়া হবে; ফলে বর্তমানে এথেন্স শহরের কেন্দ্রে থাকা বাসাগুলো বাজারে ছেড়ে দেওয়া হবে।’
স্বাধীন আবাসন সুবিধাগুলো এথেন্সের কেন্দ্র থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে এবং যাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে, তাদের আর্থিক সহায়তা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে শুধু ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাঠামোর আওতায় মৌলিক প্রয়োজন পূরণে সীমিত রাখা হবে।
তিনি বলেন, ভবিষ্যতে আশ্রয়প্রার্থীদের সহায়তা শুধু ‘অত্যাবশ্যকীয় প্রয়োজন’ মেটানোর জন্যই সীমিত থাকবে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য জানাননি মন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোতাকিসের নেতৃত্বাধীন রক্ষণশীল সরকার বলছে, এই পদক্ষেপগুলো ইউরোপীয় নির্দেশনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এর মাধ্যমে গ্রিসকে অভিবাসনের গন্তব্য হিসেবে কম আকর্ষণীয় করে তোলা হবে এবং একইসঙ্গে সরকারি ব্যয় কমানো হবে।
প্রত্যাখ্যাত আশ্রয়প্রার্থীদের জন্যও কঠোর আইন প্রণয়ন করেছে দেশটি। আবেদন প্রত্যাখ্যান হওয়ার পর কোনো আশ্রয়প্রার্থী যদি গ্রিসে থাকেন এবং স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফিরে না যা, তাহলে তাকে অন্তত তিন বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
এই কারাদণ্ড স্থগিত বা কমানো হতে পারে, যদি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফিরে যেতে সম্মত হন। অভিবাসন মন্ত্রণালয় বলছে, ‘ভবিষ্যতে প্রত্যাখ্যাত আশ্রয়প্রার্থীদের সামনে মাত্র দুটি পথ: কারাবাস অথবা প্রত্যাবর্তন।’
সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস