Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

সংঘাতে মার্কিন সম্পৃক্ততা হবে ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’: ইরান

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৫, ০৬:৫০ পিএম

সংঘাতে মার্কিন সম্পৃক্ততা হবে ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’: ইরান
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, আমাদের জনগণের ওপর যখন বোমা হামলা করা হচ্ছে তখন আমরা আলোচনায় যেতে পারি না। তিনি দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এই আগ্রাসনে প্রথম দিন থেকেই যুক্ত আছে। যদিও এই দাবির পক্ষে তিনি কোনও প্রমাণ দেননি।

ইরান-ইসরায়েল চলমান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা ‘খুবই বিপজ্জনক’ হবে বলে সতর্ক করেছেন আরাঘচি। যদিও ইস্তাম্বুলে সাংবাদিকদের সাথে আলাপে, কূটনৈতিক আলোচনা চালিয়ে যেতে রাজি থাকার কথা জানিয়েছেন।

অবশ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সপ্তাহের শুরুতে ইরানে হামলার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছিলেন বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু ইরান যদি তার পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করতে রাজি হয়, তাহলে তিনি হামলা থেকে বিরত থাকবেন বলেও জানিয়েছেন।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের পারমাণবিক কর্মসূচির জন্য আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধানের পথ খুঁজতে আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত। ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে এমন কথিত অভিযোগ নিয়ে বছরের পর বছর উত্তেজনার পর ২০১৫ সালে, বিশ্বশক্তিগুলোর একটি পক্ষের সাথে নিজের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে একটি দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতে সম্মত হয়েছিল।

আরাঘচি আরও বলেন, কূটনীতি অতীতেও কাজ করেছে এবং ভবিষ্যতেও কাজ করতে পারে। তবে কূটনীতিতে ফিরে আসতে হলে আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে।

এদিকে, ইসরায়েলে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর কৌশলে পরিবর্তন এনেছে ইরান। দেশটির সামরিক বাহিনীর জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা এই দাবি জানিয়ে বলেছেন, ইরান এখন আর আগের মতো বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে না। বরং আগের তুলনায় অধিক উন্নত ও নির্ভুল নিশানায় আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইসরায়েলি সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে।

শনিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অজ্ঞাত ওই কর্মকর্তা ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র মজুদ ফুরিয়ে আসছে বলে ইসরায়েল যে দাবি করেছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি।

গত কয়েক দিন ধরে ইসরায়েল বলে আসছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র মজুদ এখনও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে থাকলেও তাদের চালানো বিমান হামলায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণকারী যন্ত্রের অন্তত ৫০ শতাংশ ধ্বংস হয়েছে। এর মাধ্যমে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর সক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে।

ইরানের সামরিক বাহিনী বর্তমানে আরও উন্নত প্রযুক্তির নিখুঁত নিশানায় আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইসরায়েলে হামলা চালাচ্ছে বলে দাবি করেছেন ইরানি ওই কর্মকর্তা। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীও (আইডিএফ) ইরানের এই দাবির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ইসরায়েলের হোম ফ্রন্ট কমান্ড বলেছে, ইরান এমন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করছে, যেগুলো ক্লাস্টার বোমা বহনে সক্ষম।

এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের ওয়ারহেড বা বোমা নির্দিষ্ট উচ্চতায় (প্রায় ৭ কিলোমিটার) পৌঁছে অন্তত ২০টি বিস্ফোরক অংশে ভাগ হয়ে যায় এবং প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে।

ইরানি ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘‘আমরা একটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছি এবং তা সহজেই মার্কিন থাড, প্যাট্রিয়ট, অ্যারো ৩, অ্যারো ২, ডেভিডস স্লিং ও আয়রন ডোমের সব প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে নির্ধারিত লক্ষ্যে আঘাত করেছে।’’ তবে তিনি সেই ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্যবস্তুর নাম প্রকাশ করেননি।

তিনি বলেন, ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা কমে যাওয়ায় খুশি না হয়ে ইসরায়েলের নীরব এবং ইরানের নতুন শক্তির ভারসাম্যের সামনে কেবল দর্শকের ভূমিকায় থাকা উচিত।

এদিকে, গত সপ্তাহে সংঘাতের শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ইরানে অন্তত ৪৩০ জন নিহত হয়েছেন বলে শনিবার ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম নউর নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, গত ১৩ জুন সংঘাতের শুরুর পর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৩০ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছেন আরও কমপক্ষে সাড়ে ৩ হাজার মানুষ।
সূত্র: বিবিসি, সিএনএন।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার