Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

ইরান-ইসরাইল সংঘাতে যেসব প্রভাব পড়তে পারে পাকিস্তানে

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৫, ০৩:১২ পিএম

ইরান-ইসরাইল সংঘাতে যেসব প্রভাব পড়তে পারে পাকিস্তানে

ইরানের প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানের ভূ-রাজনীতি, অর্থনীতি এবং সুরক্ষা ক্ষেত্রে ইরান-ইসরাইলের সংঘর্ষের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকরা। কেননা, ইরানের সঙ্গে নয়শ নয় কিলোমিটারের দীর্ঘ সীমান্ত ভাগ করছে পাকিস্তান। এর জন্য সংঘর্ষের পরিস্থিতিতে প্রায় সব চেক পয়েন্টই বন্ধ রেখেছে ইসলামাবাদ।

পাকিস্তানের বেলুচিস্তান অঞ্চলে প্রায় নয়শ নয় কিলোমিটারের সীমান্ত রয়েছে ইরানের সঙ্গে। সোমবার অনির্দিষ্টকালের জন্য ইরান-পাকিস্তান সীমান্ত পারাপারের একাধিক অঞ্চল বন্ধ করেছে পাকিস্তান। 

ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ পশ্চিম বেলুচিস্তানের তাফতান এবং গাব-রিমদান ক্রসিং টি পাকিস্তানের নাগরিকদের দেশে ফেরত আনার জন্য খুলে রাখা হয়েছে। বুধবার শতাধিক ইরানবাসী পাকিস্তানি নাগরিক এই পথে নিজের দেশে ফেরত এসেছেন। 

পাকিস্তানের সেনা প্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সফরে। বুধবার তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করবেন। ইরান-ইসরাইল সংঘর্ষের মধ্যে এই সাক্ষাৎ খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। 

ইরান-পাকিস্তানের সম্পর্ক কেমন? 

সুন্নিপ্রধান পাকিস্তানের সঙ্গে শিয়া অধ্যুষিত ইরানের সম্পর্ক সরলরৈখিক নয়। বেলুচিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের প্রভাবও আছে এই অঞ্চলে। বেলুচিস্তান লিবারেশান আর্মি দাবি করে পাকিস্তান অন্যায়ভাবে এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস করছে। 

এই অবস্থায়, ইসরাইল-ইরানের যুদ্ধের প্রভাব খুব তাড়াতাড়ি পাকিস্তানের ওপর পরবে বলে মনে করছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাকিস্তান বিশেষজ্ঞ রাজা রুমি। 

ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, পাকিস্তানকে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে হবে। এই কাজ সহজ নয়। 

তেহরানে ইসলামী রাষ্ট্রের পতন ঘটলে তার প্রভাব পড়বে পাকিস্তানে। অন্যদিকে, বেলুচিস্তানের আন্দোলনের প্রভাব পরবে ইরান-পাকিস্তান সীমান্তে। 

লন্ডনের সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ গফর হুসেন বলেন, ইরানের বালোচ অঞ্চলেও অসন্তোষ রয়েছে। তেহরানের পতন ঘটলে এই অঞ্চলেও স্বশাসনের দাবি উঠবে। 

রুমি বলেন, সীমান্ত নিশ্ছিদ্র রেখে ইরানের সঙ্গে সংবেদনশীল কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখা উচিত পাকিস্তানের। 

অর্থনীতিতে প্রভাব 

হরমুজ প্রণালী সারা পৃথিবীতেই তেল সরবরাহের একটি গুরুত্বপূর্ণ জলপথ। ইরান সংলগ্ন এই অঞ্চলে যুদ্ধের প্রভাবে বাড়বে নিরাপত্তা বলয়। রুমির মতে, ক্রমে এই অঞ্চলে পড়তে পারে যুদ্ধের প্রভাব। তার সরাসরি প্রভাব পড়বে মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল রপ্তানিতে। বাড়তে পারে তেলের দামও। 

রুমি বলেন, সারা পৃথিবীর মতো পাকিস্তানেও এর সাংঘাতিক প্রভাব পরবে। তিনি মনে করিয়ে দেন, পাকিস্তান ইতিমধ্যেই মুদ্রাস্ফীতি, চলতি মুদ্রার মূল্যহ্রাস এবং অপর্যাপ্ত এনার্জি জনিত সমস্যাতে ভুগছে। 

সম্প্রদায়ের সংঘাত 

সুন্নিপ্রধান পাকিস্তানে ১৫ শতাংশ শিয়া জনগোষ্ঠী বাস করেন। রুমির মতে ইরানে যুদ্ধের কারণে শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষ বিদ্বেষের শিকার হতে পারে। তিনি বলেন, যুদ্ধের ব্যাখ্যা যদি অভিসন্ধিমূলকভাবে ধর্ম এবং সম্প্রদায় দিয়ে উপস্থাপন করা শুরু হয়, তবে তার খুব খারাপ পরিণতি হবে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার