Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

হোয়াটসঅ্যাপ দিয়ে ইরানিদের টার্গেট করছে ইসরাইল

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৫, ০১:০৩ এএম

হোয়াটসঅ্যাপ দিয়ে ইরানিদের টার্গেট করছে ইসরাইল

ইরান-ইসরাইল উত্তেজনার মধ্যে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারে নাগরিকদের মোবাইল ফোন থেকে হোয়াটসঅ্যাপ মুছে ফেলতে সরাসরি আহ্বান জানিয়েছে তেহরান। 

মঙ্গলবার বিকালে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক বার্তায় ইরানি নাগরিকদের হোয়াটসঅ্যাপ মোবাইল থেকে মুছে ফেলার আহ্বান জানানো হয়েছে। 

ইরানের দাবি, এই জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপটি ব্যবহার করেই ইসরাইল তাদের নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে। যদিও কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ উপস্থাপন করেনি দেশটি। 

তবে চলমান সংঘাতের মধ্যে দেওয়া এই সতর্কবার্তায় মেসেজিং প্ল্যাটফর্মটির মালিকানা সংস্থা মেটা গভীর ‘উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে। এপি। 

ইরান দাবি করছে, হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের তথ্য গোপনে সংগ্রহ করে তা বিদেশি শক্তির হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগকে ‘মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’ বললেও, ইরান এটিকে জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যু হিসাবেই দেখছে। 

নেটব্লকসের তথ্য অনুযায়ী, ইরানের নির্দেশনার পর ইতিমধ্যেই দেশটির ইন্টারনেট ব্যবহার ৭৫ শতাংশ কমে গেছে। যা ‘সংঘাতের সময় জনগণের তথ্য প্রাপ্তি সীমিত করতে পারে’। তবে এই নিষেধাজ্ঞা ইরানের নাগরিকদের সঙ্গে বৈশ্বিক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা হিসাবে দেখা হচ্ছে। 

বিশেষ করে, যখন দেশটির অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি ও যুদ্ধবিষয়ক তথ্য নিয়ন্ত্রণ জরুরি হয়ে উঠেছে। ইরান কোনো প্রকাশ্য প্রমাণ প্রদান না করায় এই অভিযোগগুলোর স্বাধীনভাবে মূল্যায়ন করা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। 

এ প্রসঙ্গে মেটার মুখপাত্র সিবিএস নিউজকে দেওয়া বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ইরানের মিথ্যা দাবিগুলো যেন আমাদের পরিষেবা বন্ধের অজুহাত না হয়, তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো সব মেসেজ এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপ্টেড। অর্থাৎ প্রেরক ও প্রাপক ছাড়া কেউই এসব  বার্তা দেখতে পায় না। এমনকি হোয়াটসঅ্যাপও না। আমরা ব্যবহারকারীদের সঠিক লোকেশন ট্র্যাক করি না, বার্তাপ্রেরণের লগ রাখি না বা ব্যক্তিগত বার্তা মনিটর করি না। আমরা কোনো সরকারকে গণ তথ্য সরবরাহ করি না।’ 

যদিও হোয়াটসঅ্যাপের শক্তিশালী গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তবে এটি সম্পূর্ণ অপ্রবেশযোগ্য নয়। ইসরাইলেরই একটি নথিভুক্ত ইতিহাস রয়েছে অত্যাধুনিক সাইবার অপারেশন পরিচালনার। ২০১৯ সালে এনএসও গ্রুপের পেগাসাস স্পাইওয়্যার দিয়ে ১,৪০০ জনের ডেটা হ্যাক করে দেশটি। 

ভুক্তভোগীদের মধ্যে সাংবাদিক, কর্মী ও রাজনীতিবিদরা ছিলেন। এই হ্যাকিংয়ের জন্য একটি মার্কিন ফেডারেল আদালত নেসো গ্রুপকে হোয়াটসঅ্যাপ ও মেটাকে প্রায় ১৭০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছে। গত মাসেই এই নির্দেশনা দেন আদালত। 

সম্প্রতি আরেকটি ইসরাইলি কোম্পানি প্যারাগন সলিউশন্স প্রায় ১০০টি হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট টার্গেট করেছে। এই কোম্পানি ডি-এনক্রিপ্ট হওয়ার পর ব্যক্তিগত যোগাযোগ অ্যাক্সেস করতে উন্নত স্পাইওয়্যার ব্যবহার করেছে। বিশ্বের শীর্ষ ১০ সাইবার নিরাপত্তা কোম্পানির মধ্যে ৭টিরই গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্রই রয়েছে ইসরাইলে। দেশটির স্টার্টআপগুলো প্রায়শই নতুন আক্রমণাত্মক ও প্রতিরক্ষামূলক প্রযুক্তি বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ইসরাইলি কোম্পানিগুলোর নাম বারবারই হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। 

উল্লেখ্য, হোয়াটসঅ্যাপ হলো মেটার মালিকানাধীন একটি বিনামূল্যের মেসেজিং অ্যাপ। বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩ বিলিয়ন ব্যবহারকারী নিয়ে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে এটি। ইন্টারনেটের মাধ্যমে এই অ্যাপ দিয়ে টেক্সট মেসেজ, কল এবং ছবিসহ বিভিন্ন তথ্য আদান-প্রদান করা যায়।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার