Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

ইসরাইল আসলে কী অর্জন করতে চায়?

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২৫, ০৬:০৩ পিএম

ইসরাইল আসলে কী অর্জন করতে চায়?

গাজা, লেবানন, সিরিয়া ও ইয়েমেনের পর যুদ্ধবাজ ইসরাইল গত ১৩ জুন থেকে ইরানে হামলা চালানো শুরু করে। এরপর থেকে একটা বড় প্রশ্ন থেকেই গেছে— তাহলো, ইসরাইলের চূড়ান্ত লক্ষ্য আসলে কী?

ইসরাইলি সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, এটি ছিল একটি পূর্বাভাসভিত্তিক হামলা। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ক্ষতিগ্রস্ত করাই ছিল এর মূল লক্ষ্য। কারণ ইরান নাকি ‘পারণমাবিক অস্ত্র তৈরির দ্বারপ্রান্তে’ পৌঁছে যাচ্ছিল।

যদিও তারা এ দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি। বরং যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাম্প্রতিক মূল্যায়নে বলা হয়েছে, ইরান এখনো তার পারমাণবিক কর্মসূচিকে অস্ত্রায়নের সিদ্ধান্ত নেয়নি। ২০০৩ সালেই তারা এ পরিকল্পনা ত্যাগ করেছে।

পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির (এনপিটি) সদস্য রাষ্ট্র ইরান বলে আসছে, তারা শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক প্রযুক্তির অধিকার রাখে। একই সঙ্গে তারা বরাবরই পরমাণু অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা করার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

অন্যদিকে, ইসরাইল নিজে তো এনপিটি-এর সদস্য নয়-ই। উলটো ধারণা করা হয় যে, তাদের নিজস্ব পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। যুদ্ধবাজ হিসেবে খ্যাত সেই দেশটি বরাবরই ইরানের এসব বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে এসেছে এবং বার বার হামলার হুমকি দিয়েছে।

এরই জেরে গত ১৩ জুন ইসরাইলি হামলা শুরুর ঠিক আগের দিন, ১২ জুন আন্তর্জাতিক পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএ জানায়, ইরান দুই দশকে প্রথমবারের মতো তার অপ্রসারণ বাধ্যবাধকতা ভেঙেছে।

মূলত বিশেষ উদ্বেগ তৈরি হয়েছে ইরানের সমৃদ্ধকৃত ইউরেনিয়ামের মজুদের পরিমাণ নিয়ে। যা একদিকে যেমন বিদ্যুৎ চুল্লির জ্বালানি তৈরি করতে পারে, তেমনি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতেও ব্যবহারযোগ্য।

আইএইএ আরও জানায়, ইরান ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধতায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে, যা পরমাণু অস্ত্রমানের কাছাকাছি। উপরন্তু এতে অন্তত ৯টি পারমাণবিক বোমা তৈরির উপযোগী উপাদান রয়েছে।

এসবের জেরেই ইসরাইল ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলো—যেমন নাতানজ ও ইসফাহানে হামলা চালিয়েছে। এছাড়াও ইরানের সামরিক ঘাঁটি, জ্বালানি অবকাঠামো, সরকারি ভবন ও আবাসিক এলাকাও ইসরাইলের লক্ষ্যবস্তু হয়েছে।

তবে এখনো ফরদোর ওপর কোনো হামলা হয়নি—সেখানে একটি প্রধান পারমাণবিক কেন্দ্র গভীর পাহাড়ের নিচে অবস্থিত। তাছারা ইসরাইলের কাছেও এমন বোমা নেই, যা সেখানে আঘাত হানতে পারে। তা আছে কেবল যুক্তরাষ্ট্রের কাছে।

ইসরাইলে পালটা হামলা চালানো ইরান বলছে, এটি একটি আগ্রাসী যুদ্ধ এবং তাদের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে।

এ অবস্থায় যদি যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুদ্ধে জড়ায়, তাহলে এর ফলে বড় পরিসরের সংঘাত শুরু হতে পারে। কারণ ইরান হুঁশিয়ারি দিয়েছে, তারা আঞ্চলিক মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালাবে—এবং ইরানের মিত্র বাহিনীগুলো, যেমন ইরাক ও ইয়েমেনের গোষ্ঠীগুলোও এতে জড়াতে পারে। সূত্র: বিবিসি

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার