সীমান্তে আশ্রয়প্রার্থীদের ফিরিয়ে দেওয়া অব্যাহত রাখবে জার্মানি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৫, ০৩:০২ পিএম

জার্মানির একটি প্রশাসনিক আদালত ‘অবৈধ’ বলে রায় দেওয়ার পরও দেশটির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস বলেছেন, সীমান্ত থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের ফিরিয়ে দেওয়া অব্যাহত রাখবে তার সরকার।
আদালতের রায়ের পর নিজের প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছেন চ্যান্সেলর ম্যার্ৎস।
কী আছে আদালতের রায়ে?
গত ৯ মে পোল্যান্ড হয়ে জার্মানির পূর্বাঞ্চলীয় একটি রেলস্টেশনে আসেন সোমালিয়ার তিন নাগরিক। সেখান থেকেই তাদের পোল্যান্ডে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জার্মানির রাজধানী বার্লিনের প্রশাসনিক আদালত বলেছে, আশ্রয়প্রার্থীদের এভাবে ফিরিয়ে দেওয়া আইন বর্হিভূত।
আদালত আরও বলেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডাবলিন পদ্ধতি অনুসরণ না করে সীমান্ত থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত পাঠানো অবৈধ।
“জার্মান ভূখণ্ডের কোনো সীমান্তে আশ্রয় চাওয়া ব্যক্তিদের” ডাবলিন পদ্ধতি অনুযায়ী তাদের আশ্রয়ের আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্ব কোন দেশের তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত “ফেরত পাঠানোর নিয়ম নেই” বলে জানিয়েছে জার্মান আদালত।
জার্মানির নতুন চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎসের জন্য এটা একটা বড় ধাক্কা। কারণ, অভিবাসনের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন তিনি। গত মাসে দায়িত্ব নেওয়ার পর অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ এবং সীমান্তে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের সেখান থেকেই ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।
যা বললেন চ্যান্সেলর
স্থানীয় সরকারের এক কংগ্রেসে যোগ দিয়ে মঙ্গলবার চ্যান্সেলর ম্যার্ৎস বলেন, এই রায় “সম্ভবত কৌশলগত সুযোগকে আরও সীমিত করে দিয়েছে”। ম্যার্ৎস বলেন, “কিন্তু সুযোগ এখনও আছে। আমরা জানি, আমরা এখনও মানুষকে প্রত্যাখ্যান করতে পারি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা অবশ্যই ইউরোপীয় আইনের কাঠামোর মধ্যে থেকে এটি করব। আমাদের দেশে জননিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য এবং শহর ও পৌরসভার ওপর বোঝা কমানোর জন্যও এটি করব।”
অভিবাসন জার্মান রাজনীতিতে বহুল আলোচিত। ফলে নতুন করে যারা জার্মানিতে আশ্রয় চাইতে আসছেন তাদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে ফেব্রুয়ারির পার্লামেন্ট নির্বাচনে। যে কারণেই অতি-ডানপন্থি ও অভিবাসনবিরোধী দল অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) ভোটের হিসাবে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসে।
২০১৫ সালে ইউরোপমুখী অভিবাসন ঢলের সময় জার্মানিতে “শরণার্থীদের স্বাগত” জানানোর সংস্কৃতি শুরু করেন ম্যার্ৎসের পূর্বসূরী আঙ্গেলা ম্যার্কেল। এরপর দেশটির সবশেষ পার্লামেন্ট নির্বাচনে এ ধরনের বড় পরিবর্তন দেখা গেছে।
এ বছরের ৬ মে জার্মানির চ্যান্সেলর হিসাবে দায়িত্ব নেন রক্ষণশীল সিডিইউ/সিএসইউ নেতা ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই সীমান্তে কড়া নজরদারি এবং সীমান্ত থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের ফিরিয়ে দেওয়ার মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নেয় তার সরকার।
সমালোচনার মুখে সরকার
আদালতের রায়ের পর সরকারের সমালোচকেরা আবারও বলছেন, অভিবাসন ইস্যুতে বর্তমান জোট সরকারের পদক্ষেপ কার্যকর নয়। সরকারের সমালোচনা করে বিরোধী দল এএফডির সহপ্রধান অ্যালিস ভাইডেল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, জার্মানির আশ্রয় নীতি মৌলিকভাবে ত্রুটিপূর্ণ।
তিনি বলেন, “এএফডিকে সরকারে আসতে দিন। আমরা এই ত্রুটিগুলো দূর করে অনিয়মিত অভিবাসীদের দ্রুত ফেরত পাঠাবো।”
বাম দল ডি লিংকে ম্যার্ৎস সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছে বলেছে, “যারা শরণার্থীদের অধিকারকে অবহেলা করে, তারা সবার অধিকারকে বিপন্ন করে।”
জোট সরকারের অংশ সামাজিক গণতান্ত্রিক দল এসপিডি থেকে বিচারমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়া স্টেফানি হুবিশ বলেছেন, আদালতের রায় মানতে হবে। অভিবাসন ইস্যুতে উদারপন্থি হিসাবে পরিচিত রাজনৈতিক দল এসপিডির এই নেতা বলেন, “এটা এখন স্পষ্ট হয়ে গেছে, বিচার বিভাগকে আর বোঝানো সহজ হবে না, এই প্রত্যাখ্যানগুলো বৈধ।”
জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা হুমকির অজুহাতে সীমান্তে আশ্রয়প্রার্থীদের ফিরিয়ে দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে, আদালতের রায়ে তা কার্যকর করা কঠিন বলেও মনে করেন সমালোচকেরা। ম্যার্ৎস সরকার অবশ্য যুক্তি দিচ্ছে, অনিয়মিত অভিবাসনের কারণে জার্মানির অবকাঠামো এবং স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় চাপ তৈরি হয়েছে।
জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডোব্রিন্ডট নতুন অভিবাসন নীতি বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি গত ২ জুন জানিয়েছেন, আদালতের রায়টি সুনির্দিষ্ট একটি মামলার জন্য প্রযোজ্য এবং সরকার নতুন অভিবাসন নীতির প্রয়োগ অব্যাহত রাখবে।
ডোব্রিন্ডট বলেন, “আমরা পুশব্যাক অব্যাহত রাখবো। আমরা মনে করি আমাদের কাছে এর পক্ষে আইনি যুক্তি রয়েছে।” ইনফোমাইগ্রেন্টস
আদালতের রায়ের পর নিজের প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছেন চ্যান্সেলর ম্যার্ৎস।
কী আছে আদালতের রায়ে?
গত ৯ মে পোল্যান্ড হয়ে জার্মানির পূর্বাঞ্চলীয় একটি রেলস্টেশনে আসেন সোমালিয়ার তিন নাগরিক। সেখান থেকেই তাদের পোল্যান্ডে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জার্মানির রাজধানী বার্লিনের প্রশাসনিক আদালত বলেছে, আশ্রয়প্রার্থীদের এভাবে ফিরিয়ে দেওয়া আইন বর্হিভূত।
আদালত আরও বলেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডাবলিন পদ্ধতি অনুসরণ না করে সীমান্ত থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত পাঠানো অবৈধ।
“জার্মান ভূখণ্ডের কোনো সীমান্তে আশ্রয় চাওয়া ব্যক্তিদের” ডাবলিন পদ্ধতি অনুযায়ী তাদের আশ্রয়ের আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্ব কোন দেশের তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত “ফেরত পাঠানোর নিয়ম নেই” বলে জানিয়েছে জার্মান আদালত।
জার্মানির নতুন চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎসের জন্য এটা একটা বড় ধাক্কা। কারণ, অভিবাসনের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন তিনি। গত মাসে দায়িত্ব নেওয়ার পর অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ এবং সীমান্তে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের সেখান থেকেই ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।
যা বললেন চ্যান্সেলর
স্থানীয় সরকারের এক কংগ্রেসে যোগ দিয়ে মঙ্গলবার চ্যান্সেলর ম্যার্ৎস বলেন, এই রায় “সম্ভবত কৌশলগত সুযোগকে আরও সীমিত করে দিয়েছে”। ম্যার্ৎস বলেন, “কিন্তু সুযোগ এখনও আছে। আমরা জানি, আমরা এখনও মানুষকে প্রত্যাখ্যান করতে পারি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা অবশ্যই ইউরোপীয় আইনের কাঠামোর মধ্যে থেকে এটি করব। আমাদের দেশে জননিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য এবং শহর ও পৌরসভার ওপর বোঝা কমানোর জন্যও এটি করব।”
অভিবাসন জার্মান রাজনীতিতে বহুল আলোচিত। ফলে নতুন করে যারা জার্মানিতে আশ্রয় চাইতে আসছেন তাদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে ফেব্রুয়ারির পার্লামেন্ট নির্বাচনে। যে কারণেই অতি-ডানপন্থি ও অভিবাসনবিরোধী দল অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) ভোটের হিসাবে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসে।
২০১৫ সালে ইউরোপমুখী অভিবাসন ঢলের সময় জার্মানিতে “শরণার্থীদের স্বাগত” জানানোর সংস্কৃতি শুরু করেন ম্যার্ৎসের পূর্বসূরী আঙ্গেলা ম্যার্কেল। এরপর দেশটির সবশেষ পার্লামেন্ট নির্বাচনে এ ধরনের বড় পরিবর্তন দেখা গেছে।
এ বছরের ৬ মে জার্মানির চ্যান্সেলর হিসাবে দায়িত্ব নেন রক্ষণশীল সিডিইউ/সিএসইউ নেতা ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই সীমান্তে কড়া নজরদারি এবং সীমান্ত থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের ফিরিয়ে দেওয়ার মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নেয় তার সরকার।
সমালোচনার মুখে সরকার
আদালতের রায়ের পর সরকারের সমালোচকেরা আবারও বলছেন, অভিবাসন ইস্যুতে বর্তমান জোট সরকারের পদক্ষেপ কার্যকর নয়। সরকারের সমালোচনা করে বিরোধী দল এএফডির সহপ্রধান অ্যালিস ভাইডেল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, জার্মানির আশ্রয় নীতি মৌলিকভাবে ত্রুটিপূর্ণ।
তিনি বলেন, “এএফডিকে সরকারে আসতে দিন। আমরা এই ত্রুটিগুলো দূর করে অনিয়মিত অভিবাসীদের দ্রুত ফেরত পাঠাবো।”
বাম দল ডি লিংকে ম্যার্ৎস সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছে বলেছে, “যারা শরণার্থীদের অধিকারকে অবহেলা করে, তারা সবার অধিকারকে বিপন্ন করে।”
জোট সরকারের অংশ সামাজিক গণতান্ত্রিক দল এসপিডি থেকে বিচারমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়া স্টেফানি হুবিশ বলেছেন, আদালতের রায় মানতে হবে। অভিবাসন ইস্যুতে উদারপন্থি হিসাবে পরিচিত রাজনৈতিক দল এসপিডির এই নেতা বলেন, “এটা এখন স্পষ্ট হয়ে গেছে, বিচার বিভাগকে আর বোঝানো সহজ হবে না, এই প্রত্যাখ্যানগুলো বৈধ।”
জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা হুমকির অজুহাতে সীমান্তে আশ্রয়প্রার্থীদের ফিরিয়ে দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে, আদালতের রায়ে তা কার্যকর করা কঠিন বলেও মনে করেন সমালোচকেরা। ম্যার্ৎস সরকার অবশ্য যুক্তি দিচ্ছে, অনিয়মিত অভিবাসনের কারণে জার্মানির অবকাঠামো এবং স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় চাপ তৈরি হয়েছে।
জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডোব্রিন্ডট নতুন অভিবাসন নীতি বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি গত ২ জুন জানিয়েছেন, আদালতের রায়টি সুনির্দিষ্ট একটি মামলার জন্য প্রযোজ্য এবং সরকার নতুন অভিবাসন নীতির প্রয়োগ অব্যাহত রাখবে।
ডোব্রিন্ডট বলেন, “আমরা পুশব্যাক অব্যাহত রাখবো। আমরা মনে করি আমাদের কাছে এর পক্ষে আইনি যুক্তি রয়েছে।” ইনফোমাইগ্রেন্টস