নন্দিত অভিনেতা মোশাররফ করিম। তার দর্শকপ্রিয় নাটকের শেষ নেই। সিনেমা অঙ্গনেও করেছেন বাজিমাত। শুধু দেশ নয়, দেশের বাইরেও তিনি তার অভিনয় দিয়ে জয় করেছেন দর্শকদের মন।
এবার এই জনপ্রিয় অভিনেতা স্ট্যান্ড–আপ কমেডিয়ান। লোক হাসিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তবে কি নতুন পেশা বদলালেন মোশাররফ করিম? বেছে নিলেন নতুন পেশা? না, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকি অরিজিনাল ‘ডিমলাইট’ ফিল্মে স্ট্যান্ড–আপ কমেডিয়ানের চরিত্রে দেখা যাবে অভিনেতাকে। এটি নির্মাণ করেছেন শরাফ আহমেদ জীবন। ওয়েব ফিল্মটির সহ–প্রযোজনায় আছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ছবিয়াল।

২০ নভেম্বর চরকির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জানানো হয়েছিল, ‘মোশাররফ করিম ফিরছেন আরও এক নতুন রূপে! কিন্তু কী নিয়ে?’ দর্শকদের আগ্রহ মেটাতে ২৩ নভেম্বর আরেকটি পোস্টে জানানো হয়, ‘লাইফটাই একটা জোক, আর সবচেয়ে বড় জোক মিডলাইফ ক্রাইসিস।’ এই দুটি পোস্ট থেকে ‘ডিমলাইট’ ফিল্মটি নিয়ে ধারণা করা যায়।
সেনসেশন কনডমস প্রেজেন্টস চরকি অরিজিনাল ফিল্ম ‘ডিমলাইট’–এ কমেডিকে আশ্রয় করে একজন পুরুষ চরিত্রের মিডলাইফ ক্রাইসিসের মতো সমস্যা দেখানোর চেষ্টা আছে বলে জানান নির্মাতা শরাফ আহমেদ জীবন।
তিনি বলেন, প্রচুর আলো এবং ঘুটঘুটে অন্ধকারে কিছু দেখা যায় না। কিছু দেখতে চাইলে পরিমিত আলো প্রয়োজন। আমাদের জীবনে নানা সমস্যা আছে, সেগুলোর কিছু দেখা যায় কিছু দেখা যায় না। সেই না দেখতে পাওয়া সমস্যাগুলো সহজভাবে দর্শকদের দেখাতে প্রয়োজন ‘‘ডিমলাইট”। আশা করছি ফিল্মটি দেখলে দর্শকরা ডিমলাইটের গুরুত্ব বুঝতে পারবেন।
‘ডিমলাইট’ চরকির মিনিস্ট্রি অফ লাভ প্রজেক্টের ফিল্ম। ২৫ নভেম্বর প্রকাশিত অফিসিয়াল পোস্টারে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। পোস্টারের ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, মিডলাইফ ক্রাইসিস থুক্কু ডিমলাইট ক্রাইসিস!
মিডলাইফ ক্রাইসিসটাকেই প্রতিকীরূপে ডিমলাইট ক্রাইসিস হিসেবে বলার চেষ্টা করেছেন তারা। আর এই ক্রাইসিসে ভোগা মানুষটি হলেন স্ট্যান্ড–আপ কমেডিয়ান মোশাররফ করিম। এর গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন শরাফ আহমেদ জীবন। ‘ডিমলাইট’–এর গল্প, সংলাপ চিত্রনাট্য করেছেন নাহিদ হাসনাত।
সম্পর্কের নানা দিকের গল্প বলার প্রয়াস মিনিস্ট্রি অফ লাভ প্রজেক্টটির যাত্রা। স্বাভাবিকভাবে ‘ডিমলাইট’–এও সম্পর্কের গল্প বলা হয়েছে। যেটি প্রধানত এগিয়ে নিয়ে গেছেন মোশাররফ করিম। আর সেই পথে তিনি পেয়েছেন তানজিকা আমিন, পারসা ইভানার মতো অভিনয়শিল্পীদের। গল্পটি শুনে কেমন লেগেছিল তানজিকা আমিনের? উত্তরে বলেন, আমার মনে হয়েছিল এই গল্পটা এ সময়ের এবং এখনই বলা উচিৎ। এমন ঘটনা আমার যেমন দেখা–জানা, দর্শকদেরও চেনা, জীবনেরই গল্প। তাই কাজটি করতেও আগ্রহী হয়েছি।
আর পারশা ইভানা বলেন, আমার মনে হয়েছে খুব ফ্রেশ একটা গল্প। যেখানে কনফিউশন, হিউমার, ক্রাইসিস আছে এবং রিলেটেবল। আমরা যে লাইফটা লিড করি সেটারই গল্প বলতে পারেন, সাধারণ ও সহজ।’
গল্পটিকে মোশাররফ করিম দেখছেন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে। তার মতে, জীবনে নানা কিছুর আবরণ পড়ে। নিত্য নৈমিত্তিক আবরণ থেকে শুরু করে চিনি, টুথপেস্ট, বাচ্চার স্কুলের বেতনের আবরণ। সেই আবরণে ঢাকা পরে সম্পর্ক। সেখানে থাকে না ফুল বা ফুলের ঘ্রাণ।
মোশাররফ করিম বলেন, এসব আবরণ ধীরে ধীরে ভালোবাসাকে ঢেকে ফেলে, প্রেমটাকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। আবার কিছুর ধাক্কার প্রয়োজন হয় এবং বোঝা যায় যে প্রাণভোমরাটা কোথায়। জীবনের মোরাল জিনিসটা খুব শান্ত, ঠান্ডা মেজাজি।
মিনিস্ট্রি অফ লাভ–এর পঞ্চম সিনেমা মুক্তির ১ বছর পর মুক্তি পেতে যাচ্ছে ষষ্ঠ সিনেমা। এত সময় লাগার কারণ হিসেবে চরকির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রেদওয়ান রনি (Redoan Rony) বলেন, মিনিস্ট্রি অফ লাভ–এর সবগুলো প্রজেক্ট দর্শকরা পছন্দ করেছেন। আগামী প্রজেক্টগুলোও যেন তাদের পছন্দের তালিকায় থাকে, সেজন্যই সময় নিয়ে কাজ করা। তাই ষষ্ঠ ফিল্ম আসতে কিছুটা সময় লাগল। আমার বিশ্বাস ভালো কনটেন্ট দেখতে দর্শকরাও অপেক্ষা করতে রাজি আছেন। ‘‘ডিমলাইট” অপেক্ষা ও প্রত্যাশা পূরণের মেলবন্ধন ঘটাবে।
‘ডিমলাইট’–এর সহ প্রযোজক ছবিয়ালের কর্ণধার নুসরাত ইমরোজ তিশা (Nusrat Imrose Tisha) বলেন, দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতির কারণে আমরা সময় নিয়েছি। কথায় আছে, অপেক্ষার ফল মিষ্টি হয়। মিনিস্ট্রি অফ লাভ–এর আগের ৫টি ফিল্ম দর্শকরা খুব ভালোভাবে গ্রহণ করেছে। আমার বিশ্বাস ‘‘ডিমলাইট”–ও দর্শকদের ভালো লাগবে। আগামীতেও ভিন্নরকমের কাজ যেন দর্শকদের দিতে পারি, সেগুলো নিয়েও কাজ চলছে।