Logo
Logo
×

বিনোদন

রুনার ২৪, মৌসুমীর ৭২, ফারিয়ার ১০০০—কারণ কী

Icon

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ০১:২৮ এএম

রুনার ২৪, মৌসুমীর ৭২, ফারিয়ার ১০০০—কারণ কী

সামাজিকমাধ্যমে নারী তারকাদের ফেসবুক পোস্টে চোখ রাখলেই কিছু সংখ্যা দেখা যাচ্ছে। সেসব পোস্টে নিজেদের ছবি জুড়ে দিয়ে কেউ লিখেছেন ‘৯’, কেউ বলছেন ‘৩১’, আবার কেউ-বা ভিন্ন কোনো সংখ্যা শেয়ার করেছেন। ফলে অনেক নেটিজেনের মনে স্বাভাবিক কৌতূহল যে, ঘটনা কী?

মূলত ডিজিটাল সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এই অভিনব ভাষা বেছে নিয়েছেন তারকারা। আর তাঁদের সেই আন্দোলনের নাম ‘মাই নাম্বার, মাই রুলস’। বিষয়টি হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে উল্লেখ করছেন তাঁরা।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। যেখানে তিনি নিজের একটি ছবি ব্যবহার করেছেন এবং মুখাবয়বে অঙ্কিত সংখ্যাটি ‘৯’। অর্থাৎ অভিনেত্রী এদিন ৯টি সাইবার বুলিং বা হয়রানির শিকার হয়েছেন।

ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘সংখ্যা থেকে কণ্ঠস্বর, আসুন আমাদের গল্প সবার সামনে তুলে ধরি। তোমার নম্বরের গল্প বলো, আরও জোরে আওয়াজ তোলো। মানুষ হয়তো কেবল একটি সংখ্যা দেখতে পারছেন, কিন্তু আমি যা সহ্য করেছি এবং যা কাটিয়ে উঠেছি, তার সবই দেখতে পাচ্ছি।’ সবশেষে হ্যাশট্যাগে তিনি ‘মাই নাম্বার, মাই রুলস’ জুড়ে দিয়ে সবাইকে ডিজিটাল সহিংসতার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।

শুধু তিশাই নন, ডিজিটাল সহিংসতার বিরুদ্ধে এই আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন চলচ্চিত্র-নাটক-সংগীত তারকাদের অনেকে। অভিনেত্রী রুনা খানের নম্বর ‘২৪’, শবনম ফারিয়ার ‘১০০০’, প্রার্থনা ফারদিন দীঘির ‘৩’, মৌসুমী হামিদের ‘৭২’, সাজিয়া সুলতানা পুতুলের ‘৯’, আশনা হাবিব ভাবনার ‘৯৯ প্লাস’—এভাবে দৈনিক হয়রানির সংখ্যা প্রকাশ করেছেন তাঁরা।

সাইবার বুলিং বা হয়রানির বিরুদ্ধে শুরু হওয়া এই আন্দোলন নিয়ে ইনডিপেনডেন্ট ডিজিটালকে অভিনেত্রী রুনা খান বলেন, ‘একটা ভয়াবহ অনিরাপত্তার মধ্যে আমরা প্রতিটি মানুষ বসবাস করছি। শুধু নারী অভিনেত্রী বা তারকা নন, যেকোনো নারীকেই সামাজিকমাধ্যম বা সামাজিক জীবনে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।’

যোগ করে তিনি বলেন, ‘গত দশ বছর ধরে আমাদের দেশের অনেক মানুষ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছেন। আমি মনে করি, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের জন্য যতটা শিষ্টাচারবোধ আমাদের থাকা দরকার, সেটা না-থাকা অবস্থায় সকলের হাতে সামাজিকমাধ্যম পৌঁছে গেছে, এটা খুব মুশকিলের।’

মূলত সংকীর্ণ মানসিকতা থেকে এ ধরনের সাইবার আক্রমণ বা হয়রানির মতো গুরুতর অপরাধে জড়িয়ে পড়েন অনেকে। বিষয়টি নিয়ে রুনা খান বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া কোনো দেশীয় প্ল্যাটফর্ম নয়, এটা একটা আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম। এখানে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের পরিচিত মুখ, অভিনয়শিল্পীদের যেমন দেখতে হবে, তেমনি এ দেশের অভিনেতা-অভিনেত্রীদেরও দেখতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়াতে এসে যদি কেউ পাশের বাড়ির আত্মীয়-বন্ধুর মতো অভিনেতা-অভিনেত্রীদেরকে দেখতে চান, তাহলে যারা এভাবে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছেন এটা তাদের সমস্যা। কারণ সোশ্যাল মিডিয়ায় আসলে তো পৃথিবীর সকল দেশের অভিনেতা-অভিনেত্রীদেরই দেখতে হবে, এখন তাঁদের দেখলে যদি কারও (নারী বা পুরুষ) সমস্যা হয়, তাহলে তাকে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার থেকে দূরে থাকতে হবে। কারণ সেই ব্যক্তির কথায় তো আর অন্য দেশের শিল্পীরা চলবে না, এ দেশের শিল্পীরাও চলবে না।’

এ ছাড়া সমাজে নারীর প্রতি সহিংসতার বিষয়ে অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি, এই দেশে নারীরা কখনোই শতভাগ নিরাপদ ছিল না। কর্মক্ষেত্র, পরিবার কিংবা সামাজিকভাবে নারীদের প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকম হয়রানি, প্রতিবন্ধকতা, অসম্মানমূলক আচরণ ও কটূক্তির মধ্যদিয়ে যেতে হয়। নারীর প্রতি বিদ্বেষ-সহিংসতা ৫ আগস্টের আগেও ছিল, এমন না যে তখন স্বর্গরাজ্যে ছিলাম! তবে ৫ আগস্টের পর চিত্রটা ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।’

প্রসঙ্গত, ডিজিটাল প্রযুক্তিনির্ভর বর্তমান সময়ে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম কিংবা যেকোনো সমাজমাধ্যমে সাইবার বুলিং বা হয়রানির ঘটনা ঘটছে দৈনন্দিন। আর সেসবের ভুক্তভোগী হচ্ছেন পরিচিত মুখ বা তারকারা, বিশেষ করে নারী শিল্পীরা। তারই প্রতিবাদে এবার সোচ্চার হয়েছেন অনেকে। জানা যায়, ‘মাই নাম্বার, মাই রুলস’ আন্দোলনটি সামাজিকমাধ্যমে টানা ১৬ দিন চলবে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার