দুই মিনিটের বিতর্কিত দৃশ্য: পরে বলিউডকে বিদায় জানান সেই অভিনেত্রী
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:১০ এএম
বলিউডের ইতিহাসে এমন অনেক অভিনেত্রী আছেন, যাঁরা শূন্য থেকে শুরু করে রাতারাতি পরিচিতি পেয়েছেন; পরে আবার হঠাৎই হারিয়ে গেছেন। কিমি কাতকার তেমনই একজন। ১৯৮০-এর দশকে বলিউডে তিনি ছিলেন আলোচিত ও সাহসী অভিনেত্রীদের একজন।
কিমির উত্থান
আশির দশকটি বলিউডে সৃজনশীল ও পরিবর্তনের সময় ছিল, যেখানে অনেক প্রতিভাবান অভিনেতা-অভিনেত্রী তাঁদের ছাপ ফেলেছেন। কিমি ছিলেন সেই সময়ের অন্যতম উদীয়মান নায়িকা। পর্দায় সাহসী দৃশ্যের জন্য তিনি ব্যাপক পরিচিতি পান। যদিও তাঁর চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার ছিল খুবই সংক্ষিপ্ত; কিন্তু এর মধ্যেই ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেন।
মুম্বাইতে জন্ম নেওয়া কিমি ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন মডেল হিসেবে, পরে তিনি চলচ্চিত্রে প্রবেশ করেন। ১৯৮৫ সালে ‘অ্যাডভেঞ্চার অব টারজান’ দিয়ে আলোচিত হন তিনি। সিনেমার সাফল্য তাঁকে রাতারাতি জনপ্রিয় করে তোলে। হেমন্ত বীরজের সঙ্গে জুটি বেঁধে তিনি দর্শকদের মন মাতিয়ে দেন। তবে এ ছবিতেই একটি নগ্ন দৃশ্যে অভিনয় করে রাতারাতি আলোচনায় আসেন। দৃশ্যটি নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেছিলেন, ‘সেই সময় আমি জানতাম না এই দৃশ্য কতটা বিতর্কিত হবে। কিন্তু অভিনয় আমার জন্য সব সময় ছিল সত্যিই একটি চ্যালেঞ্জ।’ এরপর ১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে অমিতাভ বচ্চন, অনিল কাপুর, গোবিন্দ ও আদিত্য পঞ্চোলির সঙ্গেও সিনেমা করেন তিনি। তাঁর নাচ ও অভিনয়ের দক্ষতা দর্শকদের কাছে তাঁকে প্রিয় করে তোলে।
আলোচিত সেই গান
১৯৯১ সালে কিমি ‘হাম’ সিনেমায় অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে অভিনয় করেন। সিনেমার গান ‘জুম্মা চুম্মা দে দে’ আজও আলোচিত। লাল রঙের উজ্জ্বল পোশাকে কিমির নাচের দৃশ্য দর্শকের মনে আজও অম্লান। এই গান কিমিকে শুধুই জনপ্রিয় করেনি, বরং বলিউডে তাঁর অবস্থানকে স্থায়ী করেছে। ‘গানটি ছিল একেবারে আলাদা। সেটের আলো, বিট ও অমিতাভজি—সব মিলিয়ে অভিজ্ঞতা ছিল অসাধারণ,’ পরবর্তী এক সাক্ষাৎকারে বলেন কিমি।
কিমির বিতর্কিত সিনেমা
কিমি কাতকারের অন্যতম বিতর্কিত সিনেমা ‘কালা বাজার’, যা ১৯৮৯ সালে মুক্তি পায়। সিনেমাটিতে তাঁর দুই মিনিটের টপলেস দৃশ্যকে ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়। কিছু সমালোচক কনটেন্টের জন্য সিনেমাটির সমালোচনা করেন, অন্যদিকে কেউ আবার কিমির সাহসিকতার প্রশংসা করেন। এই বিতর্ক কিমির জনপ্রিয়তাকেই আরও বাড়িয়ে দেয়।
কেন কিমি ইন্ডাস্ট্রি ছেড়েছিলেন
উদীয়মান জনপ্রিয়তার মধ্যেও ১৯৯২ সালে কিমি কাতকার হঠাৎ চলচ্চিত্রজগৎ ছেড়ে দেন। খবর অনুযায়ী, তিনি অভিনয় ছেড়ে দেওয়ার কারণ ছিল ব্যক্তিগত জীবনকে গুরুত্ব দিয়ে পরিবার গড়ার ইচ্ছা। কিমি শান্তু শিওরে নামে এক ফটোগ্রাফার ও বিজ্ঞাপন নির্মাতাকে বিয়ে করেন।
২০০৯ সালের এক সাক্ষাৎকারে কিমি বলেন, ‘আমি মনে করি সঠিক সময়ে ইন্ডাস্ট্রি ছেড়েছি। অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে কাজ করার পর আর আমার করার কিছু বাকি ছিল না। আমার জীবনের এই অধ্যায় সম্পূর্ণ হয়েছে।’
কিমি ও তাঁর পরিবার প্রথমে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে বাস করলেও পরে ভারতে ফিরে গোয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেছেন। বলিউডের এই সাহসী অভিনেত্রী আজও ‘টারজান গার্ল’ হিসেবে পরিচিত। ক্যারিয়ার নিয়ে তাঁর মূল্যায়ন, ‘বলিউড আমার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবন ও স্বাচ্ছন্দ্যই সবচেয়ে বড়।’
ইন্ডিয়াডটকম অবলম্বনে