প্রেষণে শিক্ষা ক্যাডারকে প্রতিষ্ঠানপ্রধান নিয়োগে নতুন নীতিমালা
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৮ এএম
বেসরকারি স্কুল ও কলেজের প্রশাসনে বড় পরিবর্তন আনছে সরকার। প্রতিষ্ঠানপ্রধান নিয়োগে এবার যুক্ত করা হচ্ছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা–২০২৫’-এ এ নির্দেশনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
৬২ পাতার এই নীতিমালায় বলা হয়েছে, প্রয়োজনে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার স্বার্থে উপযুক্ত শিক্ষক, কর্মকর্তা বা বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডার কর্মকর্তাকে প্রেষণে প্রতিষ্ঠানপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবে সরকার।
নতুন নীতিমালার ১৮ ধারায় বেতন–ভাতার সরকারি অংশ স্থগিত, কর্তন ও বাতিলকরণ বিষয়ে বিস্তৃত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম, সরকারি অংশের বেতন-ভাতা উত্তোলনে অনিয়মসহ বিভিন্ন কারণে কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী কিংবা প্রতিষ্ঠানপ্রধানের সরকারি অংশের বেতন–ভাতা সাময়িক বন্ধ, আংশিক বা সম্পূর্ণ কর্তন কিংবা বাতিল করতে পারবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।
এ জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের পর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির সভাপতির নামসহ বিস্তারিত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। পাশাপাশি, সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ থাকবে প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক–কর্মচারী কিংবা পরিচালনা কমিটির সভাপতির।
নীতিমালার ৭.১ ধারায় শিক্ষক ও প্রদর্শকের চাহিদা প্রেরণ প্রক্রিয়া নতুনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, অনুমোদিত বা প্যাটার্নভুক্ত শূন্য পদে নিয়োগের জন্য প্রতিষ্ঠানপ্রধানকে উপজেলা/থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে চাহিদা পাঠাতে হবে। উপজেলা/থানা অফিসার যাচাই করে তা জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে পাঠাবেন। জেলা অফিসার জেলার সব চাহিদা একীভূত করে এনটিআরসিএ বা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠাবেন। ভুল চাহিদা পাঠানো হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানপ্রধান, উপজেলা/থানা শিক্ষা অফিসার ও জেলা শিক্ষা অফিসার দায়ী থাকবেন।
নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, এমপিওভুক্তির শর্ত ভঙ্গ, সরকারি নির্দেশনা অনুসারে হিসাব সংরক্ষণ না করা, ব্যয়ে পিপিআর না মানা, মিথ্যা তথ্য প্রদান, অবৈধ শিক্ষক নিয়োগ, ভুয়া শাখা বা শিক্ষার্থী দেখানো, পাবলিক পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনসহ বিভিন্ন অনিয়ম প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক–কর্মচারী ও প্রতিষ্ঠানপ্রধানের বেতন-ভাতা স্থগিত বা বাতিল করা হবে। একইসঙ্গে পরিচালনা কমিটির সভাপতির পদ শূন্য ঘোষণা করে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া প্রতিষ্ঠান এনটিআরসিএতে শিক্ষক–প্রদর্শকের চাহিদা দিলে সুপারিশ পাওয়া শিক্ষককে অবশ্যই নিয়োগ দিতে হবে। চাহিদা পাঠানোর সময় পদটি এমপিও নিশ্চিত থাকতে হবে। প্যাটার্ন বহির্ভূত অতিরিক্ত চাহিদা দিলে ওই শিক্ষকের পুরো বেতন–ভাতা প্রতিষ্ঠানকে বহন করতে হবে। এ নিয়ম না মানলে প্রতিষ্ঠানপ্রধান ও পরিচালনা কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে নীতিমালায়।