
বেসরকারি মোবাইল অপারেটর কোম্পানি বাংলালিংক ও বাংলালিংকের একক শেয়ারহোল্ডার ভিওন বাংলাদেশে ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স পাওয়ার আগ্রহের কথা জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরকে চিঠি লিখেছে কোম্পানি দুটি।
গত বছর সেপ্টেম্বরে ঢাকায় এবং চলতি বছরের এপ্রিলে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাতেও কোম্পানি দুটি ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স পাওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে বাংলালিংকের মন্তব্য জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে একজন কর্মকর্তা বলেন, ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স পাওয়ার জন্য গভর্নরের কাছে 'এক্সপ্রেশন অভ ইন্টারেস্ট' লেটার পাঠিয়েছে কোম্পানিটি। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেনি।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর গভর্নরকে চিঠি লিখে ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের আগ্রহের কথা জানিয়েছে বাংলালিংক ও ভিওন।
ভিওন গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কান তেরজিওগ্লু এবং বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশনস লিমিটেডের সিইও ইয়োহান হেন্ডরিক মার্টিনাস বুস স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে তাদের প্রাথমিক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনার ভিত্তিতে তারা ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স পাওয়ার বিষয়ে তাদের 'গভীর আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত' করতে চান।
ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্সের জন্য আবেদনের সুযোগ এখন ফের উন্মুক্ত হওয়ায় তারা যথাসময়ে বিস্তারিত ও উচ্চমানের আবেদন জমা দেওয়ার বিষয়ে তাদের চলমান প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করার জন্য এই চিঠি দিচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন।
ভিয়ন একটি শীর্ষস্থানীয় বৈশ্বিক ডিজিটাল অপারেটর এবং বাংলালিংকের একমাত্র শেয়ারহোল্ডার, যা নাসডাকে তালিকাভুক্ত। ২০২৪ সালে কোম্পানিটির রাজস্ব ছিল ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং সুদ, কর, অবচয় ও অ্যামোর্টাইজেশনের আগের আয় ছিল ১.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
গভর্নরের কাছে পাঠানো বাংলালিংকের চিঠি অনুযায়ী, ডিজিটাল আর্থিক পরিষেবা খাতে ভিওনের সাফল্য রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি কাজাখস্তানে 'সিম্পলি!', উজবেকিস্তানে 'বিপুল' ও পাকিস্তানে 'জ্যাজক্যাশ' নামে ব্যবসা পরিচালনা করছে।
এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো 'জ্যাজক্যাশ'। এই প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে ৪ কোটিরও বেশি গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে, দৈনিক প্রায় ২ লাখ অনলাইন ঋণ দিচ্ছে। এর বার্ষিক লেনদেনের পরিমাণ পাকিস্তানের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ১০ শতাংশের সমান।
ভিওন ও বাংলালিংক বলছে, এই বৃহৎ পরিসরের নিয়ন্ত্রিত প্ল্যাটফর্ম থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতা—বিশেষ করে দেশব্যাপী গ্রাহক ও মার্চেন্টদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, ইন্টারঅপারেবিলিটি, আর্থিক সাক্ষরতা ও অন্তর্ভুক্তি, সাইবার নিরাপত্তা ও জালিয়াতি প্রতিরোধের মতো বিষয়গুলোতে—দায়িত্বের সঙ্গে বাংলাদেশে স্থানান্তর ও স্থানীয়করণ করা সম্ভব।