Logo
Logo
×

অর্থনীতি

পাঁচ ব্যাংকের আমানতকারীদের জন্য বড় দুঃসংবাদ

Icon

জাগো বাংলা প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:০২ পিএম

পাঁচ ব্যাংকের আমানতকারীদের জন্য বড় দুঃসংবাদ

মার্জারের আওতাভুক্ত পাঁচটি ব্যাংকের আমানতকারীরা চলতি বছরের মধ্যে তাদের টাকা উত্তোলন করতে পারবেন না। বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এখনও কোনো সুনির্দিষ্ট তারিখ চূড়ান্ত হয়নি। তবে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত উত্তোলনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ২৯ ডিসেম্বর থেকে টাকা উত্তোলনের যে তথ্য ছড়িয়েছে, তা ভিত্তিহীন ও অসত্য বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিশ্চিত করেছে। ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান জানিয়েছেন, সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত উত্তোলনের সুযোগ নীতিগতভাবে বিবেচনায় রয়েছে এবং শিগগিরই তা শুরু হবে। তবে নির্দিষ্ট তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। 

বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানিয়েছে, নতুন বছরের শুরু থেকেই ধাপে ধাপে টাকা উত্তোলনের সুযোগ পাওয়া যাবে। যেসব গ্রাহকের হিসাব দুই লাখ টাকার বেশি, তারা প্রথমে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। এরপর প্রতি তিন মাস পরপর এক লাখ টাকা করে সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত অর্থ উত্তোলনের সুযোগ থাকবে। ৬০ বছরের বেশি বয়সী আমানতকারী এবং ক্যানসারে আক্রান্ত গ্রাহকরা প্রয়োজন অনুযায়ী যে কোনো সময় যে কোনো পরিমাণ টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।

প্রাথমিকভাবে একীভূত হওয়া ব্যাংকগুলোর শাখা থেকে আমানতকারীরা সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত উত্তোলন করতে পারবেন। এই অর্থ দেওয়া হবে আমানত বিমা তহবিল থেকে। একাধিক হিসাব থাকলেও একজন গ্রাহক নির্ধারিত অঙ্কের টাকা প্রতিটি ব্যাংক থেকে একবার করে তুলতে পারবেন।

একীভূত প্রক্রিয়ায় থাকা ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংককে অধিগ্রহণের জন্য সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক পিএলসি গঠন করা হয়েছে। ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয় রাজধানীর সেনাকল্যাণ ভবনে স্থাপন করা হয়েছে। পরিশোধিত মূলধন ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা, যার মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২০ হাজার কোটি টাকা এবং আমানত বিমা তহবিল থেকে আসছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। অনুমোদিত মূলধন ধরা হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা।

একই সঙ্গে এই পাঁচটি ব্যাংকের শেয়ার শূন্য করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকগুলোর প্রকৃত সম্পদের মূল্য ঋণাত্মক হওয়ায় ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশের আওতায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এসব ব্যাংকে প্রায় ৭৫ লাখ আমানতকারীর ১ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা জমা রয়েছে, তবে ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৯৩ হাজার কোটি টাকা, যার সিংহভাগ খেলাপি হয়ে গেছে।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতকারীর সংখ্যা ২২ লাখ ২ হাজার ১৯ জন, মোট জমা ২ হাজার ৫০২ কোটি টাকা। এক লাখ এক টাকা থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতকারীর সংখ্যা এক লাখ ৪৯ হাজার ৪৫৬ জন, জমা ২ হাজার ২০১ কোটি টাকা। এক্সিম ব্যাংকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতকারীর সংখ্যা ১২ লাখ ৮১ হাজার ৮৫৮ জন, জমা ১ হাজার ২০২ কোটি টাকা। এক লাখ এক টাকা থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ৮৬ হাজার ১৫৮ জন, জমা ১ হাজার ২৫৩ কোটি টাকা। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত ২৪ লাখ ৩২ হাজার ৪০৮ জন, জমা ১ হাজার ৫১১ কোটি টাকা, এক লাখ এক টাকা থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ৮৬ হাজার ৪০৬ জন, জমা ২ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা। ইউনিয়ন ব্যাংকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত ৪ লাখ ৫১ হাজার ৪৬০ জন, জমা ৭০৭ কোটি টাকা, এক লাখ এক টাকা থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ৩৬ হাজার ৯১২ জন, জমা ৫৫৭ কোটি টাকা। গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত ৪ লাখ ৫৫ হাজার ৪২১ জন, জমা ৬৩১ কোটি টাকা, এক লাখ এক টাকা থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ২৮ হাজার ৬৪৪ জন, জমা ৪২৮ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন বছরের শুরুতেই টাকা উত্তোলনের এই উদ্যোগ আমানতকারীদের আস্থা ফিরিয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং ইসলামী ব্যাংক খাতে দীর্ঘদিনের অনিশ্চয়তা কাটাতে সহায়ক হবে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার